বাংলাদেশে বসবাসকারী নৃগোষ্ঠী এবং তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সমাজবিজ্ঞান ষষ্ঠ সপ্তাহের নমুনা উত্তর।
অ্যাসাইনমেন্ট: বাংলাদেশে বসবাসকারী নৃগোষ্ঠী এবং তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা।
বাংলাদেশে বসবাসকারী নৃগোষ্ঠী এবং তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা
ক) নৃগোষ্ঠীর ধারণা ও প্রকৃতি
নৃগোষ্ঠী বলতে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কতকগুলো সাধারণ দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সৃষ্ট মানবপ্রজাতির উপবিভাগকে বুঝায়। এক্ষেত্রে বিবেচ্য দৈহিক বৈশিষ্ট্যগুলো হলো মাথার চুল, মাথার আকৃতি, নাকের ধরন, চোখের গঠন ও চোখের মণির রঙ, মুখমন্ডলের গঠন, ঠোঁটের প্রকৃতি, গায়ের রঙ, দৈহিক উচ্চতা ইত্যাদি। এছাড়া কখনও কখনও চোখের ভ্র, কানের প্রকৃতি, কপালের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিবেচিত হয়ে থাকে। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com)।
বাঙালি জাতির নৃতাত্ত্বিক পরিচয় নির্ণয় করা সহজ নয়। বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য পর্যালোচনার মাধ্যমে মনীষীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, বাঙালি জাতি মূলত একটি মিশ্র বা সংকর নৃগোষ্ঠী। মিশ্রতা সত্তেও বাঙালি জাতিকে অনেকে ‘অস্ট্রোএশিয়াটিক বা অস্ট্রিক’ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী বলেও অভিহিত করেছেন। কেবল দৈহিক বৈশিষ্ট্যেই নয়, বাঙালি সংস্কৃতি বিনির্মাণেও অস্ট্রিক তথা আদি-অস্ট্রেলীয়দের প্রভাব সর্বাধিক। সম্প্রতি ভেলাম ভ্যান সেন্ডেল (Willem Van Schendel) তাঁর A History of Bangladesh গ্রন্থে উল্লেখ করেন, বাংলা ভাষায় টিবেটো-বার্মা, অস্ট্রো-এশিয়াটিক এবং দ্রাবিড়ীয় ভাষার প্রভাব আছে। যার অর্থ হচ্ছে বাঙালি নৃগোষ্ঠীর মধ্যেও এদের প্রভাব সুস্পষ্ট।
নৃগোষ্ঠী এবং নৃগোষ্ঠীকে অনেকে সমার্থক অর্থে ব্যবহার করেন। তবে প্রত্যয় দু’টির ব্যবহার এবং ধারণার মধ্যে একটি সূক্ষ পার্থক্য রয়েছে। নৃগোষ্ঠী হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট বংশধারা থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত অভিন্ন শারীরিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী জনগোষ্ঠী। আর নৃগোষ্ঠী হচ্ছে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় অভিন্ন সংস্কৃিতর উত্তরাধীকারী জনগোষ্ঠী। নৃগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে অভিন্ন দৈহিক বৈশিষ্ট্য এবং নৃগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে অভিন্ন সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য প্রাধান্য পায়। তবে একই নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই অভিন্ন সংস্কৃতির চর্চা করেন। আবার অভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে একই নৃগোষ্ঠীর দৈহিক বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
বাংলাদেশের যে সকল স্থানে নৃগোষ্ঠী বসবাস করে তার মধ্যে থেকে আটটি নাম
১) পার্বত্য চট্টগ্রাম
২) চট্টগ্রাম
৩) কুমিল্লা
৪) চাঁদপুর
৫) মৌলভীবাজার
৬) রাজবাড়ী
৭)ময়মনসিং
৮) টাঙ্গাইল
খ) মারমা নৃগোষ্ঠীর উৎপত্তি ও পরিচয়
