0

‘প্রাচীনতম ও জনপ্রিয় ব্যবসায় সংগঠন হিসেবে এক মালিকানা ব্যবসায় এখনো অপ্রতিদ্বন্দী – বক্তব্যের যথার্থতা রিরূপণ। এসএসসি ব্যবসায় সংগঠন ৮ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

SSC Business Entrepreneurship 8th Week Assignment 2021

অ্যাসাইনমেন্ট: ‘প্রাচীনতম ও জনপ্রিয় ব্যবসায় সংগঠন হিসেবে এক মালিকানা ব্যবসায় এখনো অপ্রতিদ্বন্দী – বক্তব্যের যথার্থতা রিরূপণ।

এসএসসি ব্যবসায় সংগঠন ৮ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর

  • বিষয়ঃ ব্যবসায় উদ্যোগ 
  • এসাইনমেন্টের ক্রমিক নাম্বারঃ ০৬
  • বিষয় কোডঃ ১৪৩
  • শিরোনামঃ প্রাচীন ও জনপ্রিয় ব্যবসা হিসেবে একমালিকানা ব্যবসায় এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী। 

ক) একমালিকানা ব্যবসায়ের ধারণাঃ

পৃথিবীর প্রাচীনতম ও সহজ প্রকৃতির ব্যবসায়ের সংগঠনই হলো একমালিকানা ব্যবসায়। একজন ব্যক্তির মালিকানায় পরিচালিত ব্যবসায়কে এক মালিকানা ব্যবসায় বলে। সাধারণভাবে একজন ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে এক মালিকানা ব্যবসায় বলে। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে কোন ব্যক্তি নিজ দায়িত্বে পুজিঁর সংস্থান করে যে ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রন করে এবং সকল ঝুঁকি বহন ও সমুদয় মুনাফা একাই ভোগ করে তাকে এক মালিকানা ব্যবসায় বলে।

একমালিকানা ব্যবসায় উদাহরণ,

কালীকচ্ছ বাজার (সাধারণের কাছে কালীর বাজার নামে পরিচিত) স্মরণাতীত কাল থেকেই আশেপাশের এলাকায় সুপরিচিত। আশেপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়ীগণ প্রতিদিন কালীর বাজারে এসে ব্যবসায় করে আবার চলে যায়। প্রতিদিন ক্রেতা হিসেবেও শত শত মানুষ কালীর বাজারে ভিড় করে। নানা প্রকারের মুদি দোকান, কাপড়ের দোকান, দর্জির দোকান, মিষ্টির দোকান, চায়ের দোকান, ঔষধের দোকান আছে। বাজারে সবজি চাষী সমিতি নামে একটি দোকান আছে, যেখানে এলাকার উৎপাদিত সকল সবজি একত্রিত করে ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করে থাকে। এগুলো হলো একমালিকানা ব্যবসায়। 

খ) একমালিকানা ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যঃ

অন্যান্য ব্যবসার থেকে একমালিকানা ব্যবসায় কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :

সহজ গঠনঃ

এক মালিকানা ব্যবসায় গঠন করা খুবই সহজ। এক মালিকানা ব্যবসায় গঠন করতে কোন আইনগতজটিলতা নেই। তাই যে কোন ব্যক্তি সামান্য মুলধন নিয়েই এ ব্যবসায় শুরু করতে পারে। তবে ব্যবসায়িকেসরকারের প্রচলিত আইন মেনে চলতে হয়।

একক মালিকানাঃ

এরূপ ব্যবসায়ের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো একক মালিকানা। ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনা তিনি একাই করেন।

মুলধন সরবরাহঃ

ব্যবসায়ের মুলধন মালিক নিজেই সরবরাহ করে। প্রয়োজন হলে মালিক নিজে ব্যাংক বা অন্য কোন উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করে ও মুলধনের যোগাড় দিতে পারে। সাধারণত: এ ধরনের ব্যবসায়ের মুলধনেরপরিমণ কম হয়।

একক ঝুঁকিঃ

ব্যবসায়ের ঝুঁকি মালিককেই বহন করতে হয়। একক মালিকানা হওয়ার কারনে ব্যবসায়ের মুলধনের সম্পূর্ণ ঝুকি মালিককেই বহন করতে হয়।

মুনাফাঃ

এক মালিকানা ব্যবসায়ের মালিক নিজেই যেমন মুনাফা ভোগ করে তেমনি ব্যবসায়ে লোকসান হলে নিজেইতা বহন করে।

দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহনঃ

এক মালিকানা ব্যবসায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো মালিক নিজেই ব্যবসায়ের স্বার্থে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। 

পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রনঃ

একক মালিকানা ব্যবসায় সংগঠনের পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এবং নিয়ন্ত্রন ক্ষমতা পুরোপুরি মালিকের হাতেই ন্যস্ত থাকে। প্রয়োজন হলে মালিক তার কাজের সাহায্যের জন্য বেতনভোগি কর্মচারী রাখতে পারেন।

অসিম দায়ঃ

একমালিকানা ব্যবসায়ের যতটুকু দায় সবটুকুই মালিককে বহন করতে হয়- যার কোন সীমা নির্দিষ্ট করা যায় না। অন্য কারো ওপর ব্যবসায়ের দায়-দায়িত্ব হস্তান্তর করা যায় না।

গ) একমালিকানা ব্যবসায়ের উপযুক্ত ক্ষেত্র সমূহঃ

প্রত্যেকটি ব্যবসা এর উপযুক্ত ক্ষেত্র প্রয়োজন তেমনি একমালিকানা ব্যবসায় অনেকগুলো উপযুক্ত ক্ষেত্র রয়েছে নিম্নে কয়েকটি উপযুক্ত ক্ষেত্রের বর্ণনা দেওয়া হল:

স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ঃ

যে সকল ব্যবসায়ে অত্যন্ত স্বল্প পুঁজির প্রয়োজন পড়ে সেখানে এক মালিকানা ব্যবসায়ই সবচেয়ে উপযোগী বলে বিবেচিত হয়। যেমন- পান বিড়ির দোকান, সবজীর দোকান প্রভৃতি।

সীমিত চাহিদার ব্যবসায়ঃ

যেসব পণ্যের চাহিদা বিশেষ এলাকা বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমিত সেসব পণ্যের ক্ষেত্রে এক মালিকানা ব্যবসায় ভাল। যেমন- রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়।

খুচরা পণ্যঃ

ভোক্তারা যে সকল পণ্য স্বল্প পরিমানে ক্রয় ও ব্যবহার করে সে সকল পণ্যের বিপণনে এক মালিকানা ব্যবসায়ের জুড়ি নাই। যেমন- মুদীর দোকান, মনোহারীর দোকান প্রভৃতি।

স্বল্প ঝুঁকির ব্যবসায়ঃ

কিছু ব্যবসায় আছে যেগুলোতে ঝুঁকি একেবারেই কম। কম আয়ের একক মালিক সেসব ব্যবসায়ই বেশি পছন্দ করে। যেমন: ঔষধের দোকান।

পচনশীল পণ্যঃ

পচনশীল পণ্যের ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হয় বলে সেক্ষেত্রে এক মালিকানা ব্যবসায় বেশি ভাল। যেমন- ফলমূল ও সবজীর ব্যবসায় প্রভৃতি। 

সেবামূলক ব্যবসায়ঃ

প্রত্যক্ষ সেবার প্রতিষ্ঠানগুলো বেশির ভাগই এক মালিকানার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। কেননা সেবামূলক ব্যবসায় মালিক ও গ্রাহকের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপন অপরিহার্য। যেমন: লন্ড্রী, সেলুন, দর্জির দোকান প্রভৃতি।

স্বল্প মূলধনের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পঃ

যে সকল শিল্পে কম শ্রমিক ও কম মূলধনের প্রয়োজন পড়ে সেখানে এক মালিকানা ব্যবসায় উত্তম। যেমন- হস্তজাত কুটির শিল্প, তাঁত শিল্প, মৃৎ শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর কোন বিকল্প নেই।

পরিবর্তনশীল চাহিদার পণ্যঃ

যেসব পণ্যের চাহিদা সময় এবং ক্রেতার রুচির সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় সেসব পণ্যের ক্ষেত্রে এক মালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে ভাল। যেমন- ফ্যাশন সপ।

ঘ) একমালিকানা ব্যবসায়ের জনপ্রিয়তার কারণঃ

একমালিকানা ব্যবসায় একটি প্রাচীন ব্যবসা। যুগের পর যুগ ধরে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের কারণে টিকে রয়েছে। যে বৈশিষ্ট্যগুলো অন্যান্য ব্যবসায়ের তুলনায় সর্বাধিক জনপ্রিয় নির্মাতার কিছু বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো:

সহজ গঠনঃ

বৃহাদায়তন ব্যবসায়ের মত এক মালিকানা ব্যবসায় গঠনে কোন আইনগত প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয় না বা জটিলতা পোহাতে হয় না। সামান্য মুলধন নিয়ে যে কেউ এ ব্যবসায় গঠন করতে পারে।

স্বল্প মুলধনঃ

এমন কিছু ব্যবসায় আছে যেগুলোর জন্য বেশী অর্থের প্রয়োজন পড়ে না। সে জাতীয় ব্যবসায়ের জন্য এক মালিকানা ব্যবসায়ই সবচেয়ে বেশী উপযোগী বলে বিবেচিত হয়। যেমন পানের দোকান, সবজির দোকান প্রভৃতি।

স্বাধীনতাঃ

এক মালিকানা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে মালিককে সিদ্ধান্ত গ্রহন, নিয়ন্ত্রনে কারো সহায়তা নিতে হয় না বলে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে। যা অন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চিন্তাই করা যায় না।

ঝুঁকি কমঃ

যে সকল ব্যবসায় ঝুঁকি কম সেগুলিই সবাই পছন্দ করে। কেননা কম আয়ের লোকেরা সাধারনত ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে চান। ফলে তারা এমন ব্যবসায়ই বেশী পছন্দ করেন।

অবস্থানগত সুবিধাঃ

বৃহাদায়তন ব্যবসায় যে কোন স্থানে গড়ে তোলা যায় না, অথচ ক্রেতা বা ভোক্তারা শহরে বন্দরে গ্রামে-গঞ্জের আনাচে-কানাচে বিক্ষিপ্তভাবে বসবাস করে। তাই সকল শ্রেণীর ভোক্তাদের দোরগোড়ায় পণ্য ও সেবা পৌছে দেয়ার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র এক মালিকানা ব্যবসায়ের কোন বিকল্প নেই।

ক্ষেত্রগত সুবিধা:

এমন কিছু ব্যবসায় ক্ষেত্র লক্ষনীয় যেখানে বৃহদায়তন ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব হয় না বরং সেখানে ক্ষুদ্র একমালিকানা ব্যবসায়ই সবচেয়ে বেশি উপযোগী সংগঠন। যেমন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, সীমিত চাহিদার পণ্য, প্রত্যন্ত অঞ্চলের চাহিদার পণ্য, ভ্রাম্যমান ব্যবসায়, পচনশীন ব্যবসায়, প্রত্যক্ষ সেবাধর্মী ব্যবসায়, পেশাদারী ব্যবসায় প্রভৃতি।

Get SSC Business Entrepreneurship Assignment Answer

[Join]