0

‘সুস্থ শিশুর জন্মপূর্ব প্রস্তুতি’ বিষয়টির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ। এইচএসসি শিশুর বিকাশ ৭ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

সুস্থ শিশুর জন্মপূর্ব প্রস্তুতি - বিষয়টির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ

বিষয়: শিশুর বিকাশ ১ম পত্র, বিষয় কোড: ২৮৯, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০৫, স্তর: এইচএসসি, ৫ম অধ্যায়: গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের যত্ন ও পরিচর্যা।

অ্যাসাইনমেন্ট: ‘সুস্থ শিশুর জন্মপূর্ব প্রস্তুতি’ বিষয়টির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ।

বিষয়বস্তু

  • ১. গর্ভের শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে খাদ্য ও পুষ্টির প্রয়ােজনীয়তা বিশ্লেষণ করতে পারবে।
  • ২. গর্ভবর্তী মায়ের খাদ্য সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৩. গর্ভের শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে প্রয়ােজনীয় চিকিৎসা সেবার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে
  • ৪. প্রসব প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৫. নিরাপদ প্রসবের প্রস্তুতি ব্যাখ্যা করতে পারবে।

নির্দেশনা

  • ক. গর্ভবতী মায়ের খাদ্য উল্লেখ।
  • খ. গর্ভবতী মায়ের খাদ্য সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণার উল্লেখ।
  • গ. গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসার বর্ননা।
  • ঘ. বিভিন্ন প্রকার প্রসবের বর্ননা প্রদান।
  • ঙ. প্রসব পূর্ব প্রস্তুতি উল্লেখ।

এইচএসসি শিশুর বিকাশ ৭ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর

ক) গর্ভবতী মায়ের খাদ্যঃ

১) ডিম

মহান খাবার বলে অনেকের দ্বারা বিবেচিত হওয়া ডিম, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজগুলির একটি দুর্দান্ত উত্স। ডিমগুলিতে প্রোটিন তৈরি করা অ্যামিনো অ্যাসিডগুলি কোষের পুনর্গঠন ও মেরামতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যকর শিশুর জন্য বিশেষভাবে অপরিহার্য।

একটি বড় ডিমে ৮০ ক্যালরি রয়েছে এবং তার সাথে অপরিহার্য প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শিশুদের বৃদ্ধির জন্য এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। উপরন্তু, একটি ডিমে একশো বারো মিলিগ্রাম কোলাইন থাকে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় কোলাইনের এক চতুর্থাংশ। মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশের জন্য কোলাইন অপরিহার্য।

গর্ভাবস্থায় বর্ধিত পরিমাণে পুষ্টি গ্রহণের জন্য ডিম সবচেয়ে সহজে উপলভ্য পুষ্টিকর খাবার।

কৌশল: একটি সুস্বাদু অমলেটকে একদিন অন্তর বা সপ্তাহে তিনবার একবারে দুটি ডিম ব্যবহার করে খাওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ। সবজি এবং চীজ যোগ করলে শুধুমাত্র স্বাদই বাড়বে না, সাথে পুষ্টির মানও বৃদ্ধি হবে। যদি আপনি ভাজা খাবার এড়াতে চান, তবে ফ্রিজে অনেকগুলি পূর্ণ সিদ্ধ করা ডিম রেখে দিলে, সেগুলিকে আপনার ডায়েটে সহজে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com) আপনি যখনই ক্ষুধার্ত বোধ করবেন এটি গোটা ডিম বের করে খান, আপনি এমনকি একটি সিদ্ধ ডিমের সালাদ তৈরীর কথাও বিবেচনা করতে পারেন। কিছু মহিলা গর্ভাবস্থায় মাংস এড়িয়ে যান এবং মাংসের প্রোটিনের বিকল্প হিসাবে ডিম সবচেয়ে ভাল খাবার।

২) উতকর্ষবর্ধিত (ফর্টিফায়েড) ব্রেকফাস্ট দানাশস্য (সিরিয়াল)

দানাশস্যগুলির, বিশেষত বহু-দানা শস্যগুলির, স্বাস্থ্য উপকারিতা বেশ কিছু সময় ধরেই পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফর্টিফায়েড সিরিয়ালগুলি হল সেই সিরিয়াল যা অতিরিক্ত ভিটামিন এবং আইডিন সহ অতিরিক্ত খনিজ পদার্থ দ্বারা উতকর্ষবর্ধিত।

