0

দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ। এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২২ সমাধান।

দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ।

বিষয়: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, বিষয় কোড: ২৭৭, পত্র: প্রথম, স্তর: এইচএসসি, অ্যাসাইনমেন্ট নাম্বার: প্রথম, প্রথম অধ্যায়: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা।

অ্যাসাইনমেন্ট: দেশের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান বিশ্লেষণ।

বিষয়বস্তু

  • ব্যবসার ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে
  • শিল্পের বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে
  • বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে
  • প্রত্যক্ষ সেবার বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে
  • অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসা এর অবদান বিশ্লেষণ করতে

নির্দেশনা

  • ব্যবসার ধারণা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করতে হবে
  • পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত ব্যবসায়ের আওতা ও কার্যাবলী ব্যাখ্যা করতে হবে
  • ব্যবসায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে সেটি কিভাবে অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদান রাখে তা ব্যাখ্যা করতে হবে।

এইচএসসি ২০২২ ষষ্ঠ সপ্তাহের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা নমুনা উত্তর

দেশের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শিল্প, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ সেবার অবদান

NewResultBD.Com

ক) ব্যবসার ধারণা

সাধারণভাবে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে ব্যবসায় বলে। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে মানুষ যে সব বৈধ অর্থনৈতিক কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে তাকে ব্যবসায় বলে। পরিবারের সদস্যদের জন্য খাদ্য উৎপাদন করা হাঁস মুরগী পালন করা সবজি চাষ করাকে ব্যবসায় বলা যায় না। কিন্তু যখন কোন কৃষক মুনাফার আশায় ধান চাষ করে বা সবজি ফলায় তা ব্যবসায় বলে গণ্য হবে। তবে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যবসায় বলে গণ্য হবে যদি সেগুলো দেশের আইনে বৈধ ও সঠিক উপায়ে পরিচালিত হয়। সুতরাং যে কাজটিকে আমরা ব্যবসায় বলবো তা চারটি মৌলিক উপাদান আছে। যেমন – 

ক.অর্থনৈতিক কাজ, 

খ. মুনাফার উদ্দেশ্য, 

গ. ঝুঁকি,

ঘ. বৈধতা।

এই ৪টি উপাদান না থাকলে কোন কাজকে ব্যবসায় বলা যাবে না। ব্যবসায়ের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা একে অন্য সব পেশা থেকে আলাদা করেছে। ব্যবসায়ের সাথে জড়িত পণ্য বা সেবার অবশ্যই আর্থিক মুল্য থাকতে হবে। ব্যবসায়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এর সাথে ঝুঁকির সম্পর্ক। মূলত মুনাফা অর্জনের আশাতেই ব্যবসায়ী অর্থ বিনিয়োগ করে। ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি অবশ্যই সেবার মনোভাব থাকতে হবে।

খ) ব্যবসায়ের আওতা

মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্যদ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপাদন, বণ্টন ও এর সহায়ক যাবতীয় কাজের সমষ্টিকে ব্যবসায় বলে। এ উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ শিল্পের মাধ্যমে এবং বণ্টন সংক্রান্ত কাজ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। বণ্টনের ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় বা পণ্য বিনিময় মুখ্য কাজ হিসেবে গণ্য হয়। অন্যান্য কাজ পণ্য বিনিময়ে সহায়ক কার্যাবলি হিসাবে বিবেচিত হয়। তাই ব্যবসায়কে নিম্নোক্ত সমীকরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করা যেতে পারে।

যখন,

B= Business/ব্যবসায়

I= Industry/শিল্প

T= Trade/পণ্য বিনিময় (ক্রয়-বিক্রয়)

AT= Auxiliaries to Trade /বিনিময় সহায়ক কার্য।

ব্যবসায়কে শিল্প এবং বাণিজ্যের সমষ্টি গণ্য করা হলেও সমাজে প্রত্যক্ষ সেবা, ক্রয় বিক্রয় বর্তমানকালে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি অর্থনৈতিক কার্য হিসেবে বিবেচিত। তাই ব্যবসায়ের আওতা বা পরিধি নিম্নে রেখাচিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করা হল।