মারমারা ‘মগ’ নামেও পরিচিত। মারমা নৃগোষ্ঠী বাংলাদেশের একটি অন্যতম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, যাদের অধিকাংশই পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করে। সংখ্যার দিক থেকে মারমারা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে মারমা নৃগোষ্ঠীর ২,০২,৯৭৪ জন মানুষ বসবাস করেন।
আবাস ও ভাষা:
মারমারা মূলত রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় বসবাস করে। তিন পার্বত্য জেলায় তাদের বসবাস পরিলক্ষিত হলেও মূল জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ বান্দরবান জেলায় বসবাস করে। এর বাইরে পটুয়াখালি ও কক্সবাজার জেলাও তারা বসবাস করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশ মারমারাই মায়ানমার থেকে আগত। বাংলাদেশ ছাড়াও এ জনগোষ্ঠী ভারত ও মায়ানমারেও বসবাস করে।
মারমাদের সামাজিক এবং সাংস্কৃিতক জীবনে বার্মিজ সংস্কৃিতর প্রভাব রয়েছে। মারমারা লেখালেখির ক্ষেত্রে তারা বার্মিজ বর্ণমালা ব্যবহার করে। মারমাদের ভাষা তিব্বত-বার্মা ভাষাসমূহের অধীনে বার্মা-আরাকান শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত । তবে সাম্প্রতিককালে মারমারা বাংলা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাও ব্যবহার করে থাকে। মারমারা বার্মিজ ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে থাকে। তাদের নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানকে সাংগ্রাই বলা হয়।
জাতিগত উৎপত্তি:
মারমারা মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত। তারা মূলত মায়ানমারের আরাকানিদের বংশধর। মারমা সম্প্রদায়ের গয়ের রঙ হলদে ফর্সা, উচ্চতা তুলনামূলকভাবে খাটো, নাক বোঁচা, কালো চুল ও ছোট চোখ। ১৪ থেকে ১৭ শতকে বার্মিজরা আরাকান জয় করলে মারমারা আরাকান থেকে বিতাড়িত হয়। তখন তারা থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে। মায়ানমারের প্রাচীন পেগুসিটি হল মারমা সম্প্রদায়ের আদি বাসস্থান।
গ) মারমা নৃগোষ্ঠীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা
বিবাহ ও পরিবার ব্যবস্থা:
মারমাদের পরিবার ব্যবস্থা পিতৃতান্ত্রিক। মারমা পরিবারের প্রধান পিতা হলেও পারিবারিক কাজকর্মে মাতার উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রয়েছে। পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষটি মারমা পরিবারের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করে। মারমা পরিবার সাধারণত একক পরিবার। পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকারে ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই সমান অধিকার রয়েছে। সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে তারা প্রাচীন বার্মিজ প্রথা অনুসরণ করে যাকে ‘থামোতাদা’ বলা হয়। (সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com)।
পুত্র এবং কন্যা যে কেউই পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সাধারণত সবচেয়ে প্রিয় সন্তানটিই গৃহের মালিকানা লাভ করে এবং পিতামাতাকে দেখাশোনা করে। মারমা সম্প্রদায়ে সাধারণত একবিবাহ ব্যবস্থাই প্রচলিত। তবে বহুবিবাহ প্রথা ও দেখা যায়। নারী এবং পুরুষ উভয়েরই বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে হেডম্যান বা কারবারির বিচারই চ‚ড়ান্ত। মারমা সমাজে অন্তর্বিবাহ ও বহির্বিবাহ দুই ধরনের বিবাহ প্রথাই প্রচলিত। বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ ও সম্পত্তির মালিকানা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মারমরা নারীদেরকে স্বাধীনতা দেয়।