খাদ্যশস্য, বিশেষত গোটা দানার খাদ্যশস্য ফাইবার সমৃদ্ধ এবং তাই পেট ভর্তি করতে পারে, এটি গর্ভাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ, কারণ হরমোনগত পরিবর্তনগুলি অপ্রত্যাশিত ক্ষুধার জ্বালা তৈরি করতে পারে। খনিজ ও ভিটামিন থাকার অতিরিক্ত উপকারিতা ছাড়াও, ফর্টিফায়েড সিরিয়ালগুলি গর্ভবতী মহিলাদেরকে তাদের খাদ্যের সাথে দুধ যোগ করতে এবং তার সাথে যে সুবিধাগুলি আসে সেগুলি পেতে সাহায্য করতে পারে।

কৌশল: আপনার খাদ্যে ফর্টিফায়েড সিরিয়াল যোগ করার জন্য, প্রথমে সঠিক ধরনের ফর্টিফায়েড সিরিয়াল বেছে নেওয়া অপরিহার্য। গর্ভবতী মহিলারা এমন সিরিয়ালগুলি বেছে নেবেন যাতে ফাইবার ও ফোলিক অ্যাসিড উচ্চ পরিমাণে থাকে এবং কম চিনি থাকে। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com) এছাড়াও আপনার চয়ন করা সিরিয়ালে কার্বোহাইড্রেটের একটি সন্তোষজনক ভারসাম্য থাকা উচিত যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানী এবং শক্তি সরবরাহ করে। প্রতিদিন সকালের জলখাবারে সিরিয়াল না খেলেও, সপ্তাহে দুবার বা তিনবার এক বাটি করে খেলে তা যথেষ্ট হবে। সিরিয়ালগুলি সাধারণভাবে খাওয়া যেতে পারে, দুধ যোগ করলে এবং বাদাম, বেরি ও ফল উপরে ছড়িয়ে দিলে, তা সত্যিই সুস্বাদু হয়ে উঠবে।

৩) কলা

কলা প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার এবং গর্ভবতী মহিলার জন্য সেরা খাদ্য। একটি কলা এক শত ক্যালোরি ধরে এবং এটি ফোলিক এসিড, ভিটামিন বি 6, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়ামের একটি দুর্দান্ত উত্স। উপরন্তু, কলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহে সমৃদ্ধ এবং একটি চমত্কার শক্তি বৃদ্ধিকারী হয়।

কৌশলঃ একজন গর্ভবতী মহিলা দিনে তিন থেকে চারটি কলা খেতে পারেন এবং গর্ভাবস্থায় হওয়া ক্ষুধা সমস্যার সাথে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারেন। একটি কলা দিয়ে এক গ্লাস দুধ একটি সম্পূর্ণ খাবার বলে মনে করা হয়; আপনি একটি কলা এবং দুধ মেখে নিয়ে সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর স্মুথিও বানিয়ে নিতে পারেন।

৪. মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু ফাইবার, ফোলিক এসিড, ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন ধারণ করে। মিষ্টি আলুতে উপস্থিত যৌগ বিটা-ক্যারোটিন অজাত শিশুর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ; বিটা-ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ কোষ এবং টিস্যুগুলির বৃদ্ধি, মেরামত এবং পৃথকীকরণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ; এটি জন্ম দেওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত কোষ এবং টিস্যু পুনরুদ্ধারেও সহায়তা করে।

কৌশলঃ মিষ্টি আলু বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে; সহজতম খাবার হল বেক করা মিষ্টি আলু। নিয়মিত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরী করতে যেভাবে কাটেন, সেইভাবে মিষ্টি আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং টুকরো টুকরো করুন, একটি বেকিং ট্রেতে রাখুন এবং পঁয়তাল্লিশ মিনিটের জন্য বা নরম হওয়া পর্যন্ত বেক করুন। বেক করা মিষ্টি আলু এক ছিটে জলপাই (অলিভ) তেল দিয়ে খেতে পারেন এবং এছাড়াও বিভিন্ন ডিপ ও সস দিয়েও খেতে পারেন।