১। শিল্পঃ যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং একে উপযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্য প্রস্তুত করা হয় তাকে শিল্প বলে। শিল্প উৎপাদনের বাহন। উৎপাদনের প্রক্রিয়া ও কর্মপ্রচেষ্টার ভিন্নতার কারণে শিল্পকে প্রধানত নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা যায়।

প্রজনন শিল্পঃ যে শিল্পে উৎপাদিত সামগ্রী পুনরায় সৃষ্টি বা উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে প্রজনন শিল্প বলে। যেমনঃ নার্সারী, হ্যাচারী, হাঁস-মুরগীর খামার প্রভৃতি।

নিস্কাশন শিল্পঃ যে শিল্প প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভূগর্ভের পানি বা বায়ু হতে সম্পদ উত্তোলন বা আহরণ করা হয় তাকে নিস্কাশন শিল্প বলে। খনিজ পদার্থ উত্তোলন, মৎস্য শিকার এ ধরনের শিল্পের উদাহরণ।

নির্মাণ শিল্পঃ যে শিল্পের মাধ্যমে রাস্তাঘাট, সেতু, বাঁধ, দালান কোঠা ইত্যাদি নির্মাণ করা হয় তাকে নির্মাণ শিল্প বলে।

উৎপাদন শিল্পঃ শ্রম ও যন্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কাঁচামাল জিনিসকে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্যে প্রস্তুত করার প্রচেষ্টাকে উৎপাদন শিল্প বলে। যেমন বয়ন শিল্প, ইস্পাত শিল্প প্রভৃতি।

সেবা পরিবেশক শিল্পঃ যে শিল্প মানুষের জীবনযাত্রা সহজ ও আরামদায়ক করার কাজে নিয়োজিত থাকে তাকে সেবা পরিবেশক শিল্প বলে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান এরূপ শিল্পের আওতাভুক্ত।

২। বাণিজ্যঃ শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারী বা ব্যবহারকারীর নিকট পৌঁছানের ক্ষেত্রে যে সকল প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য তা দূরীকরণের জন্য গৃহীত যাবতীয় কাজের সমষ্টিকে বাণিজ্য বলে। 

বাণিজ্যের আওতাভুক্ত বিষয়সমূহ নিম্নরূপঃ

ক) ট্রেড বা পণ্য বিনিময়ঃ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পণ্য দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় কার্যকে ট্রেড বা পণ্য বিনিময় বলে। এরূপ বিনিময় বা ক্রয়-বিক্রয় বণ্টনের ক্ষেত্রে মালিকানা হস্তান্তর কার্যকর সম্পন্ন করে ব্যক্তিগত বাধা দূর করে। পণ্য বিনিময়কে দুইভাগে ভাগ করা যায়ঃ-

অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যঃ একটি দেশের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে যে ক্রয়-বিক্রয় কার্য অনুষ্ঠিত হয় তাকে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বলে। এক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই একই দেশের অধিবাসী হয়। প্রকৃতি অনুযায়ী একে পাইকারী ও খুচরা এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

বৈদেশিক বাণিজ্যঃ দুই দেশের মধ্যে বা দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে ক্রয়-বিক্রয় কার্য সম্পাদিত হয় তাকে বৈদেশিক বাণিজ্য বলে। এরূপ বাণিজ্য তিন ধরনের যথা: আমদানি, রপ্তানী, পুন:রপ্তানী।

খ) পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলী: পণ্য বণ্টনের ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় কার্য সুষ্ঠভাবে সমাধানের বেলায় আইনগত, ঝুঁকিগত, স্থানগত, কালগত ও জ্ঞানগত বাধা দেখা দেয়। এসকল বাধা দূরীকরণের জন্য যথাসময়ে ব্যাংক, বীমা, পরিবহন, গুদামজাতকরণ, বাজারজাতকরণ প্রসার ইত্যাদি কার্যের সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে।

