0

উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক। এইচএসসি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ৫ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক

স্তর: এইচএসসি পরিক্ষা ২০২১, বিভাগ: ব্যবসায় শিক্ষা; বিষয়: উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ১ম পত্র, বিষয় কোড: ২৮৬; মোট নম্বর: ২০, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০৩

অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরোনাম: অধ্যায়-দ্বিতীয়; উৎপাদনের উপকরণ

অ্যাসাইনমেন্ট: উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক

বিষয়বস্তু

  • ১. উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে চিহ্নিত করতে পারবে
  • ২. উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে শ্রমের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে চিহ্নিত করতে পারবে
  • ৩. শ্রমবিভাগের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে
  • ৪. উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে পারবে
  • ৫. উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে পারবে

নির্দেশনা

ক) উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে:-

  • ১) ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ২) শ্রমের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ৩) মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ৪) সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করতে হবে।
  • ৫) উপকরণের সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে হবে।

উৎপাদন ও এর উপকরণসমূহের সম্পর্ক

HSC 2021 উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন প্রথম পত্রের পঞ্চম সপ্তাহের নমুনা উত্তর

এসাইনমেন্টের ক্রমিক নংঃ 04

এসাইনমেন্ট এর শিরোনামঃ The relationship between production and its materials.

বিষয় কোডঃ 286

বিষয়ঃ Production management and marketing. 

ক) ভূমির ধারণা ও বৈশিষ্ট্য 

ভূমি হল উৎপাদনের প্রথম ও মৌলিক উপাদান। সাধারণ ভাষায়,  ভূমি বলতে ভূপৃষ্ঠকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে এটা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়। অর্থনীতিতে কেবল পৃথিবীর উপরিভাগকে ভূমি বলা হয় না। অর্থনীতিতে ভূমি বলতে প্রকৃতির অবারিত দান সকল সম্পদকেই বুঝায়। অতএব, ভূমির উপরিভাগ, মাটির উর্বরতা, আলো, বাতাস, তাপ, আবহাওয়া, জলবায়ু, বৃষ্টিপাত, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত, খনি, বন, মৎস্যক্ষেত্র প্রভৃতি ভ‚মির অন্তর্ভুক্ত। ভূমি দ্রব্য উৎপাদনের প্রাথমিক ও প্রধান উপকরণ। কৃষি, বন, খনি এবং মৎসক্ষেত্রের বেলায় ভূমির গুরুত্ব সর্বাধিক। অর্থনীতিবিদ মার্শালের মতে ভূমি হল ঐ সমস্ত বস্তু বা নৈস্বর্গিক শক্তি যা মানুষের কল্যানে প্রকৃতি অবারিত দান করেছেন। এ সংজ্ঞানুযায়ী মৃত্তিকা, আলো, বাতাস, পানি, খনিজ সম্পদ, বৃক্ষ তরুলতা, পশু-পক্ষী সবই ভূমির অন্তর্গত। মানুষ এগুলো সৃষ্টি করতে পারে না। সুতরাং উৎপাদন কার্যে সহায়ক প্রাকৃতিক সকল সম্পদকে অর্থনীতিতে ভূমি বলা হয়।

ভূমির বৈশিষ্ট্য: 

১। ভূমি প্রকৃতির দান: মাটি, বায়ু, বৃষ্টি, সমুদ্র, নদী-নালা, খনি এবং ভূউপরিস্থ সবকিছুই প্রকৃতি প্রদত্ত দান। ভূমি হচ্ছে উৎপাদনের মূল উপাদান।

২। ভূমির যোগান স্থির: ভূমির যোগান বাড়ানো বা কমানো যায় না। উৎপাদনের সকল উপাদান সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় কিন্তু ভূমির যোগান স্থির। কারণ ইহা প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল।

৩। ভূমি স্থায়ী উপাদান: ভূমি একটি স্থায়ী উপাদান। অর্থাৎ ইহা কখনও নিঃশেষ হয়ে যায় না। কিন্তু অন্যান্য উপাদান যেমন শ্রম, মূলধন, সংগঠন ইত্যাদি অস্থায়ী।

৪। গতিশীলতার অভাব: ভূমি স্থানানন্তর করা যায় না অর্থাৎ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভৌগলিক দিক থেকে ভূমির গতিশীলতা নেই। কিন্তু শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের ভৌগলিক গতিশীলতা রয়েছে।