৫) মাছের লিভারের তেল

ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিডগুলির একটি সমৃদ্ধ উৎস, মাছের লিভার থেকে প্রাপ্ত তেল, বেশিরভাগটি কড (কড লিভার তেল) থেকে পাওয়া যায়, এগুলি যে স্বাস্থ্যকর উপকারিতাগুলি প্রদান করে তা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। মাছের লিভারের তেলগুলি ভিটামিন ডি, ইপিএ এবং ডিএইএ-তেও সমৃদ্ধ এবং অজাত শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাছের লিভারের তেলগুলি প্রিক্ল্যাম্পসিয়া, যেটি হল সম্ভাব্য মারাত্মক গর্ভাবস্থার জটিলতা, তার বিরুদ্ধেও সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

কৌশলঃ মাছের লিভারের তেলগুলি সরাসরি একটি চামচ দিয়ে বা ক্যাপসুলের আকারে নেওয়া যেতে পারে। ডোজ সম্পর্কিত বিষয়ে আপনার ডাক্তার, বা পারদর্শী পুষ্টি বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হয়, মাছের লিভারের তেলের অতিরিক্ত পরিমাণে কিছু রক্তের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

খ) গর্ভবতী মায়ের খাদ্য সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণাঃ

১) গর্ভাবস্থায় মা যদি বেশি পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খান তাহলে সন্তান বেশি বড় হবে। যার ফলে প্রসবকালীন সময় কষ্ট হবে কিংবা নরমাল ডেলিভারি হবে না। এই ধারণা একদমই ঠিক নয়। একজন হবু মায়ের প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

২) সন্তান প্রসবের পর মায়ের অল্প খাওয়া উচিত এবং শুকনো খাবার খাওয়া উচিত। ঘি-ভাত বা কালিজিরা-ভাত এ সময় বেশ উপকারী। মা যদি সবজি, মাছমাংস খান তবে শিশুর পেট কামড়াবে। এটি একটি মিথ্যে ধারণা যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ভীষণ ক্ষতিকর। শিশু জন্মদানের পর একজন মায়ের অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত এবং তা বেশি পরিমাণে।

৩) গর্ভবতী নারীদের পানি কম পান করা উচিত। পানি ও তরল খাবার বেশি খেলে শরীরের রস টানবে না। এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। সন্তান উদরে থাকা অবস্থায় এবং সন্তান জন্মদান- উভয় সময়ই একজন নারীর প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। না হয় মা ও শিশু দু’জনেই পানিশূন্যতায় ভুগবেন।

৪) খাসির মাংস (বা অন্য যে কোনো খাবার) খাওয়ার সঙ্গে বাচ্চার শরীরে লোম বেশি হওয়ার সম্পর্ক নেই। বাচ্চার শারীরিক। বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয় তার পিতামাতার জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে। অনেকের গরুর মাংসে অ্যালার্জি থাকে, তারা খাসির মাংস। খান। কিন্তু সেটাও যদি খাওয়া বন্ধ হয়ে যায় তাহলে মা এবং শিশু উভয়েই প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হন।

৫) সামুদ্রিক মাছের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। উপরন্তু এতে থাকে উপকারি ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা বাচ্চার মস্তিষ্ক গঠনে ভূমিকা রাখে।

৬) জোড়া কলা খেলে যমজ বাচ্চা হবে- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা এবং এর পেছনে কোনো যুক্তি নেই। বাচ্চা যমজ হবে কি হবে না এটা আগে থেকে বলা খুবই কঠিন।

গ) গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসাঃ

১) সমগ্র গর্ভকালীন সময়ে অর্থাৎ ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া থেকে শুরু করে ৯ মাস ৭ দিন ব্যাপী মাঝখানে গর্ভবতী মা ও তার পেটের সন্তানের যত্ন নেওয়াকে গর্ভকালীন যত্ন বলা হয়। নিয়মিত পরীক্ষা এবং উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়। সমগ্র গর্ভকালীন সময়ে কম পক্ষে ৪ বার পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

২) মায়ের কোন অসুখ থাকলে তা নির্ণয় করা এবং তার চিকিৎসা করা যেমন-গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ, প্রি-একলাম্পশিয়া বা একলাম্পশিয়া এবং বাঁধাপ্রাপ্ত প্রসবের পূর্ব ইতিহাস। 

৩) মা যাতে গর্ভকালীন সময়ে নিজের যত্ন নিতে পারেন, আসন্ন প্রসবের জন্য নিজে তৈরী হতে পারেন এবং নবজাত শিশুর যত্ন নিতে পারেন তার শিক্ষা দেয়া। 

