0

নিজের এলাকার সামাজিক সমস্যামূলক কোনো বিষয় নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী প্রতিবেদন তৈরি। এইচএসসি বাংলা ২য় পত্র ৮ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২২ সমাধান।

নিজের এলাকার সামাজিক সমস্যামূলক কোনো বিষয় নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী প্রতিবেদন

বিষয়: বাংলা ২য় পত্র, বিষয় কোড: ১০২, স্তর: এইচএসসি, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০৪।

অ্যাসাইনমেন্ট: নিজের এলাকার সামাজিক সমস্যামূলক কোনাে বিষয় নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশের উপযােগী প্রতিবেদন তৈরি।

বিষয়বস্তু

  • ক.  ব্যবহারিক জীবনে ভাষাশিক্ষার প্রয়ােজনীয়তার বিভিন্ন দিক বর্ণনা করতে পারবে
  • খ. চিঠিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ, স্মারকলিপি, চাকরির দরখাস্ত, প্রতিবেদন, সারসংক্ষেপ, বক্তৃতা ইত্যাদি লিখতে পারবে

নির্দেশনা

  • ১. প্রতিবেদন লেখার যথাযথ কাঠামাে অনুসরণ করা
  • ২. বিষয়টি সামাজিক সমস্যামূলক ও নিজের এলাকার হওয়া
  • ৩. প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত যুক্ত করতে পারা
  • ৪. বানান ঠিক রাখা
  • ৫. ভাষা ও উপস্থাপনভঙ্গি আকর্ষণীয় হওয়া

এইচএসসি বাংলা ২য় ৮ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর

তারিখঃ ০৫-০৯-২০২১

বরাবর

সম্পাদক

দৈনিক ইত্তেফাক

১ আর কে মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩।

বিষয়ঃ ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি বিষয়ে প্রতিবেদন। 

জনাব,

আপনার বহুল প্রচলিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় নিম্নোক্ত শিরোনামের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনটি জনকল্যাণে প্রকাশ করে বাধিত করবেন।

নিবেদক,

মোঃ আরিফ মৃধা

ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি

ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধির নাম। “ইভটিজিং” শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। এক্ষেত্রে মেয়েরা বেশী পরিচিত।  কারণ স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, বাসে, রিকশায়, রাস্তায় চলাচলের সময় অথবা বন্ধুদের সাথে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয়ার সময়ে ইভটিজিং এর শিকার হয় মেয়েরা। স্বাভাবিক ভাবে ইভটিজিং বলতে চোখের সামনে এমন এক চিত্র ভাসে যেখানে কিছু স্কুল পড়ুয়া মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে পাশ থেকে বখাটে ছেলেরা বাজে মন্তব্য করছে, শিস দিচ্ছে। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com) আসলেই কি বিষয়টা এখানেই সীমাবদ্ধ? নাহ! বাস্তবে বিষয়টা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশে ইভটিজিং অন্যতম একটি সামাজিক ব্যাধি৷ ইভ টিজারারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া। তাদের শিকার হয়ে মেয়েরা অনেক সময় আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। হত্যারও শিকার হচ্ছে তারা। প্রতিরোধে আইনও আছে, তারপরও থামছে না ইভটিজিং৷

ইভটিজিং কোন কাব্যিক শব্দ নয়। “ইভটিজিং” নারী নিগ্রহ ও উত্যক্ত নির্দেশক কাব্যিক শব্দ মনে হলেও এর পরিধি এবং ভয়াবহতা ব্যাপক। ব্যাপক অর্থে ইভটিজিং বলতে কোনো মানুষকে বিশেষ করে কোনো নারী বা তরুণীকে তার স্বাভাবিক চলাফেরা বা কাজকর্ম করা অবস্থায় অশালীন মন্তব্য করা, ইঙ্গিতপূর্ণ ইশারা দেয়া, ভয় দেখানো, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা, তার নাম ধরে অকারণে ডাকা এবং চিৎকার করা, বিকৃতি নামে ডাকা, কোনো অশালীন শব্দ করা, শীস দেয়া, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে, যানবাহনে বা জনবহুল স্থানে ইচ্ছে করে ধাক্কা লাগানো, কোনো কিছু ছুড়ে দেয়া, ব্যক্তিত্বে লাগে এমন কোনো মন্তব্য করা, ধিক্কার দেয়া, তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করা, পথ আগলে দাঁড়ানো, সিগারেটের ধোঁয়া গায়ে ছাড়া বা কবিতাংশ আবৃত্তি করা, চিঠি লেখা, প্রেমে সাড়া না দিলে হুমকি প্রদান ইত্যাদি ইভটিজিং এর মধ্যে পড়ে। শুনতে খারাপ লাগলে এ কথাটাও সত্য অনেক শিক্ষিত লোকজন আছে যারা নানান ভাবে নারীদের ইভটিজিং করে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইভটিজিংকে বলা হয় সেক্সুয়াল হেরাসমেন্ট। এ সেক্সুয়াল হেরাসমেন্টের জন্ম আমেরিকায়। শব্দটি প্রথম পরিচিতি পায় ১৯৭৫ সালের দিকে।মুসলিম প্রধান দেশ প্রাতিষ্ঠানের রাজনীতিবিদ বা নীতিনির্ধারকগণ তা দেখতে বা বুঝতে আরো একটু বেশি সময় নিতে থাকেন। বাংলাদেশে ১৯৭৬ সালে “দ্যা ঢাকা মেট্রোপলিটিন পুলিশ ইভটিজিং নাম পরিবর্তন করে “ওমেন টিজিং” নাম দিয়ে একে সংজ্ঞায়িত করেন। দেশব্যাপি ব্যাপকতর এই ইভটিজিংয়ের পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ।

