তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ সাদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা। এইচএসসি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ষষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।
বিষয়: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিষয় কোড: ২৭৫, স্তর: এইচএসসি, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: প্রথম, প্রথম অধ্যায়: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত।
অ্যাসাইনমেন্ট: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ সাদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা।
বিষয়বস্তু
- প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব মূল্যায়ন করতে পারবে
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করতে পারবে
নির্দেশনা
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা এবং বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ও প্রভাব
- বায়োমেট্রিক্স এর ধারণা, প্রকারভেদ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ
- রোবটিক্স এর ধারণা এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ
এইচএসসি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ষষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটি মোট ১৬ নম্বরের। এই এসাইনমেন্ট সমাধানের মাধ্যমে ১৩-১৬ (অতি উত্তম) নাম্বার পেতে হলে চারটি নির্দেশনা মেনে তিনটি উপ-শিরোনামে সঠিক তথ্য দিতে হবে এবং উপস্থাপনা নিজের মত সৃজনশীলতার মাধ্যমে করতে হবে। তাহলে আশা করা যায় একজন ছাত্র অতি উত্তম নম্বর পাবে। এইচএসসি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ষষ্ঠ অধ্যায়ের অ্যাসাইনমেন্ট উক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। নিচে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও মানব সাদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবহৃত প্রযুক্তি সহায়ক ব্যাখ্যা করা হলো।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ সাদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা এবং বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ও প্রভাব
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality) ধারণা:
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে কৃত্রিম বাস্তবতা, অর্থগতভাবে শব্দ দুটি যদিও স্ববিরোধী কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটি এমন এক ধরনের পরিবেশ তৈরি করে যেটি বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের মতো চেতনা সৃষ্টি করে এবং মস্তিষ্কে একটি বাস্তব অনুভূতি জাগায়। আমরা জানি, স্পর্শ, শোনা কিংবা দেখা থেকে মানুষের মস্তিষ্কে একটি অনুভূতির সৃষ্টি হয় যেটাকে আমরা বাস্তবতা বলে থাকি। কতকগুলো যন্ত্রের সাহায্যে যদি আমরা এই অনুভুতিগুলো সৃষ্টি করতে পারি তাহলে অবস্থাটি মানুষের কাছে পুরোপুরি বাস্তব মনে হতে পারে। এটি নানাভাবে করা সম্ভব। অনেক সময় বিশেষ ধরনের চশমা বা হেলমেট পরা হয়, যেখানে দুই চোখে দুটি ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে ত্রিমাত্রিক অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়। সৃষ্টি করা হয়। অনেক সময় একটি স্ক্রিনে ভিন্ন ভিন্ন প্রজেক্টর দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে সেই অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়। এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন করার জন্য মূলত কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে কোনো একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক ত্রি-মাত্রিক চিত্রায়ণ করা হয়। তাই বলা যায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরিকৃত এমন এক ধরনের কৃত্রিম পরিবেশ যা উপস্থাপন করা হলে ব্যবহারকারীদের কাছে এটিকে বাস্তব পরিবেশ মনে হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশ তৈরির জন্য শক্তিশালী কম্পিউটারে সংবেদনশীল গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে হয়। সাধারণ গ্রাফিক্স আর ভার্চুয়াল জগতের গ্রাফিক্সের মধ্যে তফাত হলো এখানে শব্দ এবং স্পর্শকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়। ব্যবহারকারীরা যা দেখে এবং স্পর্শ করে তা বাস্তবের কাছাকাছি বোঝানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি চশমা বা হেলমেট (HMD: Head Mountained Display) ছাড়াও অনেক সময় হ্যান্ড গ্লাভস, বুট, স্যুট ব্যবহার করা হয়। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারে গ্রাফিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে দূর থেকে পরিচালনা করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। একে টেলিপ্রেজেন্স বলা হয়। এছাড়াও এ পদ্ধতিতে বাস্তবভিত্তিক শব্দও সৃষ্টি করা হয়, যাতে মনে হয়, শব্দগুলো বিশেষ বিশেষ স্থান হতে উৎসারিত হচ্ছে।