৩) গর্ভাবস্থায় জটিল উপসর্গগুলি নির্ণয় করা। এর ব্যবস্থাপনা করা যেমন- রক্ত স্বল্পতা, প্রি-একলাম্পশিয়া ইত্যাদি। ঝুকিপূর্ণ গর্ভ সনাক্ত করা। 

৪) উপদেশের মাধ্যমে মাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করা, রক্তস্বল্পতা, ম্যালেরিয়া এবং ধনুষ্টংকারের প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেয়া। 

৫) নিরাপদ প্রসব বাড়ীতে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোথায় সম্ভব হবে তা নির্বাচন করা। 

৬) প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মীর ব্যবস্থা করা। 

৭) সকল গর্ভবতী মায়ের রেজিষ্ট্রেশন করা।

ঘ) বিভিন্ন প্রকার প্রসবের বর্ণনাঃ

১) যোনি প্রসব

যখন কোনও মহিলার দেহের বার্থ ক্যানেল বা জন্মনালীকার মধ্য দিয়ে একটি শিশু জন্মগ্রহণ করে, তখন সেই ধরণের প্রসবকে যোনি প্রসব হিসেবে অভিহিত করা হয়। এপিডুলার বা ব্যথানাশক ওষুধের দ্বারা এটিতে সহায়তা করা বা না করাও যেতে পারে। এই সব ক্ষেত্রে প্রসবের একদম সঠিক সময়ক্ষণটিকে নির্ধারণ করা যায় না, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যোনি প্রসব হয়ে থাকে গর্ভাবস্থায় ৪০ সপ্তাহ সম্পূর্ণ হওয়ার পর।

বেশিরভাগ ডাক্তারবাবুই যোনি প্রসবের পক্ষে সায় দিয়ে থাকেন যদি সেটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং সেক্ষেত্রে সিজারিয়ান বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব না করারই পরামর্শ দেন। প্রসব শ্রমের ব্যথা ওঠার সময় যে চাপ পড়ে, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসের বিকাশের জন্য শিশুটি হরমোন নিঃসরণ করে; তদুপোরি জন্মনালীকার মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আবার শিশুর বুকে চাপ পরে ফলে বেশ কিছুটা অ্যামনিওটিক তরল পরিষ্কার হয়ে যায় এবং ফুসফুসকে কার্যকরভাবে প্রসারিত হয়।যে সকল মায়েরা একাধিক সন্তান গ্রহণের পরিকল্পনা করে থাকেন তাদের জন্য যোনি প্রসবের পক্ষে উচ্চ সুপারিশ করা হয়। এটি হওয়ার সময় যখন মলদ্বারের উপরের অঞ্চলে একটি ছেদন করা হয়, তখন এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় এপিসিওটমি

সাধারণ যোনি প্রসবের ক্ষেত্রে প্রসবের পর দ্রুতই মায়েরা চাপ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং কোলে সন্তান নিয়ে শীঘ্রই বাড়ি ফিরে আসেন। এই ক্ষেত্রে অন্যগুলির তুলনায় সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।যদি যোনির মধ্য দিয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে থাকে সেক্ষেত্রে আবার শিশুর শ্বাসকষ্টে ভোগার সম্ভাবনাও কম থাকে।

২) স্বাভাবিক প্রসব

এটি হল এমন এক ধরনের জন্মদান প্রক্রিয়া যা একইভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করে আসছে।এই প্রক্রিয়ায়, কোনওরকম চিকিৎসাগত পদ্ধতি বা বাইরে থেকে কোনওকিছু প্রবেশ করানোর প্রক্রিয়া জড়িত নয় এবং প্রক্রিয়াটি যতটা বেশি সম্ভব স্বাভাবিক পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com)এটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত পছন্দ হয়ে থাকে এবং সেক্ষেত্রে পুরো প্রণালীটি জুড়েই মায়ের উপরেই সকল ভার অর্পিত করা প্রয়োজন।

স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব ক্রিয়া ঘটার সময় বিবেচনা করা যেতে পারে বিভিন্ন ব্যায়াম অনুশীলন এবং অবস্থান গুলির কথা।এই প্রক্রিয়াটিতে মাকে খোশমেজাজে হাসি খুশি রাখতে এবং প্রসব প্রক্রিয়ার সাফল্যতাকে নিশ্চিত করতে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের সাথে সাধারণত একজন দাইমা থাকেন।প্রসব ক্রিয়াটি হাসপাতালে অথবা বাড়িতেই করা যেতে পারে সব রকম পূর্ব প্রস্তুতি সহ।