ধর্ম:
মারমারা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। প্রায় প্রত্যেকটি মারমা গ্রামে বৌদ্ধ বিহার ‘কিয়াং’ এবং বৌদ্ধভিক্ষু‘‘ভান্তে’দের অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। মারমারা বৈশাখী পূর্ণিমা, আশ্বিনী পূর্ণিমা, কার্তিকী পূর্ণিমা, মাঘী পূর্ণিমা প্রভৃতি বিশেষ দিনগুলোতে বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে ফুল দিয়ে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে বুদ্ধের বন্দনা করে থাকে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধদের মত মারমারাও Theravada Buddhism–এ বিশ্বাসী। তারা বিভিন্ন দেবতার অর্চনা করে থাকে।
খাদ্যাভ্যাস, স্থাপত্যরীতি ও পোশাক:
মারমারা ভাত, মাছ, মাংস এবং নানা ধরনের শাক-সবজি খেয়ে থাকে। সিদ্ধ শাকসবজির সাথে মরিচ মিশিয়ে প্রস্তুত করা ‘তোহজা’ তাদের একটি প্রিয় খাবার। শুটকি মাছ থেকে প্রস্তুতকৃত ‘নাপ্পি’ বা ‘আওয়াংপি’ তাদের আরেকটি পছন্দের খাবার। মারমারা বাঁশ, কাঠ ও ছন দিয়ে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে। কয়েকটি বাঁশের খুঁটির উপর মাটি থেকে ৬-৭ ফুট উপরে তাদের ঘরবাড়ি নির্মিত হয়।
বাঁশ বা কাঠের উঁচুভিতের উপর নির্মিত ঘরবাড়িকে ‘মাচাং’ বলা হয়। গৃহপালিত পশু রাখা, জ্বালানি কাঠ সংরক্ষণ, জুমের ফসল রাখা ইত্যাদি কাজে তারা মাচাং ব্যবহার করে থাকে। মারমা নারী পুরুষেরা পোশাক পরিচ্ছদে পরিপাটি। মারমা পুরুষেরা গায়ে জামা ও লুঙ্গি পরে। পুরুষেরা মাথায় ‘গবং’ নামক পাগড়ি পরে। মারমা নারীরা ‘আনিঞ্জ’ নামক এক ধরনের ব্লাউজ পরে। এছাড়াও মারমা নারীরা ‘রাংকাই’ ও ‘থামি’ নামের দুটি বিশেষ ধরনের পোশাক পরে থাকে। বর্তমানে মারমা নারীও পুরুষ উভয়েই লুঙ্গি পরে থাকে। মারমারা ঐতিহ্যবাহী বুনন প্রযুক্তির সাহায্যে নিজেদের পোশাক নিজেরাই তৈরি করে থাকে।
ঘ) মনিপুরী নৃগোষ্ঠীর উৎপত্তি ও পরিচয়
বাংলাদেশের সমতল অঞ্চলের অন্যতম প্রধান দু’টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হচ্ছে মণিপুরি এবং রাখাইন। উভয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এখন বাহিরাগত। মণিপুরিরা ভারতের আসাম সংলগ্ন মনিপুর অঞ্চল এবং রাখাইনরা মায়ানমারের আরাকান অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে প্রবশে করেছিল। স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বর্তমানে তারা বাংলাদেশের অধিবাসী।
মণিপুরি সম্প্রদায়ের নৃতাত্ত্বিক ও জাতিগত পরিচয়:
সাধারণত মণিপুর রাজ্যের অধিবাসীদেরকে ‘মণিপুরি’ বলা হয়। ভারতের আসাম সংলগ্ন ‘মণিপুর’ রাজ্য থেকে উদ্বাস্তু হয়ে ১৭৫৬, ১৭৫৮ এবং ১৮৯১ সালে মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোকেরা বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। লোককথায় প্রচলিত আছে যে, অষ্টাদশ শতাব্দীতে মণিপুর রাজ্যের এক রাজপুত্র মণিপুর থেকে পালিয়ে সফরসঙ্গীসহ সিলেটে চলে আসেন। ধারণা করা হয় যে, এরাই হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান মণিপুরিদের পূর্বপুরুষ।
