0

মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে’- তাৎপর্য বিশ্লেষণ। এইচএসসি পৌরনীতি প্রথম পত্র চতুর্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে

স্তর: এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১, বিভাগ: মানবিক, বিষয়: পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র, বিষয় কোড: ২৬৯, মোট নম্বর: ২০, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০৩, তৃতীয় অধ্যায়: মূল্যবােধ, আইন, স্বাধীনতা ও সাম্য।

অ্যাসাইনমেন্ট: মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে’- তাৎপর্য বিশ্লেষণ।

শিখনফল/বিষয়বস্তু:

  • আইন ও নৈতিকতার সম্পর্ক বিশ্লেষন করতে পারবে;
  • স্বাধীনতা ও সাম্যের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে;
  • আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যের পারস্পরিক সম্পর্ক মূল্যায়ন করতে পারবে;
  • গণতান্ত্রিক মূল্যবােধ ব্যাখ্যা করতে পারবে;
  • সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মূল্যবােধের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে;

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

  • ক) মূল্যবােধ ও নৈতিকতার ধারণা;
  • খ) আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যের ধারণা;
  • গ) আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যের পারস্পরিক সম্পর্ক ও গুরুত্ব;

এইচএসসি পৌরনীতি চতুর্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান

মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে

মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে

মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে

মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে মূল্যবােধ ও নৈতিকতা আইন, স্বাধীনতা ও সাম্যকে প্রভাবিত করে

Get HSC Civics Assignment Answer

[Join]

মূল্যবোধ ও নৈতিকতা আইন,স্বাধীনতা ও সাম্য কে প্রভাবিত করে।

ক) মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সম্পর্কে বিশ্লেষণ

  • মূল্যবোধ

বিশ্বাসের ভিত্তির উপর গড়ে ওঠে মূল্যবোধের কাঠামো। মানুষ তার বিশ্বাসের ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করে। জীবনের প্রতিটি স্তরে বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে হবে মূল্যবোধকে প্রয়োগ করে। যেমন, একজন ব্যক্তি মানবিকতায় বিশ্বাসী। তিনি জীবজগতের প্রতি সব সময়ই সহানুভূতিশীল। এখানে তার বিশ্বাস তাকে এই মানবিক আচরণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, সে কারণে তিনি মানবিক আচরণকে গুরুত্ব দেন বা মূল্য দেন। এটাই তার মূল্যবোধ।

মূল্যবোধ ব্যক্তির শক্তি বা ক্ষমতা যার গুণে সে নিজের বৈশিষ্ট্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে এবং যা সে চায় তাই অন্যের মধ্যে বিকশিত করতে পারে। শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যবোধের বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিষয়বস্তু, শিক্ষকের গুণাবলি, শিখন পরিবেশ এসব উপাদান শিক্ষার্থীর বিশ্বাস গঠনে প্রভাব বিস্তার করে। বিদ্যালয়ে যে বিশ্বাস সে অর্জন করবে তার উপর তার মূল্যবোধ গড়ে উঠবে। যে ব্যক্তি ইতিবাচক বা কল্যানকর গুণাবলিকে মূল্য দেন তিনি শিক্ষক হওযার যোগ্য। কারণ তার মূল্যবোধ ও দর্শন দ্বারা তিনি শিক্ষার্থীদের প্রভাবান্বিত করতে পারেন। মূল্যবোধ জাতীয় দর্শন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালিত করার নীতিমালা বা সার্বিক উন্নয়নে সহায়ক শক্তি। আধুনিক ধারণা অনুযায়ী মূল্যবোধ হলো কতগুলো জৈব মানসিক সংগঠনের এমন এক সমন্বয় যা পরিবেশের বৃহৎ অংশকে সক্রিয়তার দিক থেকে সমগুণসস্পন্ন করে তোলে এবং ব্যক্তির মধ্যে উপযুক্ত আচরণ সৃষ্টি করে। এ সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় পরিবেশ ও পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের জৈব মানসিক প্রবণতা যা সাধারণধর্মী ও সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ সৃষ্টি করে তাকে মূল্যবোধ বলা হয়।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্থানান্তর করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মূল্যবোধের উদাহরণ নিচে দেয়া হল,