জলে প্রসব বা পুলে প্রসব প্রক্রিয়াটিতে জলের প্লবতার চাপটি এই প্রক্রিয়ায় হওয়া শ্রম বেদনা হ্রাস করতে পারে।এই পৃথিবোতে একটি নতুন সুন্দর ফুটফুটে জীবন আনয়নের সবচেয়ে স্বাভাবিক যন্ত্রণাবিহীন একটি উপায় হল জলে প্রসব প্রক্রিয়া।

স্বাভাবিক প্রসব একজন মায়ের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষমতাপ্রদানকারী একটি প্রক্রিয়া হয়ে উঠতে পারে।প্রসবের পরক্ষণেই শিশুর সাথে মায়ের ত্বকে–ত্বকে যোগাযোগটি হওয়ার কারণে তা তাদের দুজনের মধ্যস্থ বন্ধনটিকে আরও সুদৃঢ় করে তুলতে সহায়তা করে।এছাড়াও এটি আবার শরীরে হরমোনগুলিকে উদ্দীপিত করে যা সেই মুহূর্ত থেকেই মায়ের দেহে স্তন দুধ উৎপাদন করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

৩) অস্ত্রোপচার বিভাগ

সবকিছুই পরিকল্পনামাফিক হয় না।একজন মা হয়ত যোনি প্রসবের মধ্য দিয়ে যেতে চাইতে পারেন কিন্তু যদি জটিলতা দেখা দিয়ে তা বাড়তে থাকে সেক্ষেত্রে গ্রহণ করার মত একটি বিকল্প হয়ে উঠতে পারে সিজারিয়ান বা অস্ত্রপচার পদ্ধতি।

এই পদ্ধতিতে, মায়ের তলপেট কেটে শিশুটির প্রসব করানো হয় এবং অস্ত্রপচারের মাধ্যমে জরায়ুটি কেটে শিশুটিকে বার করে আনা হয়।এই নামটি ল্যাটিন শব্দ ‘সিডার‘ থেকে উদ্ভূত যার অর্থ হল ‘কাটা‘।অতএব এই ধরণের কাটাটি সিসেকশন বা সিজারিয়ান বা অস্ত্রপচার বিভাগ নামে অভিহিত– আর এভাবেই প্রসব প্রক্রিয়াটিরও নাম হয়েছে সিজারিয়ান বা অস্ত্রপচার পদ্ধতি।

অনেক মায়েরা আগে থেকেই সিজারিয়ান বা অস্ত্রপচার পদ্ধতিতে সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন আর সেই অনুযায়ী হাসপাতাল এবং ডাক্তাররাও প্রস্তুতি শুরু করে দেন।এটি নিজের পছন্দের উপর ভিত্তি করেও করা যেতে পারে আবার আলট্রা সোনোগ্রাফি করার পর যদি তাতে সেওরকম কোনও বিশেষ পরিস্থিতি ধরা পড়ে যেখানে অস্ত্রপচার পদ্ধতিটি গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে, যেমন গর্ভে যমজ কিম্বা তিনটি সন্তানের উপস্থিতি, গর্ভের মধ্যে শিশুর আড়াআড়ি বা তীর্যক অবস্থান অথবা শিশুর আকৃতি খুব বড় হয়ে থাকলে।

অন্যান্য ক্ষেত্রে, প্রসব শ্রমের খুব ভাল প্রয়াস চালানোর পরেও যদি যোনি প্রসব ব্যর্থ হয় অথবা কোনও জটিলতা দেখা দেয়, যেমন প্রসবের সময় গর্ভস্থ শিশুর তীর্যক অবস্থান, মেকোনিয়াম (নবজাতকের কালো রঙের প্রথম মল) তরল স্রাবের দাগ অথবা জন্মনালীকায় বাধাবিঘ্ন দেখা দিলে ডাক্তাররা দ্রুত অস্ত্রপচার পদ্ধতির দিকে দৃষ্টিপাত করেন এবং সঠিক সময়ের মধ্যে শিশুকে জরায়ু থেকে বের করে আনার প্রয়াস করেন।

ঙ) প্রসব পূর্ব প্রস্তুতিঃ

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: 

এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল হয় প্রসূতি মায়েদের। ডেলিভারির দিন এগিয়ে এলে তাই আগেভাগেই নিজের পরিচয়পত্র, মেডিক্লেম থাকলে তার কাগজ পত্র, হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন ফর্মই সবই ভরে নিন ব্যাগে। হঠাৎ লেবার পেইন শুরু হলে এতকিছু মাথাতেও থাকবে না, শেষ সময়ভোগান্তি হবে হাসপাতাল পৌঁছে।

ব্যবহারে সহজ হসপিটাল ব্যাগ: 

হাতের গোড়ায় গুছিয়ে রাখুন ব্যবহারে সহজ একটা হসপিটাল ব্যাগও (Hospital Bag)। (ব্য়াগে যা যা রাখবেন- নার্সিং ব্রা, একবার ব্যবহার করেই ফেলে দেওয়া যায় এমন অন্তর্বাস, বেশ কয়েকটা স্যানিটারি প্যাড, টুকটাক দরকারের ওষুধপত্র, ইত্যাদি)

নরম বালিশ: 

ডেলিভারির সময়টা প্রসূতি মায়ের শরীর নানান অস্বস্তির ভিতর দিয়ে যায়। এসময়টা শোওয়াটাও যদি আরামের না হয়, খুব সমস্যা তখন! হাসপাতালে যে বালিশ দেবে তাতে হয়তো ঘুমই আসবে না ঠিকঠাক। আর ঘুম না হলে আরও কাহিল হয়ে পড়বেন প্রসূতি মা। গোছগাছের সময় নিজের বালিশটাও তাই বগলদাবা করে নেওয়া উচিত। (Items Needed for Labor and Delivery) প্রসূতি মায়ের সাথে সঙ্গী যদি কেউ হাসপাতালে থাকার সিদ্ধান্ত নেন, তার জন্যও গুছিয়ে নেওয়া উচিত একটি।

দরকারি ঘরোয়া দাওয়াই:

প্রসব বেদনা যখন শুরু হবে, তখন অনেক ক্লান্ত লাগবে। আর এই যন্ত্রণা এক-দু’ঘণ্টার নয়। টেনে দিতে পারে গোটা এক বেলাও। এ সময় ব্যথা কমানোর কিছু টোটকা জানা থাকলে সুবিধা হয়। বাড়িতে তাই হট প্যাক (Hot Pack) তাই সঙ্গে রাখা উচিত। পরিষ্কার এক পাটি মোজায় চাল বা বিনসের দানা ভরে দিন। হাসপাতালের মাইক্রোওয়েভ ওভেনে সহজেই গরম করা যাবে এটি। লেবার পেইন চলার সময় এই হট প্যাক পেটের কাছটায় ধরে রাখা উচিত।

পরিচ্ছন্নতায় যা যা লাগবে: 

হাসপাতাল হোক যা-ই হোক, মায়ের যত্ন কিন্তু নিতে হবে মাকেই। (Here’s What A New Mom Really Needs) প্রসূতি মা ও সহযোগী ও সন্তান-দু’জনের জন্যই দরকার এটা। বডি ওয়াশ, শ্যাম্পু, মুখ মোছার ওয়াইপস, নিজের টুথপেস্ট, ব্রাশ সবই সাথে রাখা উচিত। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com)লিপ বামটা সাথে রাখা প্রয়োজন। কারণ হাসপাতালের পরিবেশে এমনিই শরীর শুষ্ক হওয়ার সুযোগ থাকে। সেটাই আরও বাড়িয়ে দেয় প্রসব-প্রক্রিয়া! 

পোশাক-আশাক-মাথার ক্লিপ: 

হাসপাতাল থেকে যে গাউন দেবে তার চেয়ে অনেক গুণে স্বস্তির হবে নরম-সুতির নাইটিগুলো! সেই সাথে যদি একটা রোবও সাথে রাখা যায় তা হলে তাহলে সেটা আরো ভালো হয়। এরই সাথে বেশ কয়েক জোড়া আন্ডারওয়্যার সাথে রাখা উচিত। নানা কারণে এ সময়ে নানা ধরনের ডিসচার্জ হতে পারে, একই আন্ডারওয়্যার পরে থেকে নিজের বিপদ বাড়ানো উচিত নয়! কিভাবে নিজের চুল গুটিয়ে রাখা উচিত। বিশেষ করে যদি যদি বড় চুল হয়, চোখে-মুখে তা পড়ে খুব অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।

Get HSC Sishur Bikash Assignment Answer

[Join]