প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব (Impact of Virtual Reality in everyday life)
বিনোদন ক্ষেত্রে: নানা ধরনের বিনোদনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাথে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ত্রিমাত্রিক পদ্ধতিতে নির্মিত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নির্ভর কল্পকাহিনি, পৌরাণিক কাহিনি, কার্টুন, ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ইত্যাদি মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। আজকালকার প্রায় প্রতিটি চলচ্চিত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার দেখা যায়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে নানা ধরনের কম্পিউটার গেম সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মিউজিয়াম বা ঐতিহাসিক যেসব জায়গায় ভ্রমণ করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পদ্ধতি ব্যবহার করে সেইসব জায়গায় ভ্রমণ করার অনুভুতি পাওয়া সম্ভব হয়। [সবচেয়ে আগে সকল এসাইনমেন্ট সমাধান পেতে newresultbd.com ভিজিট করুন] সাম্প্রতিক সময়ে অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Augmented Reality) নামে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির একটি নতুন রূপ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে, যেখানে বাস্তব জগতের সাথে ভার্চুয়াল জগতের এক ধরনের সংমিশ্রণ ঘটানো হয়।
যানবাহন চালানো ও প্রশিক্ষণে: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সবচেয়ে বাস্তবমুখী ব্যবহার হয়ে থাকে ফ্লাইট সিমুলেটরে যেখানে বৈমানিকরা বাস্তবে আসল বিমান উড্ডয়নের পূর্বেই বিমান পরিচালনার বাস্তব জগৎকে অনুধাবন করে থাকেন। এ ছাড়াও মোটরগাড়ি, জাহাজ ইত্যাদি চালানোর প্রশিক্ষণে সংশ্লিষ্ট সিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ-সংশ্লিষ্ট কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে বাস্তবের ন্যায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
শিক্ষা ও গবেষণায়: বাস্তবে কোনো কাজ করার আগে কম্পিউটারে কৃত্রিমভাবে প্রয়োগ করে দেখাকে সিমুলেশান বলা হয়। শিখন-শেখানো কার্যক্রমে জটিল বিষয়গুলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সিমুলেশন ও মডেলিং করে শিক্ষার্থীদের সামনে সহজবোধ্য ও চিত্তাকর্ষকভাবে উপস্থাপন করা যায়। গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন, জটিল অণুর আণবিক গঠন, ডিএনএ গঠন যা কোনো অবস্থাতেই বাস্তবে অবলোকন সম্ভব নয় সেগুলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশে সিমুলেশনের মাধ্যমে দেখা সম্ভব হচ্ছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে: চিকিৎসাবিজ্ঞানের সুবৃহৎ পরিসরে এর ব্যবহার ব্যাপক। জটিল অপারেশন, কৃত্রিম অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংযোজন, ডিএনএ পর্যালোচনা ইত্যাদিসহ নবীন শল্য চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও রোগ নির্ণয়ে ব্যাপক হারে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়।
সামরিক প্রশিক্ষণে: ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সত্যিকার যুদ্ধক্ষেত্রের আবহ তৈরি করে সৈনিকদেরকে উন্নত ও নিখুঁত প্রশিক্ষণ প্রদান করা যায়। সত্যিকারের যুদ্ধকালীন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সৈনিকেরা তাদের সঠিক করণীয় সম্পর্কে আগেই পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে।
ব্যবসা বাণিজ্যে: উৎপাদিত কিংবা প্রস্তাবিত পণ্যের গুণগত মান, গঠন, বিপণন, সম্ভাব্যতা যাচাই, মূল্যায়ন, বিপণন কর্মী প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সব ধরনের কার্যক্রমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সিমুলেশন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। কোনো বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর দ্রব্য বাজারজাত করার আগে কোনো কর্মচারীর জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশে সেগুলো পরীক্ষা করে নেওয়া সম্ভব হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অনেক বাস্তব ব্যবহার থাকার পরেও কমবয়সি বা শিশুদের বেলায় এর যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক যেভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরিবেশে প্রতিক্রিয়া করে সে তুলনায় একজন কমবয়সির প্রতিক্রিয়া অনেক তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী। শুধু তাই নয় এর যথেচ্ছ ব্যবহার তাদের শিখন ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বায়োমেট্রিক্সের ধারণা, প্রকারভেদ ও প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ
বায়োমেট্রিক (Biometric):
মানুষের দৈহিক গঠন বা আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তিকে বায়োমেট্রিক বলে। একজন মানুষের সাথে অন্য মানুষের আচরণ বা গাঠনিক বৈশিষ্ট্য কখনোই একরকম হবে না। বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতায় বায়োমেট্রিকের প্রকারভেদ দুইরকম :
(ক) শরীরবৃত্তীয় (Physiological) বায়োমেট্রিক পদ্ধতি
আঙুলের ছাপ শনাক্তকরণ (Finger print): এ পৃথিবীতে প্রকৃতিগতভাবে প্রতিটি মানুষের আঙুলের ছাপ ভিন্ন অর্থাৎ একজনের সাথে অন্য আরেকজনের আঙুলের ছাপের মিল নেই। একজনের টিপসই কখনোই অন্যজনের সাথে খাপ খাবে না। ফিংগার প্রিন্ট রিডারে কারো আঙুলের ছাপ দেয়ার পর ছাপটির ছবি কম্পিউটার ডেটাবেজে সংরক্ষিত হয়ে যায়। ফিংগার প্রিন্ট মেশিনটি আঙুলের রেখার বিন্যাস, ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নিচের রক্ত সঞ্চালনের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপচিত্র তৈরি করে।
হাতের রেখা শনাক্তকরণ (Hand geometry): এ পদ্ধতিতে হাতের আকার, পুরুত্ব, হাতের রেখার বিন্যাস ও আঙুলের দৈর্ঘ্য বিশ্লেষণ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তবে কায়িক পরিশ্রম করে এমন মানুষ, বিশেষ করে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি খুব বেশি কার্যকর নয়। তাছাড়া হাতে কিছু লেগে থাকলেও এ পদ্ধতির কার্যকারিতা সেভাবে পরিলক্ষিত হয় না।
আইরিশ শনাক্তকরণ (Irish scanning): এ পদ্ধতিতে চোখের মণির চারপাশে বেষ্টিত রঙিন বলয় বা আইরিশ বিশ্লেষণ করে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। শনাক্তকরণের জন্য সময়ও তুলনামূলকভাবে কম লাগে এবং সুক্ষ্মতাও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় হয়ে থাকে। তবে কন্টাক্ট লেন্স পরা থাকলে এ পদ্ধতি সবসময় কার্যকরী নাও হতে পারে।
মুখমণ্ডলের অবয়ব শনাক্তকরণ (Face recognition): এই পদ্ধতিতে পুরো মুখমণ্ডলের ছবি তুলে শনাক্ত করা হয়। আগে থেকে রক্ষিত স্যাম্পল মানের সাথে যার মুখমণ্ডলের আকৃতি তুলনা করা হবে তার ছবি ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করে সেটি তুলনা করা হয়।
ডিএনএ পর্যবেক্ষণ (DNA test): ডিএনএ (DNA Deoxyribo Nucleic Acid) টেস্টের মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তিকে অত্যন্ত নিখুঁত ও প্রশ্নাতীতভাবে শনাক্ত করা যায়। মানব শরীরের যে কোনো উপাদান যেমন— রক্ত, চুল, আঙুলের নখ, মুখের লালা হতে ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর এগুলোর গঠন প্রকৃতি শনাক্তের দ্বারা ম্যাপ বা ব্লু-প্রিন্ট বায়োলজিক্যাল ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীকালে নমুনা নিয়ে পূর্ববর্তী ডেটার সাথে মিলিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করা যায়।
(খ) আচরণগত (Behavioral) বায়োমেট্রিক পদ্ধতি
কিবোর্ডে টাইপিং গতি যাচাইকরণ (Typing keystroke verification): কিবোর্ড কিংবা এ জাতীয় কোনো ইনপুট ডিভাইসে তার গোপনীয় কোড কত দ্রুত টাইপ করে দিতে পারে তার সময় পূর্বের সময়ের সাথে মিলিয়ে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
হাতে করা স্বাক্ষর যাচাইকরণ (Signature verification): এটি একটি বহুল ব্যবহৃত ও দীর্ঘদিনের প্রচলিত পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে স্বাক্ষরের আকার ধরন, লেখার গতি, সময়, লেখার মাধ্যমের (যেমন— কলম, পেনসিল ইত্যাদি) চাপকে যাচাই করে শনাক্তকরণ করা হয়।
কন্ঠস্বর যাচাইকরণ (Voice recognition): এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বরকে মাইক্রোফোনের মাধ্যমে ধারণপূর্বক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রূপান্তর করে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীকালে ভয়েস রেকর্ডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বর রেকর্ড করা হয় এবং পূর্বের ধারণকৃত কন্ঠস্বরের সাথে তুলনা করে শনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ পদ্ধতিতে ব্যক্তির সর্দি, কাশি হলে শনাক্তকরণে বিঘ্নের সৃষ্টি হয়।
বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ
মৃতদেহ শনাক্তকরণ, অপরাধী শনাক্তকরণ, পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব শনাক্তকরণ, জাতীয় পরিচয়পত্র, বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার নিবন্ধন, এটিএম ও অনলাইন ব্যাংকিং, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ও উপস্থিতি নির্ণয়, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন লগইন, ই-কমার্স ও স্মার্ট কার্ড ইত্যাদিতে বায়োমেট্রিক প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে থাকে।