৩। প্রত্যক্ষ সেবাঃ অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে স্বাধীন পেশায় নিয়োজিত ডাক্তার, উকিল, প্রকৌশলী প্রভৃতি পেশাজীবিগণ প্রত্যক্ষভাবে সেবাকর্ম বিক্রয় করেন। এদের কাজকে সাধারণভাবে ব্যবসায়ের আওতাধীন মনে করা হলেও প্রকৃত অর্থে তা পেশা বা বৃত্তি হিসাবে গণ্য হয়। তবে কয়েকজন ডাক্তার মিলে ক্লিনিক ব্যবসায় বা কয়েকজন উকিল মিলে একটি ফার্ম বা প্রকৌশলীরা মিলে ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম গঠন করতে পারেন; যা প্রত্যক্ষ সেবা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে সঙ্গত কারণেই ব্যবসায়ের আওতায় আসে।

মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে উৎপাদন, বণ্টন ও এর সহায়ক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সকল কাজই এর আওতাধীন। [সকল এসাইনমেন্ট সমাধান সবচেয়ে দ্রুত পেতে ভিজিট করুন newresultbd.com] ব্যবসায়ের কার্যকলাপকে বাদ দিয়ে তাই বর্তমানকালে মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে চিন্তাই করা যায় না।

গ) ব্যবসায়ের কার্যাবলী

প্রধানত মুনাফা অর্জনকে সামনে রেখে ব্যবসায়ের সকল কার্যাবলি পরিচালিত হয়। নিম্নে ব্যবসায়ের কার্যাবলি আলোচনা করা হল।

উৎপাদনঃ উৎপাদন ব্যবসায়ের প্রধান কাজ। বিক্রয়ের জন্য পণ্য বা সেবা সামগ্রী তৈরি করাকে উৎপাদন বলে। উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হয় মুলধন, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, শ্রমিক ও সংগঠকের।

ক্রয়ঃ ক্রয় ব্যবসায়ের অন্যতম কাজ। উৎপাদনের কাঁচামাল ছাড়াও নিজস্ব ব্যবহার বা পুনঃ বিক্রয়ের জন্য পণ্য দ্রব্য বা সেবা সামগ্রী ক্রয় করতে হয়। পণ্য-দ্রব্য বা সেবা সামগ্রী ক্রয়ের মাধ্যমে পণ্যের মালিকানা সৃষ্টি হয়।

বিক্রয়ঃ ব্যবসায়ের একটি আবশ্যকীয় কাজ হচ্ছে পণ্যের ক্রেতা ও বিক্রেতাকে একত্রিত করা। বিক্রয়ের মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তর হয়। পণ্য বা সেবা নির্ধারণ, ক্রেতা অনুসন্ধান, মূল্য নির্ধারণ বিক্রয়ের সাথে জড়িত।

অর্থসংস্থানঃ সাধারণ অর্থে ব্যবসায়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করাকে অর্থ সংস্থান বলে। কিন্তু ব্যাপক অর্থে ব্যবসায়ের আর্থিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য অর্থ সংগ্রহ, অর্থ সংরক্ষণ, সংগৃহীত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার সংক্রান্ত সকল কার্যাবলীকে ব্যবসায় অর্থায়ন বলা হয়।

পরিবহনঃ পরিবহন পণ্য বা সেবার স্থানগত উপযোগ ও চাহিদা সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে পণ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌছানো হয়। এভাবে পণ্য উৎপাদনকারীর নিকট থেকে চূড়ান্ত ভোগকারীর নিকট পৌছে। পরিবহনের কারণে চীনের তৈরী বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স দ্রব্য সামগ্রী আমরা ব্যবহার করতে পারছি। আবার আমাদের দেশের চিংড়ি মাছ ও চা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ভোগ করতে পারছে। তাই পরিবহন ব্যবসায়ের স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করে থাকে।

