নিজের উপর কিভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়? বিষয়গুলো জেনে নিন।

আত্মবিশ্বাস ছাড়া মানুষ হীনমনতায় ভোগে। তাছাড়া আত্মবিশ্বাস না থাকলে জীবনে উন্নতিও করা যায় না। তাই নিজের ওপরি আত্মবিশ্বাস জন্মাতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে আমি পারবো। কিন্তু কিভাবে নিজের উপর কিভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন? এই বিষয়ে কয়েকজন কোরা (Quora) ব্যবহারকারীদের মতামত ও উত্তর দেখে নিই।

সামিউল জিসান এর মতে যেভাবে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়:

কনফিডেন্স খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস যেটার অভাবে হাজার হাজার মাস্টার প্ল্যান ঝরে যায়। এ কনফিডেন্স টাকে কাজে লাগাতে পারলে জীবনে অনেক কিছু করা সম্ভব। নিজের প্রতি কনফিডেন্স বাড়াতে

নিজেকে নিয়ে সবসময় ইতিবাচক ভাবুন। সব সময় নিজেকে বলবেন আমি এটা পারব। মহান সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমি সবকিছু করতে পারবো এবং মহান সৃষ্টিকর্তার শক্তিতে আমি সবকিছু করার শক্তি পাব। আমাকে কেউ আটকাতে পারবেনা।

বিস্তারিত ধারণা রাখার চেষ্টা করবেন। ধরুন, বন্ধুদের মাঝে আলোচনা করলেন যে আগামীকাল সবাই একসাথে বসে নির্দিষ্ট একটা টপিকের উপর আলোচনা করব। তো এখন আপনার একান্ত কাজ হবে ওই টপিকটা নিয়ে ইন্টারনেট অথবা বই ঘেঁটে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা। এতে করে ওই বিষয়ে আলোচনা করার সময় অন্যদের থেকে আপনার জ্ঞান বেশি থাকবে এবং আপনি অনেক কনফিডেন্টলি আলোচনা করতে পারবেন। অতএব সব সময় জ্ঞান ধারণ করুন এবং কোন বিষয়ে আলোচনার পূর্বে তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন।

অন্যকে সাহায্য করুন। কারোর কোন হেল্প লাগলে নিজে থেকে স্বেচ্ছায় সাহায্য করুন। কোন কিছুর বিনিময় আশা করে সাহায্য করবেন না।

নিজের লক্ষ্য স্থির করুন। আপনি ঠিক চান সেইটা নিজেকে জিজ্ঞাসা করে বের করুন এবং তা একটি খাতার কাগজে লিখে আপনার পড়ার টেবিল অথবা দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখুন। যাতে করে সেইটা কিছুক্ষণ পর পর আপনার চোখে পড়ে।

স্বপ্ন দেখা বাদ দিয়ে টার্গেট ধরুন। স্বপ্ন এমন একটা জিনিস যেটা পূরণ হতেও পারে নাও হতে পারে কিন্তু টার্গেট এমন এক অদ্ভুত জিনিস যেটা পূরণ করতেই হবে। অতএব নিজের লক্ষ্য নিজের চাওয়া পাওয়াকে স্বপ্ন না বানিয়ে টার্গেট বানান।

মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখবেন। প্রতিদিন অন্তত ৬ ঘন্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন।

আপনি কি চান সেটা মন খুলে আল্লাহর কাছে বলুন। সম্পূর্ণ মন খুলে বলবেন। আমরা মানুষের কাছে শেয়ার করি কিন্তু আল্লাহর কাছে শেয়ার করি না। আল্লাহর কাছে ভালোভাবে শেয়ার করতে পারলে আমাদের কোন চাওয়া পাওয়া অপূর্ণ থাকতো না। অতএব মন খুলে আল্লাহর কাছে নিজের চাওয়া পাওয়া গুলোকে চেয়ে নিন।

মার্জিত পোশাক পরিধান করবেন। এতে সব সময় আপনি নিজেকে কনফিডেন্ট ফিল করবেন।

মার্জিত ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করবেন। নিজের অঞ্চলে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলবেন এবং ফোন কল অথবা টেক্সট মেসেজে মার্জিত ভাষায় কথা বলবেন।