৫। ভূমি উর্বরাশক্তির তারতম্য: সকল ভূমি একই গুণ সম্পন্ন নয়। অর্থাৎ সকল ভূমির উর্বরতা শক্তি এক নয়। অর্থাৎ এক জায়গার জমিতে যে ফসল উৎপন্ন হয় অন্য জায়গায় জমিতে তা নাও উৎপাদিত হতে পারে। অর্থাৎ কোনো জমি উর্বরতার দিক থেকে অন্যটির চেয়ে উন্নত হতে পারে।

৬। ভূমিতে হ্রাসমান উৎপাদন বিধি কার্যকর: কোনো জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যে বেশি পরিমাণ শ্রম ও মূলধন নিয়োগ করলেও উৎপাদন এক সময় কমে যায়। এটাই হচ্ছে ক্রমহ্রাসমান উৎপাদন বিধি।

খ) শ্রম এর ধারণা ও বৈশিষ্ট্য 

সাধারণ অর্থে শ্রম বলতে মানুষের কায়িক পারিশ্রমকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে শ্রম শব্দটি বিশেষ ও ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। উৎপাদন কাজে নিয়োজিত সকল প্রকার শারীরিক ও মানসিক কাজ ও সেবাকর্ম এবং যার বিনিময়ে পরিশ্রমিক পাওয়া যায় তাকেই শ্রম বলা হয়।

একজন কৃষক, শিল্প শ্রমিক, বা রিকসা চালকের শারীরিক পরিশ্রম যেমন শ্রম, তেমনি একজন শিক্ষকের শিক্ষাদান বা ডাক্তারের পরামর্শ তেমনি তার বুদ্ধিজাত শ্রম। [সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com] বস্তুত : মানুষ পরিশ্রমের বিনিময়ে যা কিছু অর্জন করে তাকেই শ্রম বলে। অবশ্য মানুষের সব কাজই শ্রম রূপে গণ্য নয়। কোনরূপ অর্থ উপার্জন ছাড়া কেবল আনন্দ লাভের জন্য যে পরিশ্রম করা হয় তা শ্রম নয়। তাই সন্তান প্রতিপালনের জন্য মাতা-পিতার পরিশ্রম বা কষ্টকে শ্রম বলা হয়না।

শ্রমের বৈশিষ্ট্য:

শ্রম উৎপাদনের একটি আদি ও মৌলিক উপাদান। উৎপাদনের উপাদান হিসেবে শ্রমের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য আছে। নিচে এগুলো আলোচনা করা হল :

১. শ্রম একটি জীবন্ত উপাদান: শ্রমের প্রধান বৈশিষ্ট্য এই যে, এটি ভূমি ও মূলধনের মতো প্রাণহীন একটি জড় পদার্থ নয়। শ্রম শ্রমিকের দৈহিক ও মানসিক শক্তি একটি জীবন্ত উপাদান। পারিশ্রমিকের জন্য শ্রমিক পরিশ্রম দিলেও তার অনুভূতি সত্তা থাকে। শ্রমিকের জীবদ্দশায় তার শ্রম জীবন্ত ও কর্মক্ষম থাকে।

২. শ্রম ও শ্রমিক অবিচ্ছেদ্য: শ্রমের অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হল যে শ্রমিক ও শ্রম অবিচ্ছেদ্য। ভূমি ও ভূমির মালিক, মূলধন ও মূলধনের মালিক এক নয়, এরা স্বতন্ত্র। কিন্তু শ্রমিক থেকে শ্রমকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না।

৩. শ্রম গতিশীল: শ্রমের আর একটি বৈশিষ্ট্য হল যে এটি অন্যান্য উৎপাদনের তুলনায় গতিশীল। ভূমির কোন ভৌগোলিক গতিশীলতা নেই, মূলধনের গতিশীলতাও কম। কিন্তু শ্রম অত্যন্ত গতিশীল। কারণ, বিশেষ করে বর্তমানকালে শ্রমিক একস্থান থেকে অন্যস্থানে, এক পেশা থেকে অন্য পেশায় চলে যেতে পারে।

৪. শ্রম ক্ষণস্থায়ী: শ্রমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল যে, এটি ক্ষণস্থায়ী এবং এর সঞ্চয় সম্ভব নয়। অন্যান্য উপাদান যেমন, ভ‚মি ও মূলধন কিছুকাল ব্যবহার না করলেও তা ধ্বংস হয়ে যায় না; কিন্তু শ্রম উৎপাদন কাজে ব্যবহার না করলে নষ্ট হয়ে যায়। কোন শ্রমিক একদিন বা এক ঘন্টা কাজ না করলে ঐ সময় নষ্ট হয়ে যায়, যা কোনদিন ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। 

