জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং কেন? জেনে নিন

আপনি অনেক ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতির সম্মূখীন হতে হয় যে সেই সময় স্বার্থপর হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকেনা। আপনিও কি এরকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন? আপনার মনেও কি এই প্রশ্ন হচ্ছে যে জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং কেন? তাহলে এখানে আপনি কিছু কোরা (Quora) ব্যবহারকারীদের উত্তর জেনে নিতে পারেন।

সুকৃতি দাস -এর মতে জীবনের যেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং তার কারণ:

বাবা – মায়ের একটি মাত্র সন্তান আমি ।

আর প্রত্যেক মায়ের তো একটাই স্বপ্ন –

আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।

আমার বাবাও আবার এক্ষেত্রে কোন অংশে কম যায় না । তারা দুজনে সদা প্রস্তুত আমার সুখ – স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয় খেয়াল রাখার জন্য । কিন্তু সমস্যা হল তাদের দুজনের জগত এতো বেশি আমাকে নিয়ে কেন্দ্রীভূত যে তারা নিজেদের কথাই ভাবে না ঠিক করে ।

এই যেমন –

  • বড়ো মাছের পিসটা তারা সবসময় আমার জন্য সংরক্ষিত করে রাখবে ।
  • জানলার ধারের সিটটা সবসময় আমার জন্য ছেড়ে দেবে ।
  • নিজেরা পুজোতে পুরানো জামা কাপড় পড়ে কাটিয়ে দেবে কিন্তু আমার জন্য নতুন জামা ঠিকই কিনবে ।
  • নিজেদের শরীর খারাপ হলেও সেই আমার কথাই ভাববে ।

এইসব দেখে মনে হয় বাবা- মায়েরা একটু স্বার্থপর হলে ভালো হত ।

তারা জীবনের শুরুতে সংঘর্ষ করে নিজেদের জায়গাটা তৈরি করে নিয়েছে । এখন যদি সেই জায়গাটা , সেই সুখ- স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ না করে আমার জন্য সেটা ছেড়ে দেয় । তবে সেটা কি ভালো লাগে ?

মাঝেমাঝে মাকে বলি –

এবার একটু নিজের কথা ভাবো তো বাপু । আমি তো এখন অনেক বড়ো হয়েছি।

কে আর শোনে কার কথা ?

আমাকে উল্টে মুখ বেঁকিয়ে বলে –

আগে নিজে মা হও । তারপর বুঝবে মা- বাবা স্বার্থপর হতে পারে না।

তবে হ্যাঁ , এখন আমি যদিও একটু চালাক হয়েছি । আগের মত তারা আমাকে আর ঠকিয়ে বড়ো মাছের পিস , ভালো ভালো জিনিস দিয়ে স্বার্থত্যাগ করার আর অত সুযোগ পায় না ।

আর মনে আরো একটা বড়ো স্বপ্ন আছে যে –

তাদেরকে সব সুখ , সব আনন্দ আরো দ্বিগুণ হারে ফিরিয়ে দেব একদিন।

এই সেই দুজন মানুষ আর তাদের মধ্যমণি ।

অজ্ঞাতনামা -এর মতে জীবনের যেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং তার কারণ:

Atmaja Bandyopadhyay কে ধন্যবাদ প্রশ্নটির উত্তর দিতে অনুরোধ জানানোর জন্য।

প্রশ্নটি ভালো লেগেছে বিধায় রেখে দিলাম যে একটু ফ্রী হয়ে ধীরে সুস্থে দিবো । কিন্তু না সেভাবে সময় বের করা হচ্ছেনা । তবুও ফাঁকে লিখছি । অজ্ঞাত নামেই দিচ্ছি আশা করি তাতে কিছু যায় আসেনা ।

মূল প্রশ্নঃ জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? কেন?

দেখুন আমরা বুলি আওড়াতে কিংবা নীতি কথার ফুলঝুড়ি সাজাতে উস্তাদ ।

কিন্তু আদৌ বাস্তবতা ততোটা সুন্দর যে নীতিকথায় পেট ভরে ?

