আইস ক্রিম আমাদের সকলের পরিচিত এবং অনেক জনপ্রিয় একটি খাদ্য। আর এই খাদ্যটি আমাদের দেশে সর্বস্তরে পাওয়া যায়। কারণ সারা দেশ জুড়ে আইসক্রিম এর অনেক চাহিদা রয়েছে। তাই সারা দেশে যে কোন যায়গায় আইসক্রিম পাওয়া যায়। তবে সবথেকে বেশি গরমের সময় আইসক্রিম বেশি খাওয়া হয় এবং এটি খেতে ও অনেত সুস্বাদু। তাই আসুন আইসক্রিম সম্পর্কে বিস্তারিত যেনে নেওয়া যাক।
ইতিহাস
আইসক্রিম অনেক জনপ্রিয় একটি খাবার। চিনে আইসক্রিমের জন্ম হয় । আর ইতালীয় পর্যটক মার্কো পোলো আইসক্রিম তৈরির কৌশলটি চিন থেকে ইউরোপে নিয়ে আসেন। তাই তৎকালীন সময়ে কুবলাই খানের লোকেরা ঠেলাগাড়ি করে জমাট দুধের খাবার বিক্রি করতো। মার্কো পোলো খাবারটি খেয়ে পছন্দ করেন এবং এর কৌশল শিখে নেন। এই খাবারটির নাম পরে হয় আইসক্রিম।
১৫৩৩ সালে আইসক্রিম ইতালি থেকে প্রথম ফ্রান্সে আসে এবং সেখান থেকে পরে যায় ইংল্যান্ডে। এরপর আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আইসক্রিম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯০০ সাল হতে আইসক্রিমের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়।
উপাদান
আইসক্রিম একটি দুগ্ধজাত খাদ্য। উপযুক্ত উপাদানের পাস্তুরিত মিশ্রণকে জমাট বাঁধিয়ে আইসক্রিম উৎপন্ন করা হয়। আইসক্রিমের মধ্যে দুগ্ধ চর্বি, দুগ্ধজাত উপাদান ছাড়াও চিনি, ভুট্টার সিরাপ, পানি, সুস্বাদু ও সুগন্ধিকারক বস্তু যেমন চকোলেট, ভ্যানিলা, বাদাম, ফলের রস ইত্যাদি যোগ করা হয়। হিমায়ন প্রক্রিয়ার সময় যে বায়ু একত্রীভূত করা হয় সে বায়ুও আইসক্রিমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
প্রস্তুত প্রণালী
আইসক্রিম উৎপাদনে মূল উপাদানগুলোকে একসাথে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এরপর মিশ্রণকে পাস্তুরিত, সমরূপ ও ঠান্ডা করে পাকানো হয়। সুগন্ধিকারক বস্তুগুলোকে সাধারণত হিমায়ন প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্ব মুহূর্তে মিশ্রকের সাথে মিশানো হয়। ফল, বাদাম, সিরাপ হিমায়ক থেকে বের করার পর মিশানো হয়।
বাসায় আইসক্রিম তৈরির রেসিপি
এই রেসিপিটিতে কেবলমাত্র সম্পূর্ণ ক্রিম যুক্ত মিল্ক, কাস্টার্ড পাউডার, ভ্যানিলা এসেন্স এবং চিনি রয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক-
প্রথমে পুরো ক্রিম সমেত দুধকে মাঝারি আঁচে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। একটি পাত্রে ৪-৫ চামচ দুধ নিন। একটি বাটিতে দুধের মধ্যে কাস্টার্ড পাউডার মিশিয়ে ভালো করে মিশ্রণ তৈরি করুন। কাস্টার্ড পাউডার না থাকলে এটিকে কর্ন ফ্লাওয়ারও দিতে পারেন। ফুটন্ত দুধে চিনি এবং কাস্টার্ড পাউডার মিশ্রণ যোগ করুন। মিশ্রণটি যাতে পাত্রের নীচে লেগে না যায় সে জন্য ভালো করে নাড়তে থাকুন।
দুধ ঘন হয়ে এলে আঁচ বন্ধ করুন এবং ভ্যানিলা এসেন্স যুক্ত করুন। সব কিছু একসাথে মিশিয়ে নিয়ে একটি এয়ারটাইট পাত্রে রাখুন। পুরো মিশ্রণটি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এসে গেলে একটি প্লাস্টিকের শীট বা ফয়েল যুক্ত করুন। এর পর ২ ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিন। আবার এটি বাক্সে রাখুন এবং কমপক্ষে ৮ ঘন্টা রেফ্রিজারেট করুন। চাইলে আপনি বাদাম, চকোলেট সস বা আপনার পছন্দসই কিছু দিয়ে এটি সাজান।
আজকের 29 April 2024 বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের আইসক্রিম এর দাম
সাধারণত বাজারে গেলে আমরা আইসক্রিম কিনতে পারি। বর্তমানে বাজারে খুব সহজেই আইসক্রিম পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরণের আইসক্রিম বাজারে দেখতে পাওয়া যায়। এগুলোর মূল্য হলো-
Igloo
দীর্ঘদিন থেকে বাজারে খুব দাপটের সাথে টিকে রয়েছে এই আইসক্রিম ব্রান্ডটি। বাজারের প্রতিটি আইসক্রিম এর দোকানে এই ব্রান্ডের আইসক্রিম রয়েছে। এই ব্রান্ডের আইসক্রিম খেতে অনেক সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যসম্মত। সকল বয়সের মানুষের খাওয়ার উপযোগী আইসক্রিম তৈরি করে এই ব্রান্ডটি। এই ব্রন্ডের আইসক্রিম এর মূল্য হলো-
STICK-REGULAR |
১০-২৫ টাকা |
Cup Range |
২০-৩০ টাকা |
Cone Range |
৩৫-৯০ টাকা |
Blue Bunny
ইগলু এর মতো এটি ও অনেক জনপ্রিয় একটি ব্রান্ড। এই ব্রান্ডটি ও বাজারে সুনাম এর সাথে ব্যবসা করছে। এই ব্রন্ডের আইসক্রিম অনেক সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যসম্মত। তবে সচরাচর এই ব্রান্ডের আইসক্রিম সব দোকান এ পাওয়া যায় না। এই ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন ধরণের অনলাইন সপিং সেন্টার থেকে সংগ্রহ করতে পারি। এই ব্রান্ডের আইসক্রিম এর মূল্য হলো-
STICK-REGULAR |
৫-১৫ টাকা |
Cup Range |
২০ টাকা |
Cone Range |
৩০-৬০ টাকা |
উপসংহার
গরমের মৌসুমে প্রতিটি মানুষ এর প্রিয় খাবার হলো আইসক্রিম। সকল বয়সের মানুষ এই আইসক্রিম খেয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষ আইসক্রিম খেতে ভালোবাসে। এটি একটি দুগ্ধজাত খাদ্য। এটি খেলে আমাদের শরীর ঠান্ডা থাকে। তাই আমাদের আইসক্রিম সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অত্যন্ত জরুরী।