৫. শ্রমিকের দর কষাকষির ক্ষমতা কম: উদ্বৃত্ত শ্রমিকের দেশে বিশেষ করে শ্রমের ক্ষণস্থায়ী চরিত্রের কারণে দর কষাকষিতে শ্রমিকদের অবস্থান সুবধিাজনক হয় না। বেশি দিন বেকার থাকার ঝুঁকি অনেকে নিতে চান না। এজন্য স্বল্প মজুরীতে অনেক শ্রমিক কাজ করেন। অবশ্য শ্রমিকগণ ট্রেড-ইউনিয়নের মাধ্যমে মালিক পক্ষের সাথে দর কষাকষি করতে পারে।

সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com

৬. উৎপাদন ক্ষেত্রে শ্রমিকের উপস্থিতি অপরিহার্য : জমিতে ফসল ফলাতে জমির মালিকের উপস্থিতি অপরিহার্য নয়। কিন্তু উৎপাদনের সময় শ্রমিকের উপস্থিতি অপরিহার্য। স্বশরীরে উপস্থিত থেকেই তাকে শ্রমের যোগান দিতে হয়। 

গ) মূলধনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্য 

অর্থনীতিতে মূলধন বলতে মানুষের শ্রমের দ্বারা উৎপাদিত সম্পদের সেই অংশকেই বোঝায় যা পুনরায় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়। মি বয়ার্কের মতে , “ মূলধন হল উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান।” অধ্যাপক জে এফ.সিল বলেন,“ মুলধন হল ভবিষ্যৎ সম্পদ উৎপাদনের জন্য অতীত শ্রমের সংগৃহীত উপাদন” । আধুনিক কালে মূলধনের আওতা ও পরিধি ব্যাপক হয়েছে। উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত মানুষের বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী আয়ের ঐ অংশ মূলধন বলে বিবেচিত হয় যা অধিক উৎপাদনের জন্য পুনরায় উৎপাদন কাজে নিযুক্ত হয়।

মূলধনের বৈশিষ্ট্য:

১) উৎপাদনের উৎপাদিত উপাদান: মানুষের শ্রম ও সম্পদের যুক্ত প্রচেষ্টায় মূলধনের সৃষ্টি যা মানুষ অধিক উৎপাদন কাজে নিয়োগ করে।

২) মূলধন উৎপাদনশীল: মূলধনের সাহায্যে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। মূলধন ছাড়া অধিক উৎপাদন অসম্ভব। অধিক উৎপাদনের জন্য অধিক মূলধনের প্রয়োজন হয়। মূলধন নিয়োগের উপর কোন দ্রব্যের উৎপাদনের পরিমাণ নির্ভর করে।

৩) নিস্ক্রিয় উপাদান: উৎপাদন ক্ষেত্রে মূলধন নিস্ক্রিয় উপাদন হিসেবে স্বীকৃত। শ্রমিকের সাহায্য ছাড়া মূলধন কোন কিছু উৎপাদন করতে পারে না । যেমন- যন্ত্রপাতি নিজে কিছু করতে পারে না। যদি এর সাথে শ্রমিক যুক্ত হয় তবেই উৎপাদন সম্ভব।

৪) গতিশীল: উৎপাদনের উপাদানগুলোর মধ্যে মূলধন সবচেয়ে গতিশীল। কারণ মূলধন বিভিন্ন খাতে ব্যবহারযোগ্য এবং তা দেশের অভ্যন্তরে কিংবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহজে হস্তান্তরযোগ্য।

৫) মূলধন সমজাতীয় নয়: সব মূলধন সমগুনসম্পন্ন নয়। মূলধন হল স্বতন্ত্র ক্রিয়াসম্পন্ন বিবিধ বস্তুর একটি জটিল সমষ্টি। এর প্রতিটি এককের উৎপাদনশীলতা তথা গুনগত মানের পার্থক্য রয়েছে।

৬) মূলধন অস্থায়ী: মূলধন ক্ষণস্থায়ী উপাদান। সময়ের সাথে সাথে মূলধনের পরিমাণে পরির্বতন আসতে পারে। সময়ের ব্যবধানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে মূলধনের পরিমাণ পরিবর্তন হয়।

