জীবনের কোন তিক্ত সত্যগুলি সবার জেনে রাখা উচিত? সময় থাকতে জেনে নিন।

জীবনে চলার পথে অনেক রকমের অভিজ্ঞতার সম্মূখীন হতে হয়। কখোনো মধুর আবার কখোনো খুব তিক্ত। সুতরাং আপনার জেনে রাখা উচিৎ জীবনের বিছু তিক্ত সত্যগুলি সম্পর্কে। প্রশ্নটি এবং উত্তরগুলো কোরা (Quora) থেকে নেওয়া। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জীবনের কোন কোন তিক্ত সত্যগুলি সবার জেনে রাখা উচিত।

Aashaa Zahid এর মতে জীবনের যেসব তিক্ত সত্যগুলি সবার জেনে রাখা উচিত:

দিন শেষে আসলে আপনার কতটা আর্থিক শক্তি আছে, তাই আপনার সাফল্য নির্ধারণ করে। ব্যক্তি জীবনে আপনি হয়তো অর্থের কাঙাল নন, কিন্তু অর্থবিত্ত সমাজ ও চারপাশের মাধ্যমের মধ্যে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করে।

আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বচ্ছলতা থাকলে চিন্তা শক্তির গতিবিধিই বদলে যায়। যখন অর্থের সংকটে পড়েন, তখন যেভাবে ভাবেন; যখন অর্থের জোর থাকে তখন দুনিয়ার রঙটাই বদলে যায়।

দিন শেষে কেউ আপনার জন্য নয়। আজকে আপনি কোন গ্রুপ থেকে চলে আসলে কিংবা চাকরি ছেড়ে দিলে কাল সেখানে নতুন কেউ যোগ দেবে। নিজেকে কখনই গুরুত্বপূর্ণ ভাবার কিছু নাই। ব্যাপারটাকে এভাবে দেখতে পারেন-আপনি একটি পানিপূর্ণ বালতিতে হাত চুবিয়ে রাখার পরে হাতটি তুলে আনলে পানিতে আলোড়ন তৈরি হয়। কিছুক্ষণ পরে তা আবার স্তিমিত হয়ে যায়, আপনি কর্মক্ষেত্রে কিংবা বন্ধু মহল থেকে চলে আসলে পানি স্তিমিত হয়ে যাবে।

দিন শেষে শারিরীক স্বাস্থ্য ও মনের জোরই সুপার পাওয়ার। আপনার যদি শারিরীক সুস্থতা ও ইতিবাচক মন না থাকে তাহলে কখনই তৃপ্তি পাবেন না জীবনে।

দিন শেষে সবাই ভিন্ন ভিন্ন গল্পের নায়ক। আপনার সহধর্মীনি থেকে শুরু করে আপনার সন্তান ও বন্ধুবান্ধবদের গল্পটা আসলেই কিন্তু ভিন্ন।

আপনি যদি শাসন করতে চান, তাহলে শাসন করতে পারেন। আপনি যদি চারপাশ নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। মনে রাখা দরকার যে, আমরা বলি দিনটা খারাপ বা সময়টা খারাপ যাচ্ছে-আসলে কি তাই? দিনতো দিনের মতই আছে, আপনার মনটাই যে খারাপ সেদিকে খেয়াল রাখুন।

এবং দিন শেষে ফেসবুক বা মুঠোফোন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে, নাকি আপনি মুঠোফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

শাওন কুন্ডু এর মতে জীবনের যেসব তিক্ত সত্যগুলি সবার জেনে রাখা উচিত:

  • আপনার জন্ম এক খেলার মত। আপনি একটি ধনী, সুখী, দরিদ্র, অভিশপ্ত অথবা অবমাননাকর পরিবারে জন্মগ্রহণ করতে পারেন। এটি হুইল স্পিনের মতো এবং আপনি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
  • আপনার সমস্যাগুলি সম্পর্কে অন্যদের খুব বেশি অভিযোগ না করা ভাল । ২০% ক্ষেত্রে তারা এসব পাত্তা দেয় না, ৮০% ক্ষেত্রে তারা আনন্দিত যে আপনি সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন।
  • আমরা চাই মানুষ ভাল করুক, তবে আমাদের চেয়ে যেন ভাল না করে।
  • কেউ আপনাকে বাঁচাতে আসবে না। আপনার জীবন আপনার দায়িত্ব, সুতরাং আপনার নিজেকে রক্ষা করতে শেখা উচিত।
  • এমনকি সবচেয়ে ভাল মানুষও আপনাকে একবার ডোরমেট (পাপোষ) বলে জানার পরে আপনাকে ব্যবহার করতে পারে।
  • কখনও কখনও মৃত্যু অপেক্ষা করতে পারে না এবং কোন সতর্কতা ছাড়াই উপস্থিত হয়।
  • আপনার স্ট্যাটাস / চেহারা / অর্থের কারণে ৯৯% মানুষ আপনার সাথে বন্ধুত্ব করে, কোনো মানুষ হিসাবে আপনার সাথে করে না।
  • বেশভূষাই আসল। আমরা ধরে নিই যে আকর্ষণীয় মানুষেরাই কেবল আরও বন্ধুত্বপূর্ণ, মজাদার। তাদের দেখেই বলে দেই।
  • আপনাকে না বলতে শিখতে হবে। সর্বদা হ্যাঁ বলার ফলে আপনাকে তা পাপোষ বানিয়ে দেয়।
  • আপনি ব্যর্থ হলে মানুষ কেবল আপনাকে নোটিস করে।
  • জীবন ন্যায্য নয়। এটা কখনই হবে না। কিছু গাধা ভাল জিনিস পায়। কিছু দয়ালু মানুষ কেবল… কষ্ট পান।
  • ২৪/৭ হিরো হওয়ার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, আপনি যেমন অন্যকে বাঁচাচ্ছেন, ইতিমধ্যে আপনার চারপাশে আরও বেশি লোক মারা গেছে।
  • আপনার জন্মদিনে আপনার মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  • একজন মহিলা একটি মিথ্যা অভিযোগে একজন পুরুষের জীবনকে নষ্ট করতে পারে এবং তার বিপরীতও হতে পারে।
  • পৃথিবী একটি শীতল, অন্ধকার জায়গা, সর্বদা ছিল এবং সর্বদা থাকবে।
  • বেঁচে থাকার কোন আসল কারণ নেই।
  • ব্যথা এড়ানো / কখনই কষ্ট ভোগ করা আপনাকে সহজে ভঙ্গুর করে তোলে।
  • আমরা সত্যই কখনই মহাবিশ্বকে সঠিকভাবে আবিষ্কার করতে সক্ষম হব না । আমরা একটি ছোট, নীল গ্রহে, পুরো মহাবিশ্বের তুলনায় একটি খুব ছোট নীল গ্রহে আছি।
  • একদিন, কেউ আপনার নামটি শেষ বার বলবে।
  • মানুষ স্বার্থপর। নিঃস্বার্থতা কোথায়? মানুষ আপনার জন্য কোনো কিছু করে কারণ তারা মনে করে যে বিনিময়ে তারা কিছু পাবে।
  • কখনও কখনও কোনো ব্যক্তির সান্নিধ্য যা আপনার কাছে অনেক কিছু বোঝায়, আপনি তাদের কাছে কিছুই না।
  • আপনি যাই করেন না কেন কিছু লোক আপনাকে ঘৃণা করবে।
  • আপনার যে সমস্ত আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে তার মধ্যে কেবল একটিই সফল হয়।
  • “ভাল ছেলেরা” সব সময় ভাল ছেলে থাকে না।
  • প্রযুক্তি আমাদেরকে আগের তুলনায় আরও স্বার্থপর ও আত্মমুগ্ধতাসূচক করে তুলেছে।
  • সোশ্যাল মিডিয়া তরুণদের জীবন ধ্বংস করছে, তরুণদের নির্মলতা ছিনতাই করছে।
  • একদিন দয়া মায়ার অস্তিত্ব বিলীন হবে।
  • একদিন, মানুষ চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
  • একদিন আর কিছুই থাকবে না।
  • একদিন পৃথিবীটির অক্ষের উপর আবর্তন বন্ধ হয়ে যাবে এবং এটি শেষ দিন হবে।

রেজাউল ইসলাম তাসিন এর মতে জীবনের যেসব তিক্ত সত্যগুলি সবার জেনে রাখা উচিত:

  • কোন বন্ধুই চীর বন্ধু নয়, সময়ের সাথে সাথে ঠিকই আসল রূপ দেখতে পারবেন।
  • টাকা পয়সা জীবনের সব কিছু নয়, আবার টাকা পয়সা জীবনের অনেক কিছু।
  • আপনার প্রত্যেক টি খারাপ ও ভালো কর্মের ফল আপনাকে ভোগ করতে হবে।
  • জন্ম যখন নিয়েছেন আপনাকে অতি শিঘ্রই মরতে হবে।
  • আপনার জীবন নষ্ট বা ভালো করার জন্য শুধু মাত্র আপনে নিজেই দায়ী।

খাদিজা তুল কোবরা এর মতে জীবনের যেসব তিক্ত সত্যগুলি সবার জেনে রাখা উচিত:

  • সমাজে উপদেশ, পরামর্শ বিনা পয়সায় দেওয়ার মতো অনেক আছে। কিন্তু কেউ নিজ হাতে বিনা পয়সায় সাহায্য করবে না।
  • সেই ছোট বয়সে আমাদের ঘাড়ে একটা বইয়ের ব্যাগ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুক্তপাঠ,বিনোদন বা শিশুর নিজস্ব ক্ষমতা উন্মোচন করা হয় না।
  • বিয়ে নিয়ে অনেক ধারণা, নিয়ম রয়েছে। খাটো মেয়ে, কালো মেয়ে বা বেকার, স্বল্প আয়ের ছেলের সাথে মেয়ে বিয়ে দিতে চায় না।
  • সমাজে অনেক জ্ঞানবান রয়েছে। কিন্তু তাদের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে প্রজ্ঞাবান হওয়ার ক্ষমতা সবার নেই।
  • আপনি আমাকে যত ভালো মনে করেন হয়তো আমি তত নই।আবার আপনাকে যত ভালো মনে হয় আপনি শতভাগ নন।বাইরে থেকে জাজ করা আমাদের চক্ষু সমস্যায় পড়ে।
  • আপনি সম্মান, শ্রদ্ধা এবং সাহাযা্য বেশি পাবেন অচেনা বা নতুন কারো কাছে থেকে। কারণ আপনার সমবয়সী বা আশেপাশের মানুষেরা আপনার সম্পর্কে বেশ ভালো ভাবে জানেন।। তাই আপনাকে খুব কম মূল্যায়ন করে।
  • আমাদের মস্তিষ্ক সাধারণত নতুন প্রিয়। অতি সহজেই নতুন কিছুর দিকে আকৃষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের মধ্যকার সম্পর্কে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। তবে পরিবারের লোক ছাড়া।
  • সৎ, ধীর, শান্তস্বভাবের মানুষেরা বেশি সমস্যায় পড়েন।কারণ তাদের দিয়ে যেকোনো কিছু ফোর্স করে করিয়ে নেওয়া যায়। এবং তারা বেশি নিঃসঙ্গ হয়।