যদি এক কথায় উত্তর দেই তবে বলবো যেখানেই নিজের এবং পরিবারের স্বার্থ সেখানে অন্য কোন কিছুর বদলে নিজে স্বার্থপর হওয়া উচিত ।

যেখানে নিজের স্বার্থ আগে প্রয়োজন সেখানে অবশ্যই স্বার্থপর হবো । আমি নিশ্চয় নিজ স্বার্থ, নিজ পরিবার স্বার্থ চিন্তা না করে অপরের স্বার্থ চিন্তা করবোনা । হ্যা অনেকে করতে পারেন কিন্তু আমি না । আমি ঠেকে যেমনে শিখি তেমনি নিজেকে গড়বো নিজের মত করে ।

আমরা একদম নিস্বার্থপরায়ণ হই অনেক ক্ষেত্রে । তন্মধ্যে দুইটা ক্ষেত্র যেখানে আমি বাস্তবতা শিখেছি তার ব্যাপারে লিখছি এবং সেক্ষেত্রে আমি নিজ স্বার্থ আগে দেখি কিংবা স্বার্থপর হই ।

এইচএসসি এক্সামের সময়টার কথা আগে বলি । একটা বন্ধু সার্কেল । এদের নিয়ে আড্ডা মজা মাস্তি রাত জেগে । ঘুরাঘুরিও কম হয়নি এলাকায় । এইচএসসি এক্সামের সময় নিজে পড়ি না পড়ি সবার কথা ভেবে একটা গ্রুপ চলতো ।

আসলে তখন নিজের স্বার্থ কিংবা লাভ কোনটাই ভাবিনি ।

একসময় পরীক্ষা শেষ হয় । অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় আমি কিছু কারনে পাইনাই । আমি শুরু করি সেকেন্ড টাইম প্রিপারেশন । সত্যি যে সেইসব বন্ধুদের সাথে তখন আর কথাই হয়না, এদের রেসপন্স আর পাইনা । অবস্থা বর্তমানে এমন যে দেখা হলে কেবল বন্ধুপ্রীতি । এছাড়া কোন কথা আমাদের হয়না ।

এক বন্ধু বর্তমানে কাতারে আছে । কলেজে সে কাতারে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো পরীক্ষার । এরপর ফাইনাল এক্সাম দিয়ে আবার কাতারে চলে গেলো আর এরপর থেকে আমার সাথে আজ অবধি কোন কথা হয়নি । যোগাযোগ সম্পূর্ন বন্ধ তার দিক থেকে ।

অনার্স লাইফ । ইন্টার্নশীপ ৩ জন রুমমেট করবো স্থির করলাম । তাদের তেমন চেনা পরিচিত নাই । আমারও তেমন নাই । অমুক তমুক পরিচিতকে ধরে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমারই ।

কথা চলছে একজনের সাথে ম্যানেজের ব্যাপারে । এইদিকে শুনি গ্রুপের একজন ভালো একটা কোম্পানিতে ইন্টার্ন করতে আরেক গ্রুপে জয়েন হয়েছে । তাদের ইন্টার্ন রেডি হবার পরে জানলাম । বাকি একজন ছিলো তার অবস্থাও তাই । আরেকটা ভালো গ্রুপে জয়েন হয়ে গেলো ভালো পেইড ইন্টার্নের জন্য ।

এরপর অবস্থা এমন যে আমিই একা । এই সময়গুলা আমাকে শেখালো সবার আগে নিজের স্বার্থ । অপরের স্বার্থ পরে চিন্তা কর যখন কিনা তুমি তীরে এসে নিশ্চিন্তে আছো । মাঝ নদীতে ডুবতে থাকা আমি বাকি ডুবন্তদের সাথে নিয়া চিন্তা ভাবনা করা/ তাদের স্বার্থ দেখা আমার শিক্ষায় আর নাই ।

এ তো গেলো বন্ধু মহলে নিজ স্বার্থ ভাবার ক্ষেত্রে ।

এইচএসসি ফাইনাল এক্সামের সময়ে একই কলেজের সমবয়সী একটি মেয়ের প্রেমে পড়ি । প্রথম প্রেম সুতরাং বুঝতেই পারছেন । চলছিলো বেশ । মান অভিমান খুনসুটিই দিয়ে ।

