বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২১

বিকাশ একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। ব্যাংক হিসাব ছাড়া মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের মাধ্যম হলো বিকাশ। সল্প আয়ের মানুষের লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ। বিকাশের যাত্রা হয় ২০১১ সালে।

বিকাশ কি?

বিকাশ হলো অর্থিক লেনদেনের একটি সহজ মাধ্যম,  যার মাধ্যমে নিমিষেই এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায় টাকা পাঠানো যায়।

বিকাশের সূচনা লগ্ন

বিকাশ ২০১১ সালে আমেরিকা মানি ইন মোশন এলএলসি এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে।  বিকাশের বর্তমান সিইও কামাল কাদির। বিকাশের সদরদপ্তর স্বাধীনতা টাওয়ার, ১, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ জাহাঙ্গীর গেট, ঢাকা ক্যন্টনমেন্ট, ঢাকা ১২০৬, বাংলাদেশ।

বিকাশের সেবা সমূহ

দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম অংশ বর্তমানে বিকাশ। বিকাশের সেবার মাধ্যমে আমাদের জীবন আরো সহজ হয়ে গিয়েছে। 

  • টাকা লেনদেন ২৪/৭
  • মেবাইল রিচার্জ
  • বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল
  • কেনা-কাটার পেমেন্ট
  • গাড়ির টিকেট
  • হোটেল বুকিং
  • পেমেন্ট অনলাইন/অফলাইন

বিকাশ কেন ব্যাবহার করবো?

দ্রুত এবং কম সময়ের লেনদেন মাধ্যম হলো বিকাশ। আমরা বিকাশ ব্যাবহার করে প্রতিদিনের কাজ সহজেই করতে পারি।

  • দ্রুত এবং কম সময়ে টাকা লেনদেন করা যায়।
  • বিকাশের সেবা সহজলভ্য কারন প্রতিটা মানুষ এখন মুঠো ফোন ব্যাবহার করে আর এই সেবা মূলত ফোনের মাধ্যমেই নেওয়া হয়।
  • ঘরে বসে বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেট বিল পরিশোধ করা যায় কোন চার্জ ছাড়ায়।
  • খুব সহজে নিজের বা অন্যকারো মুবাইল রিচার্জ করা যায়।
  • গ্রাম শহর সব যায়গার মানুষ এখন বিকাশ সেবার আওতাধীন।
  • হোটেল, গাড়ির টিকেট এখন বিকাশের মাধ্যমেই করা যায়।

কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খুলবো?

বর্তমান সময়ে প্রতিটা মানুষের বিকাশ একাউন্ট থাকা জরুরি। এখন আমরা জানবো কি ভাবে পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট মূলত ২ ভাবে খোলা যায়। 

১. ডিজিটাল রেজিষ্ট্রেশন ই-কেওয়াইসির(KYC) মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চাইলে মোলাইল ফোন এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি নিয়ে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্টের কাছে যেতে হবে। 

বিকাশ এজেন্ট আপনার মোবাইল নাম্বার এবং অপারেটর নিশ্চিত করে পার্সোনাল একাউন্ট খোলার অনুমতি নিয়ে আপনার মোবাইলে পাঠানো রেফারেন্স নাম্বারটি নিবে। তারপর এজেন্ট ই-কেওয়াইসি এন্ট্রির জন্য আপনার পরিচয় পত্রের সামনের ও পেছনের এবং আপনার ছবি তুলবেন। এ সকল কাজের পর সফল ভাবে রেজিষ্ট্রেশন হলে আপনি একটি কনর্ফামেশন এসএমএস পাবেন।

এখন আপনার বিকাশ একাউন্ট খুলে গেলে আপনাকে আপনার বিকাশ মুবাইল মেন্যু একটিভ করতে হবে। মেন্যু একটিভ করার জন্য *২৪৭# ডায়াল করতে হবে এবং সেখান থেকে একটিভ মোবাইল মেন্যু বেছে নিতে হবে।  এরপর ৫ ডিজিটের পিন নাম্বার প্রবেশ করাতে হবে।  পিন নাম্বার সব সময় গোপন রাখতে হবে। এখন আপনার পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট একটিভ হয়েছে আপনি আপনার ইচ্ছামতো একাউন্টটি ব্যাবহার করতে পারবেন।

২. দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো বিকাশ এপের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা এই পদ্ধতি টা খুবি সিম্পল এবং ইজি। এবার আমরা জেনে নেয় কি ভাবে অ্যাপের মাধ্যমে আমরা আমাদের বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবো।

বিকাশ অ্যাপে একাউন্ট খুলতে যা যা লাগবে

  • একটি অ্যাক্টিভ মোবাইল নাম্বার
  • ইন্টারনেট কানেকশন
  • বিকাশ অ্যাপ ইন্সটল করা স্মার্টফোন
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)

বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম

১ম ধাপঃ

আপনি আপনার মোবাইল ফোনের প্লে স্টোরে গিয়ে বিকাশ অ্যাপ লিখে সার্স করলে অ্যাপটি পেয়ে যাবেন। এবার অ্যাপ টি ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিবেন।

২য় ধাপঃ

এবার বিকাশ অ্যাপ ওপেন করে “লগ ইন অথবা, রেজিষ্ট্রেশন” বাটনে ক্লিক করুন।

৩য় ধাপঃ

লগ ইন অথবা রেজিষ্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করার পরের পেজে যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান, সে নাম্বারটি প্রদান করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

৪র্থ ধাপঃ

এরপর আপনার মোবাইল নাম্বারটির অপারেটর সিলেক্ট করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

৫ম ধাপঃ

এরপর আপনার মোবাইল নাম্বারটি যাচাই করতে আপনার প্রদত্ত নাম্বারে একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে। উল্লেখ্য যে, যে ফোনে বিকাশ খুলছেন সে ফোনেই সিমটি অ্যাক্টিভ থাকতে হবে।

৬ষ্ঠ ধাপঃ

ওটিপি কোড এর মেসেজ আসার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোডটি বিকাশ অ্যাপ গ্রহণ করে নিবে।

৭ম ধাপঃ

কোড চলে আসলে “কনফার্ম করুন” এ ক্লিক করুন।

৮ম ধাপঃ

এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র অর্থাৎ এনআইডি কার্ড এর উপরের পৃষ্ঠার ছবি তুলে সাবমিট করে “সাবমিট করুন” এ ক্লিক করুন।এরপর অপর পৃষ্ঠার ছবি তুলে আবার “সাবমিট করুন” এ ক্লিক করুন।

৯ম ধাপঃ

এরপর সাবমিটকৃত এনআইডি কার্ডে যার ছবি আছে তাকে ফোনে একটি সেল্ফি তুলতে হবে যা দ্বারা আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন হবে।

১০ম ধাপঃ

চেহারার ছবি তুলে সাবমিট দিলেই বিকাশ একাউন্ট খুলে যাবে।

এই ধাপ গুলা অনুসরণ করলে খুব সহজ এবং সিম্পল ভাবে ঘরে বসেই আপনার একাউন্টটি খোলা হয়ে যাবে।  

বিকাশ নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা

০১. সবাই কি বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে? 

না, বিকাশ একাউন্ট খুলতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স ১৮ বছর হতে হবে এবং এনআইডি কার্ড থাকতে হবে।বর্তমানে রবি, গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, টেলিটক অথবা এয়ারটেলের গ্রাহক হতে হবে।

০২. বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি কোন খরচ লাগে?

না, বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্পূর্ণ ফ্রি।

০৩. বিকাশ একাউন্ট খুলতে কোথায় যেতে হবে?

বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য নিকটস্থ বিকাশ এজেন্টের কাছে যেতে হবে অথবা ঘরে বসে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা যায়।

০৪. বিকাশ একাউন্টের সেবা কি সব সময় নেওয়া যায়?

হ্যাঁ, বিকাশ সপ্তাহে ৭ দিন এবং দিনে ২৪ ঘন্টা সেবা দিয়ে থাকে।

০৫. একটি এনআইডি কার্ড দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়?

একটি এনআইডি কার্ড দিয়ে একটি মাত্র বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।

Leave a Comment