কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আমার করণীয়, কুরআন ও হাদিসের আলোকে সমাজ সেবার গুরুত্ব। অষ্টম শ্রেণীর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ১৪তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।
অ্যাসাইনমেন্ট: কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আমার করণীয়, কুরআন ও হাদিসের আলোকে সমাজ সেবার গুরুত্ব।
অষ্টম শ্রেণীর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ১৪তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর
NewResultBD.Com
সমাজের বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে স্বেচ্ছায় গৃহীত কাজকে সমাজসেবা বলে। ব্যাপক অর্থে মানবকল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য গৃহীত সকল কর্মসূচিই সমাজসেবা নামে পরিচিত। আমাদের সমাজে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ বিদ্যমান। কেউ আর্থিকভাবে খুবই দুর্বল, কেউ সামান্য সবল আর কেউ পরিপূর্ণভাবে সবল,সম্পূর্ণ সবল বা সম্পদশালী ব্যাক্তিবর্গ অভাবগ্রস্থ লোকজনের পাশে দারিয়ে তাদের উন্নয়নে নিজেদের সম্পদ ব্যয় করবে। অবহেলিত মানুষের কল্যাণে নানাবিধ প্রতিষ্টান গড়ে তুলব। এটাই তো ইসলামের নির্দেশ, আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে বলেন,
অর্থ: এবং তাদের (ধনীদের) ধন সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্থ ও বঞ্চিতের হক, (সূরা আল যারিয়াত আয়াত-১৯)
অন্যদিকে শিক্ষা সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে,
অর্থ-পাঠ করুন আপনার প্রতিপালকের নামে,যিনি সৃষ্টি করেছেন। ( সূরা আলাক ,আয়াত ১ )
একই প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে,
অর্থ: জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ। (ইবনে মাজা ও বায়হাকি)
বিশৃঙ্খলা সমাজের পরিবেশকে নষ্ট করে। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনুল করিমে এসেছে,
অর্থ: ফিতনা (বিশৃঙ্খলা) হত্যা অপেক্ষা গুরুতর।
অপর একটি আয়াতে সামাজিক নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে, “মুমিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দাও।”
এধরনের হাজারো কর্মকাণ্ড জনসেবা বলে বিবেচিত। যা সম্পাদন করলে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম হতে পারবো। এ বিষয়ে হাদিস পাকে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, “আল্লাহ বান্দাকে ততক্ষণ সাহায্য করেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইকে সাহায্য করতে থাকে।”
এছাড়াও আরবিতে একটি প্রবাদ আছে,
অর্থ: “জাতির নেতা তিনিই যিনি তাদের সেবক।”
কুরআন হাদিসের এমন সুস্পষ্ট বয়ান হতে বুঝা যায় দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই সফলতা এবং আল্লাহ তায়ালার সহায়তা পেতে হলে সমাজ সেবার গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এতে সমাজের কল্যাণের পাশাপাশি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনও সহজ হয়ে যায়।
বর্তমান করোনা মহামারিকালিন সময়ে অসংখ্য মানুষ অসহায়, নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। এতে সমাজ সেবার অংশ হিসেবে তাদের জন্য বেশ কিছু সহায়তা প্রদান করা যায়। নিচে তার একটি তালিকা দেওয়া হলো –
প্রয়োজনীয় সহায়তা |
১) যে সকল পরিবার অর্থের অভাবে খাদ্য ক্রয়ে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের আর্থিক বা খাদ্য সহায়তা প্রদান। |
২) অনেক শিক্ষার্থী অর্থের অভাবে শিক্ষাসামগ্রী ক্রয়ে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ বা আর্থিক সহায়তা প্রদান। |
৩) দরিদ্র পরিবার সমূহের মাঝে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ। [newresultbd.com] |
৪) করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এমন লোকদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। |
৫) করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন এমন ব্যক্তিবর্গের পরিবার সমূহের পাশে দাঁড়ানো। তাদের সান্ত্বনা প্রদান, সাহস প্রদান, প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা প্রদান। |
এছাড়াও আরো নানাবিধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে সমাজ সেবা সম্পাদন করা যায়।
উপরোক্ত সহায়তা সমূহ প্রদান করতে হলে সর্বপ্রথম যা প্রয়োজন তা হলো অর্থ। আর সর্বপ্রথম কাজ হলো এই অর্থ সংগ্রহ করা। বিভিন্ন ভাবে অর্থসমূহ সংগ্রহ করা যায়, যেমন-
১) একটি সংগঠন গড়ে তোলা যারা সমাজের বিত্তশালীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে।
২) রাস্তার মোড়ে বা ধর্মীয় প্রার্থনাস্থল সমূহে একটি করে ডোনেশন বাক্স স্থাপন করা।
৩) অথবা ব্যক্তিবর্গ নিজেরাই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য সহায়তা করা।
এসকল পদ্ধতিতে অর্থ সংগ্রহ করা যায়।
তবে অর্থ সংগ্রহের চেয়ে বড় বিষয় হলো তা সুষ্ঠু বন্টন করা। কেননা সংগৃহীত অর্থ যথাযথ জনগোষ্ঠীর নিকট না পৌঁছালে সমাজের অবস্থা এবং চিত্র পরিবর্তিত হবে না। তাই সংগৃহীত অর্থ বন্টনে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। প্রথমে নির্বাচন করতে হবে সমাজের সংকটাপন্ন অবস্থার পরিবার সমূহ। অতঃপর নির্বাচন করতে হবে তাদের কেমন সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন, যেমন- আর্থিক, খাদ্য, শিক্ষা সামগ্রী ইত্যাদি। অতঃপর সংগৃহিত অর্থ যে কোন উপায়ে তাদের মাঝে বন্টন করার মাধ্যমে সমাজকে সুন্দর ও সমৃদ্ধি করা যাবে।