একসময় যোগাযোগ বন্ধ করে দিলো । কেন ? কারন মেয়ের মা অসুস্থ্য, বিয়ের কথা বলছে, পাত্রও আসতেছে দেখতে বিসিএস ক্যাডার । তাই যোগাযোগ বন্ধ । যদি বিয়ে না হয় তবে আমার সাথে কথা হবে । হাহা ।

সময়টা ছিলো আমার সেকেন্ড টাইম এডমিশনের সময় ।

অথচ তার পড়াশোনা/পাবলিকে চান্স পাক তার জন্য কত কিই না করলাম । যদিও ন্যাশনালে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল ।

সেসময় একদিকে এডমিশন অন্যদিকে যাকে নিজের ভেবেছি সে অন্যের হবে, অন্য কেউ তার স্পর্শ পাবে এইটা ভাবতেই নিজেকে ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যেতো । মাথায় সারাক্ষণ তাই ভাবনা চলতো । সেসময়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে যাই ।

তখন অনুধাবন করলাম পরিবারের ভালোবাসাটা । ছেলেটা সুস্থ্য হোক তার জন্য কথা কান্না কাটি, আপ্রাণ চেষ্টা ।

তখন বুঝলাম নিজে স্বার্থপর হলে হও যদি সেখানে পরিবারের বিষয় থেকে থাকে ।

সারসংক্ষেপে শেষে বলতে গেলে বলবো জীবনে সেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত যেখানে নিজের স্বার্থ সবার আগে আসবে । নিজে যখন সেইফ তখন নাহয় ডুবন্তদের নিয়ে ভাববো ।

তাহিরা খালিদ আহমদ -এর মতে জীবনের যেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং তার কারণ:

নিজের পরিবারকে সুখস্বাচ্ছন্দ্যে রাখতে বেআইনি কোন‌ও কাজে লিপ্ত না হয়ে অল্পবিস্তর স্বার্থপর হ‌ওয়া, সিস্টেম থেকে সুযোগসুবিধা দাবি করা আমার দৃষ্টিতে খারাপ কিছু নয়। বিশেষতঃ সেই পরিবারে যদি আপনার উপর নির্ভরশীল কোন‌ও শিশুসন্তান থাকে।

আমার নিজের কথাই ধরা যাক। বিগত তিন বছর যাবৎ টুকটাক কাউন্সেলিংয়ের রোজগার ছাড়া আমার এবং আমার চার বছরের মেয়ের জীবনযাপন সরকারী অনুদানের উপর নির্ভরশীল। আগামী সতেরো বছর আমি অনুদানের প্রত্যাশা করছি, কারণ আমার মেয়ের বয়স এখন চার বছর। স্থানীয় আইন অনুযায়ী একুশ বছর অবধি ওর ভরণপোষণের দায়িত্ব আমার — এবং যেহেতু আমি একজন নথিভুক্ত পরিত্যক্তা কুমারী মা (registered abandoned unwed mother) , আমাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব মার্কিন সরকারের। এর পর (সতেরো বছর পরে আমার বয়স দাঁড়ায় সাতচল্লিশ) আমি কুমারী মা’র অনুদান আর পাবো না — কিন্তু আইন অনুযায়ী একটানা অন্ততঃ পনেরো বছর সরকারী অনুদানের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে আমি দুঃস্থ একাকী বেকার মহিলাদের (destitute, abandoned and unemployed women) পাওনা একটা মোটা অঙ্কের মাসিক ভাতা পাবো। এটা চলবে আমার ষাট বছর বয়স অবধি — আর তারপর তো আজীবনের জন্য বার্ধক্য ভাতা চালু হয়ে যাবে।