  • শিক্ষকদের সম্মান করা
  • সহপাঠীদের সাথে সহযোগিতা করা
  • পরীক্ষায় নকল না করা
  • সত্যকে জানা ও বাস্তব জীবনে তা অনুশীলন করা
  • সাস্থ্য ভালো রাখার নিয়মনীতি মেনে চলা
  • ঈর্ষা, রেষারেষি এবং বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ না করা ইত্যাদি।

 

  • নৈতিকতা

“নৈতিকতা” যার অর্থ হলো ভদ্রতা, চরিত্র, উত্তম আচরণ। এটি মূলত উদ্দেশ্য, সিদ্ধান্ত এবং কর্মের মধ্যকার ভালো-খারাপ,উচিত-অনুচিত এর পার্থক্যকারী।

নৈতিকতা হলো কোনো মানদন্ড বা নীতিমালা যা নির্দিষ্ট কোন আদর্শ, ধর্ম বা সংস্কৃতি থেকে আসতে পারে। আবার এটি সেসকল বিষয় হতেও আসতে পারে যেসকল বিষয়কে সমগ্র মানুষ কল্যাণকর হিসেবে আখ্যায়িত করে। নৈতিকতাকে “সঠিকতা” বা “ন্যায্যতা”-ও বলা যায়।

নৈতিকতার আদর্শে পরানীতিবিদ্যা অন্তর্ভুক্ত থাকে যেখানে নৈতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ, উক্তি, প্রবণতা এবং বিচারের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা-বিশ্লেষণ করা হয়। নৈতিকতার একটি আদর্শ উদাহরণ হলোঃ “আমাদের উচিত অন্যের সাথে সেভাবেই আচরণ করা যেমনটা আমরা নিজেরা অন্যের থেকে আশা করব।”

অপরদিকে, অনৈতিকতা হলো নৈতিকতারই সম্পূর্ণ বিপরীত। যা অসচেতনতা, অবিশ্বাস, উদাসীনতারই বহিঃপ্রকাশ।

খ) আইনের উৎস

আইন হল রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি। আদর্শ রাষ্ট্র সর্বদা আইনের শাসন নিশ্চিত করে। অর্থাৎ আইন অপরিহার্য। এই আইন একদিনে বা একটি উৎস থেকে সৃষ্টি হয় নি। মানব সভ্যতার আদিম যুগ থেকে আজ পর্যন্ত নানা সূত্র থেকে আইনের সৃষ্টি হয়েছে। তাই আইনের সৃষ্টির বিভিন্ন উৎস রয়েছে। আইনের সীকৃত উৎসগুলো নিম্নরূপ-

প্রথা: আইনের অন্যতম উৎস হল প্রথা। প্রাচীনকাল থেকে যেসব আচার ব্যবহার রীতি-নীতি ও অভ্যাস সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত, সমর্থিত ও পালিত হচ্ছে তাই প্রথা। সমাজে অনেক ধরনের প্রথাই প্রচলিত থাকে। তার মধ্যে যেসব প্রথা যুক্তিসিদ্ধ ও জনহিতকর তা আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আবার যেসব প্রথা সমাজ জনগণের জন্য অকল্যাণকর তা আইন কওে বন্ধ করা হয়। গ্রেট ব্রিটেনে অনেক প্রথা সাংবিধানিক আইন হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে যৌতুক প্রথা সমাজের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় তা আইন করে বন্ধ করা হয়েছে।

ধর্ম: সব ধর্মই মানুষের মঙ্গলের কথা বলে। ফলে ধর্মের বাণীকে সকলেই মেনে চলার চেষ্টা করে। সকল ধর্মের কিছু অনুশাসন রয়েছে, যা ঐ ধর্মের অনুসারীরা মেনে চলে। এসব অনুশাসন সমাজ জীবনকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে সহায়তা করে। এ রকম অনেক অনুশাসন পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ করে এবং আইনে পরিণত হয়। প্রাচীন গ্রীস ও রোমের অনেক আইনই ধর্মভিত্তিক। যেমন বিভিন্ন মুসলিম আইনের উৎস কোরআন।