এর মধ্যে কতগুলো কারণ বর্ণনা করা হলোঃ-

১) সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়।

২) নারীকে পণ্য ও ভোগবস্তু হিসেবে মনে করা এবং পরবর্তীতে ব্যবহার করা।

৩) নারীর পোশাক ও চলাফেরার প্রতি উগ্র দৃষ্টিভঙ্গি

৪) মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা।

৫) স্যাটেলাইট টিভির অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত প্রদর্শন।

৬) সুস্থ সংস্কৃতিচর্চার অভাব।

৭) পিতামাতার অসচেতনতা।

৮) রাজনৈতিক দাপট।

৯) অসৎ সঙ্গ, মাদকাসক্তি, বেকারত্ব ও অশিক্ষা।

১০) লিঙ্গ বৈষম্যমূলক সামাজিক ব্যবস্থাপনা।

১১) শিক্ষা ব্যবস্থায় সুস্থ চরিত্র গঠন উপযোগী শিক্ষা বাস্তবায়ন না হওয়া।

১২) সুনির্দিষ্ট আইনের প্রয়োগ না থাকা।

ইভটিজিং প্রতিরোধে যা যা করা যেতে পারেঃ

১) সন্তানের বেড়ে ওঠা এবং সামাজিকীকরণে পরিবারের যথাযথ ভূমিকা পালন করা।

২) সামাজিক আন্দোলন ও প্রতিরোধ জোরদার করা।

৩) ইভটিজারদের সামাজিকভাবে বয়কট করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।

৪) মোবাইল, ইন্টারনেট ও মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার নিশ্চিত করা।

৫) সামাজিক মূল্যবোধ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর ভূমিকা পালন করা।

৬) নারীর প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা।

৭) সুস্থ বিনোদন ও সংস্কৃতির চর্চা করা।

৮) নারীদের পোশাক ও চলাফেরা নিশ্চিত করা।

৯) অশ্লীল চলচ্চিত্র, সাহিত্য, যৌন বিকার ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসন রোধ করা।

১০) বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

১১) নারীদের আত্মপ্রত্যয়ী হতে সাহায্য করা

১২) সমাজের প্রভাবশালী ও রাজনীতিবিদদের চোখ রাঙ্গানো দমাতে হবে এবং

১৩) প্রশাসনের সকলকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা

ইভটিজিং ব্যাধি দূর  করণে ও ইভটিজিং এর ভয়াবহ ছোবল থেকে সমাজকে রক্ষার্থে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে প্রতিটি পরিবার। কারণ পরিবার থেকেই ভালো মন্দের তফাৎ বা নৈতিক শিক্ষার প্রাইমারি ধারণা পেয়ে থাকি আমরা। ছোট সময় থেকেই নৈতিক শিক্ষায় দীক্ষিত করতে হবে। এ থেকে পরিত্রাণ ঘটাতে না পারলে সামাজিক অবক্ষয় চূড়ান্ত রূপ ধারণ করবে। ইভটিজিং রোধে শিক্ষক সমাজও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে পারে। আপনার সন্তানকে পারিবারিক নৈতিকতা শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করুণ। পবিত্র কুরআনে আছে- ‘‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।’’ (সুরা বনী ইসরাঈল- ৩২)

বর্তমানে ইভটিজিং প্রতিকারে অনেক ধরণের আইনের প্রয়োগ রয়েছে। যেমনঃ দণ্ডবিধি অনুযায়ী শালীনতার উদ্দেশ্যে কোনো মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি কাজ করলে এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রমে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। আবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে যৌনঅঙ্গ বা অন্য কোনো অঙ্গ স্পর্শ করে এবং শ্লীলতাহানি করা হলে অনাধিক ১০ বছর কিন্তু ন্যুনতম তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। এছাড়া মোবাইল কোর্ট আইন অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে সংঘটিত বা উদঘাটিত হয়ে থাকলে

তখনই অপরাধ আমলে নিয়ে শাস্তি দিতে পারবেন। উপরিউক্ত আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে ইভটিজিং প্রতিরোধ করা সম্ভব।

নারী ভগ্নি, নারী বধূ তারা ভোগ্য পণ্য নয়, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পাওয়ার মতো আল্লাহ তায়ালার এক অমূল্য নিয়ামত। আমাদের সমাজে এ বিশ্বাসের লালন করতে পারলেই কেবল আমরা ইভটিজিং থেকে মুক্তি পেতে পারি।

প্রতিবেদনের শিরোনাম: ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি।

প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা: মোঃ আরিফ মৃধা, বরিশাল।

প্রতিবেদনের প্রকৃতি: বিশেষ প্রতিবেদন।

প্রতিবেদন তৈরির সময়: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১  রাত ৮:৩০ ঘটিকা।

প্রেরক, 

মোঃ আরিফ মৃধা

বরিশাল।

প্রাপক,                       

সম্পাদক,

দৈনিক ইত্তেফাক।

১ আর কে মিশন রোড,

ঢাকা-১২০৩।

Get HSC Bangla Assignment Answer

[Join]