৭) মূলধনের উৎপাদন ধরন: মূলধন প্রাকৃতিক সম্পদ নয়। মানুষ তার শ্রমের দ্বারা প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে মূলধন সৃষ্টি করে বলে তার জন্য খরচ করতে হয়। তাই মূলধনের উৎপাদন খরচ আছে। 

ঘ) সংগঠনের ধারণা ও বৈশিষ্ট্য 

সংগঠন হচ্ছে ব্যবস্থাপনার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ। একটি বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য কতিপয় ব্যক্তির মধ্যে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ সৃষ্টি, তাদের কার্যাবলি সনাক্ত করে এগুলোর শ্রেণীবদ্ধকরণ, প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য বন্টন, তত্ত্বাবধায়ন  পরিসর নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় উপকরণের সমন্বয়সাধনকে সংগঠন বলে। একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন স্তরের কর্মী পর্যন্ত প্রত্যেকের কাজ ও দায়িত্ব কি হবে, এদের ভেতরকার সম্পর্ক কতটুকু, দায়িত্ব ও ক্ষমতা থাকবে, কার কি পদ বা পদমর্যাদা হবে তা সবকিছুই নির্ধারণ করার জন্য ব্যবস্থাপনা সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ সংগঠন হচ্ছে

(১) প্রয়োজনীয় কাজ চিহ্নিতকরণ ও শ্রেণীবিভাগ করা,

(২) কাজকে উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ভাগে ভাগ করা,

(৩) প্রত্যেকটি ভাগকে একজন ব্যবস্থাপকের অধীনে তত্ত্বাবধায়ন করার মত কর্তৃত্ব সহযোগে অর্পন করা, ও

(৪) সংগঠন কাঠামোর মধ্যে সমান্তরাল ও খাড়াখাড়ি ভাবে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা।

Organizing শব্দটি  “Organizm” থেকে এসেছে। এর অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে কতগুলো পৃথক অংশকে এমনভাবে সমন্বিত করা যার কারণে প্রত্যেকটি অংশের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে কোন কিছুর সৃষ্টি হয়। সাধারণভাবে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করার একটি প্রণালীকে সংগঠন বলা হয়। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যাবলী চিহ্নিতকরণ, কার্যাবলী শ্রেণীবদ্ধকরণ উপকরণসমূহ একত্রীকরণ, শ্রেণীবদ্ধ প্রত্যেক কাজের বা বিভাগের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ ও প্রত্যেক বিভাগীয় ব্যক্তির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণের প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা সংগঠন বলে।

সংগঠনের বৈশিষ্ট্য:

যে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের এক বা একাধিক উদ্দেশ্য থাকে এবং সংগঠন উদ্দেশ্য সাধনের মাধ্যম। প্রত্যেকটি কর্মকে বিভিন্ন বিভাগ এবং উপবিভাগে বিভক্ত করার পর প্রত্যেক উপবিভাগের কর্মীদের মধ্যে কাজের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। কর্মীদের কাজের দায়িত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়ােজনীয় ক্ষমতা দেওয়া প্রয়ােজন—যার অভাবে কর্মসম্পাদন অসম্ভব। একজন কর্মী কেবলমাত্র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মীর থেকেই কাজের দায়িত্ব পান ; একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মীর কাছ থেকে নয়। বিভিন্ন কাজের মধ্যে একটি ভারসাম্য অবস্থা সৃষ্টি করে সংগঠন কাজের প্রবাহকে গতিময় ও মসৃণ করে তােলে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে কোনাে প্রতিষ্ঠানের বাহ্যিক পরিবর্তন যাতে খাপ খাওয়াতে পারে, তার জন্য সংগঠনে প্রয়ােজনীয় আভ্যন্তরীণ পরিবর্তন প্রয়ােজন। অর্থাৎ সংগঠন কোনাে অপরিবর্তিত ব্যবস্থা নয়, এটিও পরিবর্তনশীল। সংগঠনের সরলতা অবশ্যই কাম্য। একটি সরল সংগঠন থেকে কর্মীরা সহজেই তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কে জ্ঞাত হতে পারেন। প্রতিষ্ঠানের কাঠামাে থেকে নিয়ন্ত্রণের পরিধি জানা যায়। প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণের পরিধি জানানাে সংগঠনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সংগঠন প্রতিষ্ঠানের ভৌত, আর্থিক, কর্মী ইত্যাদি সম্পদগুলির সর্বোত্তম ব্যবহারের উদ্দেশ্যে। তাদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তােলে। ব্যয়ের হ্রাস সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন সম্পদের উত্তম ও উপযুক্ত ব্যবহার, কাজের প্রবাহকে গতিশীল করা, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে অপচয় রােধ করা, ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে প্রতিষ্ঠানের ব্যয় হ্রাস করা একমাত্র সংগঠনের পক্ষেই সম্ভব।