শরীরের সব সময় সুবাস নিয়ে ঘুরবেন। শরীর থেকে যেন কোন প্রকার দুর্গন্ধ বের না হয়।

নিজের মাঝে এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তৈরি করুন। অটোমেটিকলি কনফিডেন্স চলে আসবে।

আল্লাহ আপনার চাওয়া পাওয়া গুলোকে পূরণ করুক। আমিন।

লেখাটি ভালো লাগলে একটি আপভোট দিয়ে অনুসরণ করে পাশে থাকবেন।

ধন্যবাদ 💛

Taherul Islam এর মতে যেভাবে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়:

নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে-

  • ১। নিজের প্রতি জমে থাকা দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান। মনে রাখবেন আমরা কেউই পারফেক্ট বা পরিপুর্ণ নই।
  • ২। শরীর সুস্থ রাখুন। এ ক্ষেত্রে সঠিক খাদ্যাভাস এবং শরীরচর্চার বিকল্প নেই।
  • ৩। আমি পারবো না শব্দ পরিহার করুন, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • ৪। সময় পেলে নিজে অথবা পরিবারসহ ঘুড়তে যান।
  • ৫। অন্যকে উপহার দিয়ে খুশি থাকতে এবং খুশি রাখতে চেষ্টা করুন।
  • ৬। অন্যকে সাহায্য করার মানসিকতা তৈরী করুন। ব্যাস নিজের প্রতি আপনার কনফিডেন্স বেড়ে যাবে। আরও জানতে নিচের তথ্যসুত্র ঘুরে আসতে পারেন।

Tanjil Sarkar এর মতে যেভাবে নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়:

প্রতিদিনের প্রতিটা কাজে, পেশার উত্তরণে কিংবা জীবন গড়ার লক্ষ্যে পৌঁছতে আত্মবিশ্বাস অত্যন্ত জরুরি৷ কীভাবে ধরে রাখা যায় আত্মবিশ্বাস, কীভাবে বাড়ানো যায় আত্মবিশ্বাসের পরিমাণ? আত্মবিশ্বাস মনোবল বাড়ায়। এটি কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করে। কম আত্মবিশ্বাস ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের ওপর বাজে প্রভাব ফেলে; ব্যক্তিকে দুর্বল করে তোলে। তবে কিছু কৌশল মেনে চললে কিন্তু আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়। আসলে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা গুরুত্বপূর্ণ এবং এটিই জীবনের পরিবর্তন ঘটায়।

১. নিজেকে নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা

নিজের সম্পর্কে খারাপ ধারণাগুলো ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে পরিবর্তন করুন। নিজে ভালোভাবে করতে পারেন, এমন তিনটি কাজ বা বিষয়ের তালিকা তৈরি করুন। এই ভালো বিষয়ের তালিকা পরবর্তী খারাপ পরিস্থিতিতে আপনার মনোবল ধরে রাখতে কাজ করবে। ‘আমি পারি না’—এমন মনোভাব পরিবর্তন করে নিজেকে বলুন, ‘আমিও পারি’। কোন কোন বিষয়গুলোতে তুমি ঠিক সাবলীল নও কিংবা যে বিষয়গুলো তোমার পক্ষে উপযুক্ত নয় বলে মনে করো, যেগুলো তোমায় হীনমান্যতায় ভোগায়, তাদের একটা তালিকা বানিয়ে নিন।

২. নিজের যত্ন নিন

আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চাইলে কিন্তু নিজের শরীর ও মন ঠিকঠাক রাখা জরুরি। এ জন্য খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার, আর নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এগুলো আপনাকে মনের দিক থেকে ভালো রাখবে এবং আপনার ইতিবাচক মনোভাবকে উদ্দীপিত করবে। কোনও কিছুতে ভয় না পেয়ে সেটার মুখাপেক্ষী হওয়ার চেষ্টা করো, পজিটিভ চিন্তা করুন৷