মূল চারটি সরকারী অনুদান ছাড়াও আমি শংসাপত্র জমা দিয়ে অন্যান্য বেসরকারী সাহায্য‌ও পাই। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমার মেয়েকে যতদিন স্তন্যপান করিয়েছি, স্থানীয় একটি হাসপাতালের ব্রেস্টফিডিং চ্যারিটি ফাণ্ড থেকে দৈনিক বেশকিছু ডলার পেয়েছি। এর বিনিময়ে আমাকে শুধু দুসপ্তাহে একবার ওই হাসপাতালে গিয়ে নার্সের সামনে মেয়েকে বুকের দুধ খাওয়াতে হতো আর কখনও সখন‌ও প্রকাশ্য স্তন্যদানের সমর্থনে ওদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হতো। এটুকুর বদলে আমি ওখান থেকে সর্বমোট সাত হাজার ডলারের‌ও বেশি অর্থসাহায্য পেয়েছি।

এবার আসল কথায় আসি। একজন তিরিশ বছর বয়সী উচ্চশিক্ষিতা, মোটামুটি চলনসই দেখতে মুসলমান মহিলা (এবং কুমারী মা) হিসেবে আমার ভবিষ্যৎ, যদি আমি সরকারী ভাতা না নিই দুরকম হতে পারে।

১. আমি চাকরি/স্বাধীন কাউন্সেলিং করে পূর্ণসময়ের জন্য রোজগার করতে পারি। হিসেবে বলে, এখন আমি সবরকম অনুদান ও ভাতা মিলিয়ে প্রতিমাসে যা পাই, রোজগার করতে নামলে তারচেয়ে ৩৫-৫০% বেশি পাবো। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমার মেয়ের জন্য ক্রেশ এবং বেবিসিটারের খরচ বহন করতে হবে — এতে করে প্রথম দুতিন বছর অত্যাবশ্যক সব খরচ মেটানোর পর আমার হাতে এমনকি মাসে গোটা দুই ব্রা কেনার‌ও টাকা থাকবে না। ব্রা’র কথা লিখলাম, কারণ ওই জিনিসটা একটু দামি না কিনলে আমার পোষায় না।

২. আমি পছন্দসই পুরুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারি। এরফলে আমাদের (আমি ও মেয়ে) ভরণপোষণের দায়িত্ব থাকবে আমার স্বামীর — এবং আমার মেয়ে পিতৃপ্রতিম পুরুষের সান্নিধ্য পাবে — এখন যে জিনিসটার অভাব নিয়ে আমি আগেও লিখেছিলাম। কিন্তু — সরকারী অনুদানের নিশ্চয়তা আছে আগামী সতেরো বছর — তার পরের তেরো বছর — এবং আমার বাকি জীবনটা মোটামুটি সুখে-স্বাচ্ছ্যন্দে চালানোর। এই দীর্ঘমেয়াদী নিশ্চয়তা, শুনতে খারাপ লাগলেও আমি বলতে বাধ্য, কোনও হবু স্বামীর থেকে পাওয়া দুরাশা মাত্র।

তাই, সব দিক বিচার বিবেচনা করে আমি আপাতত কুমারী মায়েদের পাওনা টাকা ছাড়তে রাজি ন‌ই। আমার এই মনোভাব সুবিধাবাদী, স্বার্থপর এবং পরজীবী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ বলে অনেকে ভাবতে পারেন — কিন্তু আমি গোড়াতেই বলেছি, এক্ষেত্রে আমার স্বার্থপর হতে আপত্তি নেই, বিশেষ করে যখন একক মাতৃত্বের দুঃসহ ভার আমি স্বেচ্ছায় মাথায় তুলে নিইনি।

Marouf Alam -এর মতে জীবনের যেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং তার কারণ:

জীবনের সর্ব ক্ষেত্রেই আপনাকে স্বার্থপর হতে হবে যদি আপনি সফল হতে চান। আপনি যদি স্বার্থপর না হোন তাহলে আপনাকে অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে হবে। অন্যের সুখে সুখী থাকতে হবে। মানুষের প্রতি দয়া করতে পারেন এটা মহত্ত্ব কিন্তু নিজের স্বার্থ কখনোই ছেড়ে দেয়া ঠিক না তাহলে ভবিষ্যতে আপনি দয়া করতে পারবেন এমন সামর্থ্য থাকবে না।আমার মতে স্বার্থপরতা মানে অন্যের ক্ষতি সাধন করে নিজে লাভবান হওয়া নয়।বরং নিজের অধিকার অর্জন।