ঙ) উপকরণ ও উৎপাদনের সম্পর্ক 

কোন কিছুর উৎপাদন উপকরণের উপর নির্ভর করে। আবার উৎপাদনের পরিমাণ উপকরনের পরিমাণের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং আমরা বলতে পারি, কোন দ্রব্য উৎপাদন করতে গেলে যে সব বস্তুু বা সেবা কার্যের প্রয়োজন হয় তাদেরকেই যৌথভাবে উৎপাদনের উপকরণ বলা হয়।

উৎপাদনের উপকরণ সাধারণত: চার ভাগে ভাগ করা যায়।

(১) ভূমি

(২) শ্রম

(৩) মূলধন, এবং

(৪) সংগঠন বা উদ্যোক্তা । 

১। ভূমি 

সাধারণ অর্থে ভূমি বলতে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগকেই বুঝায়। কিন্তুু অর্থনীতিতে ভূমি  বলতে শুধুমাত্র ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগকেই বুঝায় না বরং প্রাকৃতিক সব সম্পদকেই বুঝায়। অর্থাৎ অর্থনীতিতে ভূমি বলতে ভূপৃষ্ঠ, সূর্যকিরণ, বৃষ্টিপাত, বাতাস, নদনদী, সমুদ্র ও বনজ সম্পদ ইত্যাদি প্রকৃতির সকল অবাধ দান যা উৎপাদনের কাজে লাগে তাকে বুঝায়। ভূমির কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলোঃ

(ক) ভূমি প্রকৃতির দান

(খ) ভূমির যোগান দাম নেই

(গ) ভূমি অবিনশ্বর

(ঘ) ভূমি স্থানান্তর যোগ্য নয়, তবে মালিকানা হস্তান্তর যোগ্য

(ঙ) অবস্থাগত কারণে ভূমির মূল্যের পার্থক্য হয়

(চ) ভূমির যোগান সীমাবদ্ধ।

২। শ্রম 

শ্রম বলতে সাধারণত মানুষের শারিরীক শ্রমকেই বুঝায়। কিন্তুু অর্থনীতিতে শ্রম বলতে উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত মানুষের দৈহিক ও মানসিক সব শ্রমকেই শ্রম বুঝানো হয়। প্রকৃতপক্ষে শ্রম ছাড়া কোন উৎপাদনই সম্ভবপর নয়। শ্রম হলো উৎপাদনের অপরিহার্য্য উপাদান। শ্রমের কতকগুলো বৈশিষ্ট্য হলো-

(ক) শ্রম সংরক্ষণ যোগ্য নয় (খ) শ্রমিক থেকে শ্রম আলাদা করা যায় না (গ) শ্রম সংরক্ষণ করা যায় না বিধায় শ্রমিকেরদর কষাকষির ক্ষমতা কম।

(৩) মূলধন 

মূলধন হলো উৎপাদনের তৃতীয় উপকরণ। সাধারণত মূলধন বলতে টাকা পয়সা যা ব্যবসা কার্যে নিয়োজিত হয় তাকেই বুঝায়। কিন্তুু অর্থনীতিতে মূলধন বলতে, মানুষের শ্রম দ্বারা উৎপাদিত হয়ে যেসব দ্রব্য পূনরায় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে বুঝায়। যেমন- যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, কলকারখানা প্রভৃতি মানুষের উৎপাদিত দ্রব্য যা পূনরায় উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়। 

৪। সংগঠন বা উদ্যোক্তা 

উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সংগঠন। অর্থনীতিতে সংগঠন বলতে উৎপাদনের অপরাপর তিনটি মূল উপকরণ যথা ভূমি শ্রম ও মূলধনের আনুপাতিক সংগ্রহ, সংযোজন ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করার যে সুনিপুণ প্রচেষ্টা তাকে বুঝায়। 

তাই বলা যায় উৎপাদন ও উপকরণ পরস্পর ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত। 

Get HSC Production Management and Marketing Assignment Answer

[Join]

https://youtu.be/ZuCc_7kxj_Q