লার্নার ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম, আবেদন ও চেক করার পদ্ধতি

লার্নার ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম, আবেদন ও চেক করার পদ্ধতি। বর্তমান সময় এ অধিকাংশ মানুষই পেশাগত ও ব্যাক্তিগত ভাবে ড্রাইভিং শেখার প্রোয়জন হই। অনেকের হইত গাড়ি আছে কিন্তু লাইসেন্স নাই।লাইসেন্স করতে আবার অনেক এ দালাল এর দ্বারা হইরানির  শিকার হইছে অনেক এ। কিন্তু বর্তমানে দালালের পাল্লার পড়ার কোন সুযোগ নাই। অনেক এ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার উপায় জানেন না। লাইসেন্স নাহ থাকার জন্যে অনেক এ তার শখের গাড়ি টি চালাইতে পারেন না। আজকের এই পোস্ট টি তাদের জন্যে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স নাহ থাকলে জরিমানা কত???

ড্রাইভিং লাইসেন্স নাহ থাকলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে ড্রাইভং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ৬ মাস এর জেল বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শর্ত

১. লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।

২. শিক্ষাগত যোগ্যতা  হিসেবে আবেদনকরীকে ৮ম শ্রেণী পাশ থাকতে হবে।

৩. আবেদনকারীর বয়স অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে নূন্যতম ১৮ বছর এবং পেশদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে আবেদনকারীকে ২১ বছর বয়সী হতে হবে।

৪. ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদনকারীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রকারভেদ

ব্যাবহার এর ভিত্তিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কিছু প্রকার রয়েছে। যেগুলো প্রাপ্তির জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা শর্তাবলি।

১. লার্নার বা শিক্ষাবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স

২. স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স

৩. আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাই্সেন্স।

লার্নার বা শিক্ষাবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স

প্রথমে লাইসেন্স প্রত্যাশীকে তার স্থায়ী ঠিকানা বা বর্তমান ঠিকানা(প্রমাণাদিসহ) বিআরটিএ এর যে সার্কেলের আওতাভুক্ত তাকে সেই সার্কেল অফিসে/অনলাইনে (https://bsp.brta.gov.bd/) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সার্কেল অফিস কর্তৃপক্ষ তাকে একটি শিক্ষানবিস বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হবে যা দিয়ে আবেদনকারী ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে পারবে। ২/৩ মাস প্রশিক্ষণ এর পর তাকে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট এ অংশ গ্রহণ করতে হবে। এসময় প্রার্থী কে তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স সাথে আনতে হবে।

লার্নার বা শিক্ষাবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন

২. আবেদনকারীর ছবি [সর্বোচ্চ ১৫০ কেবি (৩০০*৩০০ পিক্সেল০] সাইজ

৩. রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)

৪. ইউটিলিটি বিল এর স্ক্যান কপি (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি) [আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা যদি ভিন্ন হয় তবে বর্তমান ঠিকানার ইউটিলিটি বিল সংযুক্ত করতে হবে]

৫. জাতীয় পরিচয় পত্রের স্ক্যান কপি[সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি]

৬. বিদ্যমান ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্ক্যান কপি [ ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন/শ্রেণি পরিবর্তন/শ্রেণি সংযোজন/লাইসেন্স এর ধরণ পরিবর্তন এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য] (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)

৭. নির্ধারিত ফী, ১ ক্যাটাগরি-৩৪৫টাকা ও ২ ক্যাটাগরি-৫১৮টাকা অনলাইনে পরিশোধ।

আবেদন এর সময় কোন ভূয়া তথ্য প্রদান করলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল সহ আইন অনুরাগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

স্মার্টকার্ড ড্রাইভং লাইসেন্স এর জন্যে প্রয়োজনীয় কাগজপ্ত্র

১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন

২. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।

৩. ন্যাশনাল আইডি কর্ডে এর সত্যায়িত ফটোকপি।

৪. নির্ধারিত ফী( পেশাদার ১৬৭৯ টাকা ও অপেশাদার ২৫৪২ টাকা)

৫. পেশাদার লাইসেন্স এর জন্যে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন

৬. সদ্য তোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রকৃতি

১.  পেশাদার হালকা (মোটরযান এর ওজন ২৫০০ কেজি এর নিচে) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২০ বছর হইতে হবে।

২. পেশাদার মধ্যম (মোট্ররযানের ওজন ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি) ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৩ বছর হইতে হবে এবং পেশাদার হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যাবহার কমপক্ষে ৩ বছর হইতে হবে।

৩. পেশাদার ভারী (মোটরযানের ওজন ৬৫০০ কেজি এর বেশি) ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২৬ বছর হতে হবে এবং পেশাদার মধ্যম ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যাবহার কমপক্ষে ৩ বছর হতে হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া

অপেশাদার

গ্রাহককে প্রথমে নির্ধারিত ফি (মেয়াদউত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধে্য হলে ২৪২৭ টাকা ও মেয়াদউত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে হলে প্রতি বছর ২৩০ টাকা জরিমানাসহ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ বিআরটি এর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিস এ আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপ্ত্র সঠিক পাওয়া গেলে একই দিন এ গ্রাহক এর বায়োম্যাট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ করা হই। স্মার্ট কার্ড ও প্রিন্টিং এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়

পেশাদার

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদের আবার একাটি ব্যাবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় উৎত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ১৫৬৫ টাকা ও মেয়াদউত্তর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২৩০ টাকা জরিমানাসহ জমা দিয়ে প্রয়জনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটি এর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিস এ আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ এর জন্যে গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিস এ উপস্থিত হতে হবে। স্মার্ট কার্ড ও প্রিন্টিং এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন

২. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।

৩. ন্যাশনাল আইডি কর্ডে এর সত্যায়িত ফটোকপি।

৪. শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ।

৫. নির্ধারিত ফী জমাদানের রশিদ।

৬. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।

৭. সদ্যতোলা ১ কপি পাসপোর্ট ও ১ কপি স্ট্যাপ সাইজ ছবি।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার খরচ আবেদন ফি

লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর খরচ-

১. শুধুমাত্র এক ধরানের যানবহন চালানোর জন্য প্রযোজ্য লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা

২. গাড়ি ও মোটরসাইকেল উভয়ের লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ৫১৮ টাকা

স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এর খরচ

১. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে খরচ ১৬৭৯ টাকা( ৫ বছর নবায়ন ফী সহ)

২. অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে খরচ ২৫৮২  টাকা ( ১০ বছর নবায়ন ফী সহ)

ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার উপায়

মোবাইল থেকে মেসেজ পাঠিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করা যায়। তার জন্যে প্রথমে মোবাইল এর মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে DL DM******(* এর স্থানে প্রাপ্তি শিকার রশিদে উল্লেখিত রেফারেন্স নাম্বার বসবে) এবং৬৯৬৯ এই নাম্বাররে পাঠিয়ে দিতে হবে।

Leave a Comment