সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তরে পূর্ণ নম্বর পাওয়ার কৌশল

সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তরে পূর্ণ নম্বর পাওয়ার কৌশল

Way To Answar Creative Questions With Full Mark

প্রিয় জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী, তোমাদের নতুন প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও মানবন্টন এর আলোকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। যেহেতু এগুলো পাবলিক পরীক্ষা, তাই সৃজনশীল বিষয়সমূহে A+ নিশ্চিত করতে পারলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট ও কাঙ্খিত জিপিএ অর্জন করা সম্ভব। জেনে নাও, কিভাবে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তরে পূর্ণ নম্বর পাওয়া সম্ভব। পড়াশোনা, পরীক্ষা ও রেজাল্ট সম্পর্কে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে newresultbd.com তে।

সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে একটি পূর্ণাঙ্গ সৃজনশীল প্রশ্ন জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা এ চারটি অংশ থাকে। যেহেতু চারটি অংশ মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশ্ন, তাই প্রতিটি অংশের উত্তর লেখার সময় প্রতিবার নিম্নরূপে লিখবে। যেমন- তুমি ২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখবে। সেক্ষেত্রে ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর (ক), ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর (খ), ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর (গ) এবং ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর (ঘ) এভাবে লিখলে ভাল।

যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শুরু করলে তার চারটি অংশের উত্তরই ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে। একটি প্রশ্নের জ্ঞানের উত্তর, এরপর আরেক প্রশ্নের জ্ঞানের উত্তর, এরপর আরেক প্রশ্নের প্রয়োগের উত্তর এভাবে লেখা যাবে না। কোন উত্তর যদি তোমার জানা না থাকে, সেক্ষেত্রে সেটা বাদ দিয়ে তার পরের অংশের উত্তর লিখতে হবে। জায়গা ফাঁকা রাখার প্রয়োজন নেই।

জ্ঞানমূলক প্রশ্নের নম্বর ১: এর এর উত্তর একটি শব্দে, একাধিক শব্দে বা একটি বাক্যে দেওয়া যাবে। তবে এই স্তরের উত্তর একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্যে দিলে ভালো। আর এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, লোক প্রশ্নের যে তথ্যটা জানতে চাওয়া হয়েছে সেটার বানান ভুল করলে উত্তর কাটা যাবে এবং শূন্য পাবে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্নের নম্বর ২: কারণ এরমধ্যে একটি নম্বর জ্ঞানের জন্য, আরেকটি নম্বর অনুধাবনের জন্য। তুমি ইচ্ছা করলে জ্ঞান অংশের উত্তর আগে, অনুধাবনমূলক অংশের উত্তর পরে অথবা অনুধাবনমূলক এর উত্তর আগে, জ্ঞানমূলক এর উত্তর পরে লিখতে পারো। তবে জ্ঞানমূলক এর উত্তর আগে লিখে অনুধাবনের উত্তর পরেলেখায় ভালো। প্রশ্নের উত্তর এক প্যারাতেও লেখা যায়, দু প্যারাতেও লেখা যায়। আর অনুধাবনমূলক প্রশ্নের শুরুতে অযথা নানা বিশ্লেষনে বিশ্লেষায়িত করার দরকার নেই। মনে রাখতে হবে, সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর হবে ‘জিরো ফ্যাট’ অর্থাৎ চোর্বিশন্য। শুধু অনুধাবনে নয়; প্রয়োগ, উচ্চতর দক্ষতা অর্থাৎ সকল প্রশ্নের উত্তরে অপ্রাসঙ্গিক কথা, বা বাহুল্যদোষ পরিহার করবে।

প্রয়োগমূলক প্রশ্নের মোট নম্বর ৩: ১ নম্বর জ্ঞানে, ১ নম্বর অনুধাবনে এবং ১ নম্বর প্রয়োগে। এ অংশের উত্তর এক প্যারাতে বাদ দু-তিন প্যারা করেও লেখা যাবে। প্রয়োগ মানে আমরা জানি, শিক্ষার্থী তার পাঠ্যবই থেকে যা জেনেছে এবং যা বুঝেছে, তা নতুন ক্ষেত্রে অর্থাৎ উদ্দীপকে প্রয়োগ করবে। কাজেই উদ্দীপকটি যে ভাব-এর আলোকে তৈরি করা হয়েছে অর্থাৎ উদ্দীপকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের যে দিকটি সাদৃশ্য বা বৈশাদৃশ্য থাকে সেটাই জ্ঞান। ওই দিকটি একটি বাক্যে লিখতে পারলেই এক নম্বর অর্থাৎ জ্ঞানের উত্তর হয়ে গেল। তারপর ওই দিকটি বা প্রসঙ্গটি পাঠ্যবইয়ের আলোকে বর্ণনা করাই হল অনুধাবন। দ্বিতীয় প্যারায় অনুধাবন অংশের উত্তর লিখতে পারি এবং সবশেষে ওই দিকটি উদ্দীপকে কিভাবে ফুটে উঠেছে, তা বর্ণনা করাই প্রয়োগ।

উচ্চতর দক্ষতা প্রশ্নের মোট নম্বর ৪: উচ্চতর দক্ষতা মানেই একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপার। প্রশ্নেই সাধারণত একটি অনুসিদ্ধান্ত দেওয়া থাকবে। যদি সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়, তাহলে সেটাকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে, উদ্দীপকে প্রয়োগ করে প্রমাণ করবে যে সিদ্ধান্তটি সঠিক। আর যদি সিদ্ধান্তটি ভুল হয় তাহলে কেন ভুল সেটাও প্রমাণ করতে হবে। অনেক সময় সিদ্ধান্তটি আংশিক সত্য হতে পারে। সেক্ষেত্রে উদ্দীপকের সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের যে অংশটুকুর মিল আছে, তা বর্ণনা করে যে যে ক্ষেত্রে মিল নেই সেগুলো বর্ণনা করতে হবে।

সবশেষে সিদ্ধান্ত দিতে হবে যে বক্তব্য টি বা সিদ্ধান্তটি আংশিক সত্য, পুরোপুরি নয়। বিচার-বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ, মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত দেওয়ার নামে উচ্চতর দক্ষতা। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি বা প্রশ্নটিই ভালোভাবে পড়ে পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে বুঝতে হবে।

এভাবে খাতায় উত্তর লিখলে তোমরা প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পূর্ণ নম্বর অর্থাৎ দশে দশ পেতে পারো।

___মাস্টার ট্রেইনার ও বোর্ড পরীক্ষক প্যানেল পরামর্শ।

Leave a Comment