ডিম এর পুষ্টিগুণ/ বর্তমান বাজারে ডিম এর দাম কত

ডিম হলো পাখি, সরীসৃপ, উভচর, কয়েকটি স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং মাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির স্ত্রী প্রাণীরা ডিম দেয় এবং এর মধ্যে অনেকগুলি হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ খেয়ে আসছে। এটি গোলকাকার হয়ে থাকে, যা মেমব্রেনের স্তর দ্বারা ঘিরে থাকা ডিম্বক এবং বহিরাবরণের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এই বহিরাবরণের মূল কাজ হলো এর ভেতরে বাড়তে থাকা ভ্রূণকে এবং ভ্রূণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রক্ষা করা। 

মুরগি ও কচ্ছপের ডিমসহ বেশীরভাগ মুখরোচক ডিমই শক্ত বহিরাবরণ বা ডিমের খোসা, অ্যালবুমেন, ডিমের কুসুম এবং কিছু মেমব্রেন দিয়ে তৈরী। ডিমের সকল অংশই খাদ্যোপযোগী, যদিও খোসা সাধারণত বাদ দেয়া হয়। পুষ্টিগতভাবে ডিম প্রোটিন ও কোলিনের উৎকৃষ্ট উৎস।  

ডিম কী? 

ডিম হলো এক ধরণের খাদ্য। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে। তবে সাধারণত মুরগি এবং হাঁস এর ডিম সবথেকে বেশি পরিচিত এবং এগুলো মানুষ খায় বেশি। কারণ মুরগি এবং হাঁস এর ডিম এ প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে এবং এগুলো গবাদি পশু। আর প্রতিদিন নিয়মিত হাঁস-মুরগির ডিম খেলে বিভিন্ন ধরণের রোগ প্রতিরোধ করা যায়। 

মুরগির ডিম এর বিভিন্ন অংশ

একটি মুরগির ডিম এ বিভিন্ন স্তর বা অংশ রয়েছে। এই স্তরগুলো চিত্রসহ নিচে উল্লেখ করা হলো- 

Capture

একটি মুরগীর ডিমের বিভিন্ন অংশ:

১. ডিমের খোসা

২. বহিঃমেমব্রেন

৩. অন্তঃমেমব্রেন

৪. চালাযা (Chalaza)

৫. বহিঃঅ্যালবুমেন

৬. মধ্য-অ্যালবুমেন

৭. ভিটেলাইন মেমব্রেন

৮. নিউক্লিয়াস অব প্যান্ডার

৯. গার্মিনাল চাকতি

১০. হলুদ কুসুম

১১. সাদা কুসুম

১২. অন্তঃঅ্যালবুমেন

১৩. চালাযা

১৪. বায়ু কোষ

১৫. কিউটিকল

ডিমের পুষ্টি উপাদান

একটি ডিমে অ্যানার্জি থাকে ১৪৩ ক্যালোরি। আর কার্বোহাইড্রেট থাকে ০.৭২ গ্রাম মতো। এবং প্রোটিন থাকে ১২.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট থাকে ৯.৫১ গ্রাম। এছাড়া ফসফরাস থাকে ১৯৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৩৮ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক থাকে ১.২৯ মিলিগ্রাম।ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন ও কুসুমে থাকে ভালো ফ্যাট, আয়রন ও ভিটামিন। তাই শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় শক্ত করতে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর। এছাড়াও ডিমে আরও আছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। আর কুসুমে থাকা ভিটামিন ডি, হাড়ের জন্য ভালো।

 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অপুষ্টি, রক্তাল্পতা ও ডায়াবেটিসের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়া উচিত। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের সুষম পুষ্টিকর খাদ্যের কথা বিবেচনা করে বিজ্ঞানীরা মুরগির ডিম ডায়েটে রাখার কথা বলছেন। 

ডিম খেলে সারবে যেসব রোগ

1

ডিম খেলে শরীরে দ্রুত অ্যানার্জি আসে। ডিমে থাকা ভিটামিন থেকেই মূলত এই অ্যানার্জি বা শক্তি মেলে। এতে থাকা ভিটামিন বি খাদ্যকে অ্যানার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করে। তাই প্রতিদিন সকালে একটি সেদ্ধ খেলে সারাদিন ক্লান্তহীন থাকবেন। পেশী ব্যথায় অনেকেই ভোগেন। ডিমে থাকা ভিটামিন ডি পেশী মজবুত করে। নিয়মিত যারা ব্যায়াম করেন তাদেরকে বিশেষজ্ঞরা ডিম খেতে বলেন।

নারী স্বাস্থ্যের উন্নতিতে জন্য প্রতিদিন ৫০-৬০ শতাংশ প্রোটিন দরকার হয়। যা ডিম থেকেই পাওয়া যায়। একটি ডিম থেকে ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন মেলে।

2

এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ডিম খেলে হার্টে রক্ত জমাট বাঁধে না। তাই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি সারা শরীরেই রক্ত চলাচল সচল থাকে।

অনেকের মধ্যেই ভ্রান্ত ধারণা আছে, ডিম না কি কোলেস্টেরল বাড়ায়। যা একদমই ভুল। বরং ডিম কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা ওমেগা ৩ এই কাজটি করতে সাহায্য করে। আবার ডিম এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় প্রায় ১০ শতাংশ।

ডিমে থাকে ভিটামিন এ। যা দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে। তাছাড়া ডিমে থাকা কেরোটিনয়েড আর ল্যুটেন বয়স হয়ে গেলে চোখের এক বড় সমস্যা, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

 ডিমে থাকা ভিটামিন ই কোষ আর ত্বকে থাকা ফ্রি র‍্যাডিকেল ধ্বংস করে। তাই ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও নতুন কোষ তৈরি হতেও সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত ডিম খেলে ব্রেস্ট ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

বর্তমান 2 May 2024 বাজারে ডিম এর মূল্য 

ডিম এর দাম স্থীর থাকে না। সময়ের সাথে সাথে এর দাম মাঝে মাঝে বেড়ে যায় আবার কমতেও থাকে। তবে বর্তমান 2 May 2024 বাজারে ডিম এর মূল্য হলো- 

মুরগির দিম (কাঁচা লাল) ১টি 

৮ টাকা 

মুরগির ডিম (কাঁচা সাদা) ১টি 

১০ টাকা 

হাঁসের ডিম (কাঁচা) ১টি 

১৬ টাকা 

উপসংহার

ডিম অনেক পুষ্টিকর একটি খাদ্য।এই কারণে  আমাদের নিয়মিত ডিম খাওয়া উচিত। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডাক্তার রোগী কে বেশি করে ডিম খেতে বলেন। সাধারণত হাঁস ও মুরগির ডিম আমরা বেশি খেয়ে থাকি। তবে এছাড়া ও অনেক প্রাণীর ডিম রয়েছে যেগুলো আমরা বেশি খায় না। তবে মাঝে মাঝে এসকল ডিম ও খেতে হয়।  

 

 

 

Leave a Comment