রোবটিকসের ধারণা এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রসমূহ
রোবটিক্স (Robotics)
রোবট শব্দটির সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত, এই শব্দটি দিয়ে আমরা এমন একধরনের যন্ত্রকে বোঝাই যেটি মানুষের কর্মকাণ্ডের অনুরূপ কর্মকাণ্ড করতে পারে। বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত যে বিষয়টি রোবটের ধারণা, নকশা, উৎপাদন কার্যক্রম কিংবা ব্যবহার বাস্তবায়ন করতে পারে তাকে রোবটিক্স বলা হয়ে থাকে।
রোবট কথাটি বলা হলে যদিও সাধারণভাবে আমরা মানুষের আকৃতির একটি যন্ত্র কল্পনা করি, কিন্তু প্রকৃত রোবট তার কাজের উপর নির্ভর করে যে কোনো আকারের বা আকৃতির হতে পারে। আজ থেকে এক যুগ আগেও রোবটের মূল ব্যবহার গাড়ির ওয়েল্ডিং কিংবা স্ক্রু লাগানোর মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে রোবটের কার্যপরিধিও বেড়ে যেতে শুরু করেছে এবং এমন কোনো কাজ নেই যেখানে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে না।
রোবটিক্সের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেলেও তার গঠনে তিনটি নির্দিষ্ট বিশেষত্ব রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:
১. একটি রোবট যে নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য তৈরি হয়, তার উপর নির্ভর করে একটি বিশেষ যান্ত্রিক গঠন হয়ে থাকে।
২. রোবটের যান্ত্রিক কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকতে হয়।
৩. রোবটকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
রোবট শিল্প এখনো তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও এটি সাগরের গভীর থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত সব জায়গায়, যেখানে মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়, সেখানে কাজ করে যাচ্ছে।
ব্যবহার (Application)
১. বিপজ্জনক কাজে: মানুষের পক্ষে যে সব কাজ অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন সমুদ্রের তলদেশে, যে কোনো অনুসন্ধানী কাজে, মাইন ইত্যাদি বিস্ফোরক দ্রব্য নিষ্ক্রিয়করণে, নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে, খনির অভ্যন্তরের কোনো কাজে, নদী-সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রমে রোবট ব্যবহৃত হয়।
২. শিল্প-কারখানায়: শিল্পোৎপাদন কাজে, শিল্প-কারখানার ভারী বস্তু নড়াচড়া করানো, প্যাকিং, সংযোজন, পরিবহন ইত্যাদি শ্রমসাধ্য কাজ ছাড়াও কম্পিউটার এইডেড কাজে রোবটিক্স-এর ব্যবহার রয়েছে।
৩. সুক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজে: মাইক্রোসার্কিটের উপাদান পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষণ কাজ এবং ইলেকট্রনিক আইসি, প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড ইত্যাদির তৈরির জন্য রোবট ব্যবহৃত হয়।
৪. চিকিৎসা ক্ষেত্রে: সার্জারি, জীবাণুমুক্তকরণ, ওষুধ বিতরণ ইত্যাদি কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়।
৫. সামরিক ক্ষেত্রে: বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্তকরণ, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ, যুদ্ধক্ষেত্রে এবং অন্যান্য মিলিটারি অপারেশনে রোবট ব্যবহৃত হয়।
৬. শিক্ষা ও বিনোদনে: শারীরিকভাবে অসুস্থ, পঙ্গু বা অটিস্টিক শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থায় রোবটের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। শিশুদের চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রে খেলনা রোবট এবং মিডিয়া আর্টের ক্ষেত্রেও রোবট ব্যবহৃত হয়।
৭. নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণে: বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য, অন্ধকারে কোনো আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করার জন্য, দুষ্কৃতকারী কিংবা বিপজ্জনক আসামীকে ধরার কাজে এবং পর্যবেক্ষণ ইত্যাদিতে পুলিশকে রোবট সহায়তা দিতে থাকে।
৮. মহাকাশ গবেষণায়: মহাকাশে কিংবা অন্য গ্রহ-উপগ্রহ সম্পর্কিত নানাবিধ তথ্যানুসন্ধান ও বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য বা মহাকাশ যান প্রেরণ করার সময় ব্যাপকহারে রোবটের ব্যবহার আছে।
৯. ঘরোয়া কাজে: দৈনন্দিন ঘরোয়া কাজে, গৃহকর্মী হিসেবে নিত্যনৈমিত্তিক কার্যাদি সম্পাদনের জন্য রোবট ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ভবিষ্যতে রোবটের সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরো ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করে রোবটকে অনেক নতুন নতুন কাজে ব্যবহার করা হবে।
[Join]