৩. লক্ষ্য স্থির করুন

আপনি কী অর্জন করতে চান, তা নিয়ে প্রতিদিন চিন্তা করুন। নিজেকে প্রতিদিনের জন্য তৈরি করুন এবং নিজের অগ্রগতি লিখে রাখুন। একসঙ্গে অনেক বড় লক্ষ্য নির্ধারণ না করে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সে অনুযায়ী আগান। এটি আপনাকে চূড়ান্ত বা বড় লক্ষ্যটি পূরণে সাহায্য করবে। যে কোনও স্মৃতিচারণ আমাদের ইমোশনগুলোকে বাড়িয়ে দেয় তাই আগের বিভিন্ন সাফল্য মনে করো আত্মবিশ্বাস বাড়বেই৷

৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ

মানসিক চাপ নিজের আত্মবিশ্বাসের ওপর বাজে প্রভাব ফেলে। তাই চেষ্টা করুন মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করার। এ জন্য আপনি আপনার পছন্দের কাজগুলো করতে পারেন। খেলাধুলা, ধ্যান, যোগাসন ইত্যাদি করার মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। যারা তোমার উত্‍সাহ দেয় তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন৷ অন্যথায়, যারা নিরুত্‍সাহ করে, অকারণে দোষ খুঁজে পায় তাদের সঙ্গ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলো৷

৫. অন্যকে সাহায্য করুন

আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর আরেকটি উপায় হলো, অন্যকে সাহায্য করা। যারা তাদের কাজ নিয়ে লড়াই করছে বা জীবনে কঠিন সময় পার করছে, তাদের সাহায্য করতে পারেন। তারা হতে পারে আপনার বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা সহপাঠী। মজার বিষয় হল, আপনি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করলে আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক গুণ বাড়বে। প্রত্যাশা না করে প্রতি সপ্তাহে কাউকে সহায়তা করার জন্য অন্তত একটি কাজ করুন। নিজের লক্ষ্য আশা, ইচ্ছা, পরিকল্পনা একটা কাগজে সংক্ষিপ্ত আকারে লিখুন, তারপর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে এমনভাবে পড়ুন যেন স্পষ্ট নিজেই শুনতে পান৷

স্বাধীন হক বিজয় এর মতে যেভাবে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করা যায়:

  • নিজেকে একজন বাস্তববাদী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন।
  • যে কোন বিষয় সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা অর্জন করুন।অর্থাৎ ভাসা ভাসা জ্ঞান নিয়ে তর্ক করতে যাবেন না।
  • মনে রাখতে হবে শুধুমাত্র বই পড়ে কেউ আত্মবিশ্বাসী হয় না।
  • আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে হলে আপনাকে একজন সামাজিক মানুষ হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে।
  • অন্যকে গ্রহণ করার মানসিকতা এবং ভিন্নমতকে সহ্য করার মানসিকতা গ্রো করতে হবে।
  • নিজেকে সবসময়ই বিজয়ী ভাবুন।
  • কারো সাথে কথা বলার সময় চোখে চোখ রাখুন।
  • অন্যের মনস্তত্ত্ব বিবেচনা করে আপনার বক্তব্য পেশ করুন।
  • মানুষকে জানুন,মানুষের সাথে মিশুন।
  • মাঝে মাঝে ইচ্ছাকৃতভাবে অপরিচিত লোকদের সাথে আড্ডা দিন।
  • নিজেকে সবসময় চাঙ্গা রাখুন।
  • চেষ্টা করবেন- জীবনকে উপভোগ করার জন্য।
  • নিজেকে ভুলেও অন্যের সাথে তুলনা করতে যাবেন না।
  • সাহসী লোকদের সাথে চলাফেরা করুন,ভীরু লোকদের এড়িয়ে চলুন।
  • সবসময়ই ইতিবাচক থাকুন।
  • নিজের সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা অর্জন করুন।
  • নিজের দুর্বল এবং সবল দিকগুলো সম্পর্কে ঘাঁটাঘাঁটি করুন।
  • কেউ ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে- পাল্টা আক্রমণ না করে তার সাথে মজা নিন।