0

তুমি আত্মমর্যাদাবান ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে নিজেকে কীভাবে গড়ে তুলতে পারাে তার একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন কর। সপ্তম শ্রেণীর কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

তুমি আত্মমর্যাদাবান ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে নিজেকে কীভাবে গড়ে তুলতে পারাে

অ্যাসাইনমেন্ট: তুমি আত্মমর্যাদাবান ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে নিজেকে কীভাবে গড়ে তুলতে পারাে তার একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন কর।

নির্দেশনা:

তােমার পরিবার বা আত্মীয় স্বজনের মধ্যে এমন একজনকে বেছে নাও।

যিনি আত্মমর্যাদাবান হিসাবে সমাজে পরিচিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি বজায় রেখে সমাজে আত্মবিশ্বাসী হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলছেন সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ কর। ৭ম শ্রেণির প্রথম অধ্যায় পাঠ ১০-১৬ পাঠের সহায়তা নিবে।

সপ্তম শ্রেণির কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা দ্বাদশ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান

NewResultBD.Com

নিজের প্রতি বিশ্বাসকে আত্মবিশ্বাস বলা হয়। তবে তা অতি বিশ্বাস নয়। আমরা যেকোনো কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে চাইলে আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কাজের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে আত্মবিশ্বাসের উপর। তাই যে ব্যক্তি যত বেশি আত্মবিশ্বাসী সে ততই সফলতা অর্জন করতে পারে। আত্মবিশ্বাস ও কম আত্মবিশ্বাসী মানুষের মধ্যে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। নিম্নে কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হলো –

আত্মবিশ্বাসী মানুষ:

১) নিজে কোনো ভুল করলে তা স্বীকার করে এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। 

২) পরিবর্তনের কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় না; সম্ভব হলে অংশগ্রহণ করে। 

৩) সবসময় নিত্য নতুন ভালো কাজে অংশ নিতে প্রস্তুত থাকে এবং সুযোগ পেলেই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। 

৪) অন্যের কথা শুনেই প্রভাবিত হয় না। আগে তা বুঝে, ভেবে তারপর সিদ্ধান্ত নেয় বা কাজ করে। 

৫) ঝুঁকি নিতে ভয় পায় না, বরং ঝুঁকি থাকলে খুব সাবধানী হয়ে সামনে এগিয়ে যায়।

৬) যারা আত্মবিশ্বাসী তারা অন্যের কথা বা মতামতকে মূল্যায়ন করে; সবার সাথে বিনয়ী আচরণ করে। 

কম আত্মবিশ্বাসী মানুষ:

১) নিজের ভুল স্বীকার করতে ভয় পায়, সবসময় ভুলগুলোকে ঢেকে রাখতে চায়।

২) যে কোনো পরিবর্তনের কথা শুনেই ভয় পেয়ে যায়। 

৩) নতুন কিছু করতে ভয় পায়, কোনো কাজে অংশ নিতেও ভয় পায়। 

৪) অন্যরা যা বলে তা-ই বিশ্বাস করে। সত্য-মিথ্যা যাচাই করে না, ভেবে -চিন্তেও দেখে না।

৫) যেকোনো ঝুঁকি নিতে ভয় পায়, ঝুঁকির ভয়ে কাজ এড়িয়ে চলে। 

৬) যারা কম আত্মবিশ্বাসী তারা অন্যের কথা শুনতে চায় না। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় না। তারা আসলে অন্যের কথা বা মতামত শুনতে ভয় পায়। 

একজন মানুষকে আত্মমর্যাদাবান হতে হলে অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হয়। আমাদের সকলকেই দৈনন্দিন জীবনে আত্মমর্যাদাবান মানুষ হওয়া উচিত।

নিম্নে একজন আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো –

১) অন্যের জিনিস না বলে না নেওয়া। 

২) মিথ্যা কথা না বলা।

৩) সদা-সর্বদা অন্যদের সম্মান করা। 

৪) এমন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় কখনো অন্যের খাতা দেখে লিখে না কিংবা বই দেখেও লিখে না।

৫) কারো সাথে কখনো ঝগড়া বিবাদ না করা, মারামারি না করা। 

৬) অন্যায় পথে অর্থ উপার্জন না করা।

এভাবে আরো বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে একজন মানুষ আত্মমর্যাদা সম্পন্ন হয়ে উঠতে পারে। 

এমন একজন আত্মমর্যাদাবান ব্যক্তির বড় উদাহরণ হলো আমার ফুফাতো ভাই। তিনি সবসময় সত্য কথা বলতেন, পরীক্ষায় কারো কাছ থেকে দেখে লিখতেন না, কখনো কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করতেন না। তিনি ছোট বড় সকলকেই সম্মান করতেন আর কারো জিনিস তো না বলে ভুলেও নিতেন না। আজ তিনি পড়াশোনা শেষে অস্ট্রেলিয়ায় একটি চাকরি করেন এবং ছুটিতে এখানে বেড়াতে আসেন। তিনি কোন অসদুপায়ে অর্থ উপার্জন করেন না আবার চেষ্টাও করেন না। তিনি নিজের মর্যাদা সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকেন। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় তিনি আমার পরিবারের একজন আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি।

তিনি যেমন একজন আত্মমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি তেমনি আত্মবিশ্বাসীও। গত ছুটিতে তিনি এখানে বেড়াতে এলে আমি তাঁর কাছ থেকে জানতে পারি –

তিনি নাকি কখনো কারো কথায় প্রভাবিত হতেন না। বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতেন। প্রতিদিন কোনো না কোনো নতুন নতুন ভালো কাজ করার চেষ্টা করতেন। তিনি সবসময় অন্যের কথা ও মতামতকে মূল্যায়ন করতেন। ঝুঁকি নিতে ভয় পেতেন না। নিজের ভুল স্বীকার করতেন প্রাণ খুলে আর তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতেন। তিনি পরিবর্তিত অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারতেন খুব সহজেই। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।

আমি মনে করি তাঁর মতো আত্মমর্যাদাবান ও আত্মবিশ্বাসী হতে হলে আমাকেও কিছু সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ও নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। অতএব নিজেকে আত্মমর্যাদাবান ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমি নিম্নোক্ত নিয়ম সমূহ অনুসরণ করতে পারি:

১) সদা -সর্বদা সত্য বলা এবং প্রতিদিন অন্তত একটি করে ভালো কাজ করা।

২) সদা-সর্বদা অন্যদের সম্মান করা এবং অন্যের কথা ও মতামতকে মূল্যায়ন করা।

৩) অন্যের জিনিস না বলে না নেওয়া ও পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া। 

৪) পরীক্ষায় কোনো রূপ অসদুপায় অবলম্বন না করা এবং নিজের ভুল না ঢেকে তা স্বীকার করে নেওয়া। আর তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। 

৫) সবসময় নিজের কাজ নিজে করা এবং পড়ালেখার পাশাপাশি মা-বাবাকে সহায়তা করা।

৬) সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা করে সৎভাবে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।

এভাবে আমি একজন আত্মমর্যাদাবান ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবো।

Get Class 7 Work and Life Oriented Education Assignment Answer

[Join]