৯ম শ্রেণীর ব্যবসায় উদ্যোগ দ্বাদশ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর। সুমন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কক্সবাজার একটি আধুনিক হোটেল স্থাপন করেন। বাচ্চাদের খেলার জন্য হোটেলের সামনে একটি ছোট পার্ক স্থাপন করেন। এক বছর তার ব্যবসায় লাভের মুখ দেখেন নি। তিনি চিন্তিত না হয়ে টেলিভিশন, পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করেন এবং হোটেল ভাড়া 30% ছাড়ের ব্যবস্থা সহ সকালের নাস্তা ফ্রী করেন। ফলে পরবর্তীতে তার হোটেলে লোকসমাগম হতে থাকে এবং আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আয়ের 5% তিনি কর্মচারীদের মাঝে বন্টন করেন। তার ব্যবসায় উত্তরোত্তর সফলতা লাভ করেন।
উপরের কেস স্টাডি থেকে সুমনের সফল উদ্যোক্তা হবার পেছনে যে সকল গুণাবলী প্রভাব রেখেছে সেগুলো ব্যাখ্যা করো।
৯ম শ্রেণীর ব্যবসায় উদ্যোগ দ্বাদশ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর
NewResultBD.Com
পৃথিবীতে কেউই উদ্যোক্তার সফলতার হিসেবে জন্মগ্রহণ করে না। কিছু নির্দিষ্ট গুণাবলী নিজের মধ্যে ধারণ এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন। এছাড়াও নানা রকম নীতি অনুসরণ, আইন মানা একজন উদ্যোক্তাকে আদর্শ সফল করে তোলে।
একজন উদ্দ্যোক্তাকে সফল হতে হলে বেশ কিছু গুণাবলী অর্জন করতে হয়। নিম্নে কিছু গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করা হলো:-
১। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতা
২। আত্মবিশ্বাস
৩। স্বাধীনচেতা মনোভাব
৪। অধ্যবসায়
৫। উদ্ভাবনী শক্তি
৬। ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা
৭। প্রতি সংগ্রহের ক্ষমতা, ইত্যাদি।
একজন উদ্যোক্তার পুঁজি সংগ্রহের ক্ষমতা থাকা আবশ্যক কেননা পুঁজি ব্যতীত ব্যবসায় স্থাপন ও পরিকল্পনা অসম্ভব। অতঃপর তার মধ্যে ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে। তবে একজন উদ্যোক্তা ঝুঁকি গ্রহণে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণ ঝুঁকি গ্রহণ করবে। অতিরিক্ত ঝুঁকির গ্রহণে লোকসানের সম্ভাবনা বেশি থাকে। কোন সময় ব্যর্থতা চলে এলে তখন দৃঢ় অধ্যবসায়ের জোরে ধৈর্য ধারণ করা আদর্শ উদ্যোক্তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এমন সময় উদ্যোক্তা ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সামনে সফলতা অর্জন করতে সমর্থ হয়। অন্য একটি গুণ যা না থাকলে কোনো উদ্যোক্তাই সামনে আগাতে পারে না তা হল আত্মবিশ্বাস। নিজের উপর বিশ্বাস থাকতে হবে; আমি পারবো। একজন উদ্যোক্তার নিজের চিন্তা চেতনা সর্বদা মুক্ত রাখতে হবে। তাকে সর্বদা স্বাধীনচেতা মনোভাব পোষণ করা উচিত এতে তার মাথায় নানা উদ্ভাবনের চিন্তার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও আরো অসংখ্য গুণাবলীর মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হতে পারে।
প্রশ্নোক্ত কেস স্টাডি থেকে সুমনের সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে যে অসংখ্য গুণাবলী প্রভাব রেখেছে তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। নিম্নে প্রভাব বিস্তারকারী গুণাবলী ব্যাখ্যা করা হলো:
সুমন এর মধ্যে প্রকাশিত প্রথম গুণ হল পুঁজি সংগ্রহের ক্ষমতা। সে পুঁজি সংগ্রহ করেছে ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে। অতঃপর তার মধ্যে দেখা যায় উদ্ভাবনী শক্তির মত গুণ। কক্সবাজার যেহেতু একটি বিনোদন কেন্দ্র তাই সে একটি হোটেলে স্থাপন করে তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। আর সে মুক্ত চিন্তার অধিকারী হওয়া এসে হোটেলের সামনে বাচ্চাদের খেলার জন্য একটি পার্কও স্থাপন করে। তবে তার দুক্ষের বিষয় ছিল যে, সে এক বছরে লাভের মুখ দেখতে পায়নি। তবে আমরা তার মধ্যে দৃঢ় অধ্যবসায় এবং ব্যর্থতার শিক্ষা গ্রহণের মতন দেখতে পাই। সে চিন্তিত হয়নি বরং ধৈর্য ধরে তার ব্যর্থতার কারণ নির্ধারণ করেছিল। তার ব্যবসা এর সম্পর্কে অনেকেই জানেনা এবং সে অন্যদের তুলনায় নতুন হবার সত্বেও কোন বাড়তি সুবিধা প্রদান করেছিল না। তাই সে তার ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে টেলিভিশন, পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ব্যবসা সম্পর্কে প্রচার করে। পাশাপাশি হোটেল ভাড়ার ৩০% ছাড়ের ব্যবস্থাসহ সকালের নাস্তা ফ্রি করে দেন। এতে তার হোটেলে লোকের সংখ্যা এবং আয় দুটোই প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। সর্বশেষে আমরা তার মধ্যে সাংগঠনিক ক্ষমতার গুণটি দেখতে পাই। তার কর্মচারীরা যাতে আরো মনোযোগী হয় এবং নিজের প্রতিষ্ঠান ভেবে কাজ করে সেই জন্য সে আয় এর ৫% তাদের মধ্যে বন্টন করে দেয়। এতে তারা খুশি হয়ে আরও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে। আর সুমন ধীরে ধীরে সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠে।
সত্যিই সুমনের মত উদ্যোক্তাদের জীবনে এমন সব গুণাবলীর নিয়মিত চর্চা তাদের নিয়ে যেতে পারে উন্নতির চরম শিখরে। এসব কিন্তু ধীরে ধীরে অর্জন করতে হয়। আরজে উদ্যোক্তার মধ্যে এসব গুণাবলী দেখা দিবে, তিনি অবশ্যই একসময় না একসময় সফলতা অর্জন করতে পারবে।