শুভেন্দু পুরকায়স্থ -এর মতে জীবনের যেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং তার কারণ:

আমি মনে করি, নিজের প্রেমের ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিৎ।

নিজের প্রেমের সংবাদ নি:স্বার্থ ভাবে বিলিয়ে বেড়ানো উচিৎ নয়। কখনোই নয়, নো, নেভার।

কারণ, কে কী বলে না বলে ? প্লাস, কেসটা অন্যরকমও তো কিছু হতে পারে।

আমার যার সাথে একটু মানে ইয়ে ছিলো, সেটা আমি আমার একটা বন্ধুকে গোপনে বলেছিলাম। সে আমাদের বন্ধু মহলে সবাইকে বলে দিলো।

পরে দেখলাম, তারা একদিন এই ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করবে বইল্যা ডাইক্যা নিয়া, আমারে মাইর ধইর কইরা ওই মেয়েটার কাছ থিক্যা সরে যেতে বললো, জ্ঞান দিলো, ভালো কইরা পড়াশোনা কর, প্রেম কইরা জীবন যাইবো না।

এর বেশ কিছুদিন পরে, একদিন রাস্তায় দেখলাম, ওই যে বন্ধুটাকে আমার প্রেমের কথাটি গোপনে বলেছিলাম, সেই বন্ধুটি গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছে, আর বন্ধুটির পাশে ও বসে আছে, কপালে জ্বল জ্বল করছে, সিঁদুরের টিপ।

ও, (মানে বন্ধুটি না, আমার ইয়ে আর কী) গাড়ী থেকে আমাকে দেখে, একটু হেসে আমার দিকে, একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিলো।

আমি যাচ্ছিলাম টিউশনি পড়াতে সাইকেলে করে, ওকে এই অবস্থায় দেখে, মাথা ঘুরে, আমি সাইকেল সহ রাস্তার পাশে ড্রেনে পড়ে যাই।

যাক, কোনোরকমে ড্রেন থেকে সাইকেল নিয়ে, একপায়ে স্যান্ডেল (একটি স্যান্ডেল ড্রেনের কাদার ভেতর ঢুকে গেছে, চেষ্টা করেও টেনে তুলতে পারি নি) উঠে দাঁড়ালাম।

এইবার ওদের চলে যাওয়া গাড়ীটির দিকে তাকাতে গিয়ে দেখি, বন্ধুটি গাড়ী থামিয়ে, জানালার কাঁচ নামিয়ে, হাত দেখিয়ে, আমাকে ডাকছে। ভাবলাম, ওরা হয়তো আমার কাছে, দু:খ, টু:খ প্রকাশ করবে, হয়তো মেয়েটি বলবে, ক্ষমা করে দিও আমাকে, এইসব।

সাইকেলটাকে স্ট্যান্ড করিয়ে, দৌড়ে গেলাম গাড়ীর কাছে।

ধুর কী ভাবি আমি এইসব, বোকার মতো ?

উল্টে, বন্ধুটি, আমাকে বললো,

“শোন, (ওকে দেখিয়ে) তুই ওর সাথে প্রেম করতে চাইছিলি তো, কিনতু, আমি ওকে বিয়ে করে ফেলছি। কেন বুঝলি ? আরে, একটা লড়ঝড় মার্কা পাতি সাইকেল তুই সামলাইতে পারিস না, বউ সামলাইবি ক্যামনে ?”

আর, ওকেও দেখলাম বন্ধুটির কথা শুনে, এক্কেবারে কুলুকুলু করে হেসে, বন্ধুটির বুকে ওর মাথা রাখলো।

ছি:।

প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস -এর মতে জীবনের যেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? এবং তার কারণ:

এককথায় বলবো, নিজের ক্ষেত্রে।।

নিজের সাথে কখনও কম্প্রোমাইজ করা উচিত নই।

ওই একটা মানুষই আছে যে আপনার সাথে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।

এমন কিছু করবেনা যাতে নিজের ক্ষতি হই। কারণ যার জন্য নিজেকে উপেক্ষা করতে যাবে, দেখবে কিছুদিন পর আপনার মূল্য কমে গেছে।