প্রমিতকরণঃ প্রমিতকরণের মাধ্যমে পণ্যের গুণাগুণ, আকার, রং, স্বাদ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে পণ্য বিক্রয়ের জন্য স্থির করা হয়। ফলে ব্যবসায়ের প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং বিক্রয় কার্যে গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়।

পর্যায়িতকরণঃ মান অনুযায়ী পণ্যকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করাকে পর্যায়িতকরণ বলা হয়। সাধারণত ওজন, আকার ও গুণাগুণ অনুযায়ী পর্যায়িতকরণ করা হয়। ফলে বিক্রয় সহজ হয়।

মোড়কীকরণঃ ব্যবসায় পণ্য সামগ্রীকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করা এবং নষ্ট বা ভেঙ্গে যাওয়া থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে কিছু দ্বারা আবৃত করাকে মোড়কীকরণ বলা হয়। শিল্পজাত পণ্য, যেমন- ফ্রিজ, টেলিভিশন, সাবান এবং কৃষিজাতপণ্য যেমন দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদির বিক্রয় ও ক্রেতাদের নিকট গ্রহণযোগ্যতা মোড়কীকরণের উপর নির্ভর করে।

ঘ) ব্যবসায়ের গুরুত্ব 

অর্থনৈতিক গুরুত্ব

১। সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারঃ দেশের সম্পদের কার্যকর ব্যবহারের ওপর জাতীয় উন্নয়ন নির্ভরশীল। সকল দেশেই ব্যবসায় দেশের সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। গাছ, বাঁশ ইত্যাদি থেকে মন্ড তৈরী করা হয় এবং যা দিয়ে প্রস্তুত হয় কাগজ। তাই কাগজ লিখে একজন শিক্ষার্থী তা ফেলে দেয় বা ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রয় করে। এই অব্যবহৃত কাগজ প্যাকেজিং শিল্পে কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে তা থেকে নতুন পণ্য উৎপাদিত হয়। এভাবে নানান অমূল্যবান জিনিসকেও ব্যবসায়ীরা মূল্যবান সম্পদে পরিণত করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

২। মুলধন গঠনঃ ব্যবসায় হতে সঞ্চিত অর্থ একত্রিত করে এবং অন্যান্য উৎস হতে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসায় মূলধন গঠন করে এবং কার্যক্রম পরিচালনা করে। অর্জিত মুনাফার একটি বড় অংশ মূলধন গঠন ও বিনিয়োগে ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ বৃদ্ধি করে।

৩। মাথাপিছু ও জাতীয় আয় বৃদ্ধিঃ অর্থ উপার্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবসায় মাথাপিছু এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধি করে। ব্যবসায়ের উন্নতির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয়।

৪। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারঃ ব্যবসায়ের প্রয়োজনে ও সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রচেষ্টা ও গবেষণার মধ্য দিয়ে প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটে। এই উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন ও পণ্যের মানোন্নয়ন সম্ভব হয়। পণ্যের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পায় ও ব্যবসায়ের প্রতিযোগিতার সামর্থ্য বাড়ে।

৫। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিঃ দেশের ব্যবসায় তথা শিল্প বাণিজ্যের প্রসারের ফলে সরকার বিভিন্ন খাত হতে প্রচুর রাজস্ব আদায় করতে পারে। এতে সরকারের অর্থনৈতিক সামর্থ্য বৃদ্ধি পায় এবং জনগণ তার সুফল ভোগ করে।

৬। যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নঃ আজ পর্যন্ত দেশে- বিদেশে যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে তার অধিকাংশই ব্যবসায়কে কেন্দ্র করে। তাছাড়া ব্যবসায় ক্রমাগত এ ব্যবস্থা উন্নয়নের সাথে জড়িত। 