মণিপুরিরা কোনো নরগোষ্ঠীর অন্তর্গত তা সঠিকভাবে নিরূপণ করা মুশকিল। তবে দেহের গঠন ও মুখমন্ডলের বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে এদের সাথে চীনা ও বার্মিজদের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। তাই এদেরকে আদি-মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠীর অন্তভর্ক্তু বলে মনে করা হয়। ধারণা করা হয় যে, মণিপুরিরা ভারতের আসামরাজ্যের কুকি জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্গত। তাদের পূর্বপুরুষের নাম ‘পাখাংবা’। প্রবাদ আছে যে, পাখাংবা একজন সর্পপুরুষ ছিলেন। অরণ্যে গর্তের ভিতর থেকে একজন সুপুরুষ যুবক হিসাবে তিনি বেরিয়ে আসেন। জনপথে হাঁটার সময় জুমচাষরত এক অপূর্ব সুন্দরী রমণীকে দেখে মুগ্ধ হন এবং তাকে বিয়ে করে সংসারজীবন শুরু করেন। এই দম্পতি থেকে মণিপুরি জাতিগোষ্ঠীর উৎপত্তি বলে মনে করা হয়।
ঙ) মনিপুরী নৃগোষ্ঠীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারা
ভাষা, ধর্ম ও আবাস:
মণিপুরিদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। মণিপুরি ভাষার দু’টি উপবিভাগের একটি হচ্ছে বিষ্ণুপ্রিয়া, অপরটি হচ্ছে মৈতৈ ভাষা। বিষ্ণুপ্রিয়ার সাথে অহমিয়া, উড়িয়া বাংলা ভাষার সাদৃশ্য রয়েছে। বিষ্ণুপ্রিয়ার নিজস্ব বর্ণলিপি আছে। তবে উৎপত্তিগত দিক থেকে এটি মাগধি-প্রাকৃত থেকে আগত। মৈতৈ মণিপুরিদের ব্রহ্মীয় ভাষার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
কারো কারো মতে, মণিপুরিদের ভাষার সাথে কুকীদের ভাষার সাদৃশ্য রয়েছে। মণিপুরিরা হিন্দুধমের্র বৈষ্ণব স¤প্রদায়ের অন্তভর্ক্তু । ব্রাহ্মণ পুরোহিত দিয়ে তারা পূজা করে থাকে। সাধারণত তাদের মন্দিরে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ, শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেব এবং শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গের মূর্তি দেখা যায়। বাংলাদেশের মণিপুরি স¤প্রদায় সিলেটের তামাবিল, মৌলভীবাজারের ভানুগাছ এবং হবিগঞ্জের আসামপাড়া এলাকায় বসবাস করে। এছাড়া ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় কিছুসংখ্যক মণিপুরি বাস করে।
বিবাহ, পরিবার ও অর্থনীতি:
মণিপুরিদের মধ্যে বর্হিগোত্র বিবাহ প্রচলিত আছে। একই গোত্রের মধ্যে বিয়ে এখানে নিষিদ্ধ। তাদের মধ্যে বাল্যবিবাহের প্রচলন নেই। তবে তালাক ও বিধবা বিবাহের প্রচলন রয়েছে। মণিপুরিদের মধ্যে পিতৃতান্ত্রিক এবং পিতৃসূত্রীয় পরিবার ব্যবস্থা প্রচলিত। ছেলেরা পিতার সম্পত্তিতে সমান ভাগ পেলেও মেয়েদের কোনো অধিকার নেই। তবে পিতা ইচ্ছা করলে তার মেয়েকে সম্পত্তি দান করতে পারেন। কোনো দম্পতির পুত্রসন্তান না থাকলে মেয়ে পিতার সম্পত্তির পূর্ণ উত্তরাধিকারী বলে গণ্য হয়। এদের মধ্যে একক বা অনুপরিবার বেশি পরিলক্ষিত হয়।
জ্ঞাতিগোষ্ঠী ও সংষ্কৃতি:
মণিপুরি নৃগোষ্ঠী বিভিন্ন জ্ঞাতি গোষ্ঠী বিভক্ত। এর মধ্যে প্রধান দু’টি জ্ঞাতিগোষ্ঠী হচ্ছে ভাষার ভিত্তিতে। একটি বিষ্ণুপ্রিয়া, অপরটি মৈথৈ। এছাড়াও মৈরাং, লুয়াং, অমংগোম, ক্ষুমল, নিংথৌজা, খরা, নংবা ইত্যাদি
জ্ঞাতিগোষ্ঠী পরিলক্ষিত হয়। মণিপুরীদের লোকসংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। বিশেষ করে মণিপুরি নৃত্য ও সংগীত জাতীয়ভাবে সমাদৃত।
মণিপুরিদের প্রধান খাদ্য ভাত। তা ছাড়া মাছ ও শাক-সবজি তাদের খাদ্য তালিকায় থাকে। মণিপুরিরা নিজেদের পোশাক নিজেরা তৈরি করে। বাঙালি সমাজের প্রভাবে মণিপুরি মেয়েরা তাদের ঐতিহ্যবাহী লুঙ্গির পরিবর্তে কেউ কেউ শাড়ি পরছে। তাদের আচার-আচরণ ও রীতিনীতিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে এবং এ সমাজে সামাজিক গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
[Join]