সামাজিক গুরুত্ব 

১। পণ্য ও সেবা সরবরাহঃ সমাজে বসবাসরত মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য ও সেবা সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। মানুষের অভাববোধ সৃষ্টি এবং তা পূরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা সরবরাহের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করে।

২। নায্যমূলো মানসম্মত পণ্য সরবরাহঃ অভাব মোচনের জন্য ব্যবসায়ী যথাসম্ভব নায্যমূল্য মানসম্মত পণ্যদ্রব্য ও সেবা সরবরাহ নিশ্চিত করে। সমাজে বসবাসরত মানুষকে নায্যমূল্যে মানসম্মত পণ্য ও সেবা সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সর্বোচ্চ কল্যাণ সাধন করে

৩। বেকার সমস্যার সমাধানঃ ব্যবসায় তথা শিল্প বাণিজ্যের অগ্রগতির ফলে দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটে। এতে দেশে বেকার সমস্যার সমাধান হয়। বাংলাদেশে যে মারাত্মক বেকার সমস্যা বিদ্যমান তা সমাধানে ব্যবসায়ের

উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই।

৪। জীবনযাত্রার মানোন্নয়নঃ ব্যবসায় ব্যক্তি বা জাতীয় আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটায়। মানসম্মত পণ্যদ্রব্য ও সেবা উদ্ভাবন এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের আয় ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।

৫। শিল্প সংস্কৃতির বিকাশঃ ব্যবসায়ের সহযোগিতায় শিল্প ও সংস্কৃতি উন্নতি লাভ করতে পারে। কেননা এসব ক্ষেত্রে উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও আর্থিক সহায়তা ব্যবসায় হতেই আসে।

৬। সম্পর্কের উন্নয়নঃ ব্যবসায় বাণিজ্যের ফলে দেশের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। কেনা বেচার মধ্যে দিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতা এর মধ্যে একটা সুসম্পর্কের আবহ সৃষ্টি হয়। গ্রামের একটা চায়ের দোকান যেন মানুষের একটা মিলন কেন্দ্র। শহরের ভালো বইয়ের দোকানে সন্ধ্যায় শিক্ষকদের আগমণে একটা আড্ডার পরিবেশ জন্ম নেয়। এভাবে ব্যবসায় মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে সমাজকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। 

ঙ) অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ব্যবসা এর অবদান

পরিবহন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবসা এর অবদান

পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। উৎপাদিত পণ্য দ্রব্য ও সেবাকর্ম জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার । তাই দেখা যায় ব্যবসায় সম্প্রসারণ এর সাথে সাথে দেশের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হয়। ব্যবসার কারণে আজ মুহূর্তের মধ্যেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মানুষের সাথে যোগাযোগ করা যায়। ঘরে বসে পণ্য অর্ডার করলে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে তা আমাদের দরজায় এসে পৌঁছায়। পরিবহনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী উৎপাদন কেন্দ্র হাতে ভোগকারী ও বিক্রেতার নিকট পৌঁছায়।

সেবার ক্ষেত্রে ব্যবসা এর অবদান

শিল্প-বাণিজ্যর উন্নয়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি বৃদ্ধি পায়। ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক সেবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ঘটে ব্যবসায়ের সম্প্রসারণের ফলে ব্যবসায় সহায়ক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্যবসায় এর মাধ্যমে সেবা প্রদানের সুযোগ আছে। সেবা কেন্দ্র করে অনেক ব্যবসা এর উৎপত্তি ঘটেছে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যাংকিং,চিকিৎসা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বন্টনমূলক ব্যবসায়, সরবরাহকারী ব্যবসায় সেবা প্রদান কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাপী বৃত্তিমূলক ও কারিগরি পেশার সুযোগ বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এসব পেশায় আকৃষ্ট হচ্ছে।

Get HSC Management Assignment Answer

[Join]