আইন সভা: আইন সভার প্রধান কাজ আইন প্রণয়ন করা। আধুনিক রাষ্ট্র সাধারণত জন কল্যাণে নিয়োজিত থাকে। ফলে সময়ের প্রেক্ষিতে মানুষের নানাবিধ অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের গুরু দায়িত্ব। তাই আইন সভার সদস্যগণ জন কল্যাণে এবং নাগরিক অধিকার রক্ষার্থে নতুন নতুন অনেক বিষয়কে আইনে রুপান্তর করার জন্য তা বিল (আইনের খসড়া) আকারে আইনসভায় উত্থাপন করে থাকে। বিষয়টি যদি সংখ্যা গরিষ্ঠ মতামত প্রাপ্ত হয় তবে তা আইনে পরিণত হয়।

সংবিধান: এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। সাধারণত নির্বাচিত প্রতিনিধিগন সংসদে সংবিধান অনুমোদন করেন। সংবিধান রাষ্ট্রের মূল দলিল। রাষ্ট্র পরিচালনা ও নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য সংক্রান্ত নানা বিষয় সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ থাকে। এ নির্দেশনা প্রয়োগের সুবিধার্থে সংসদ সদস্যগণ- অন্যান্য আইন প্রণয়ন করে। অর্থাৎ সংবিধান আইনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

বিখ্যাত গ্রন্থ: রাষ্ট্র পরিচালনা বিষয়ে লিখিত বিভিন্ন বিখ্যাত গ্রন্থও আইনের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, আইনবিদদের দ্বারা লিখিত বই বেশি প্রাধান্য পায়। যেমন, এইচ, জে, লাস্কি “A Grammar of Politics” এবং অধ্যাপক ডাইসির ”Law of the Constitution” এর উল্লেখ করা যায়।

বিচারকের রায়: আইন তৈরি করা নেই, মানব জীবনের এমন কোন ঘটনা নিয়ে কোন নাগরিক যদি আদালতের দারস্থ হয় তবে বিচারক তার নিজস্ব প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দিয়ে রায় দিয়ে থাকে। এই রায়টি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হলে, রাষ্ট্র সেই রায়কে আইনে পরিণত করে। অর্থাৎ বিচারকের রায়ও আইনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

সুন্দর করে কথা বলা একটি আর্ট বা শিল্প। যারা এ কাজটি ভালোভাবে পারেন তারা সর্বত্রই সম্মান পান, সবাই তাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে, মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনে এবং মুগ্ধ হয়। মানুষের এই দক্ষতাকেই উপস্থাপনের দক্ষতা বলা হয়। উপস্থাপনের দক্ষতা অর্জনের জন্য নিম্নোক্ত কৌশলসমূহ অবলম্বন করা দরকার:

১) প্রশ্নের উত্তর বলা;

২) ছবি দেখে বিশ্লেষণ করা;

৩) ছবি দেখে গল্প তৈরি করা;

৪) ধারাবাহিক গল্প বলা;

৫) অন্যের কাছে শোনা এবং গল্প পুণঃ বলা;

৬) নিজের ভাষায় গল্প/ কবিতার মূল বক্তব্য বলা;

৭) কোন বিষয় নিয়ে নিজের মতো করে বলা;

৮) পরিচিত গল্প বা কাহিনী সুন্দরভাবে বলে যাওয়া;

৯) ছড়া/কবিতা আবৃত্তি করা।

১০) যতি চিহ্ন ব্যবহার করে এবং বিষয়বস্তুর ভাবকে অনুধাবন করে জানা এবং ছড়া, কবিতা বা গদ্যধর্মী কোনো পাঠ
সম্পর্কে বলা।

১১) জোড়ায় একে অন্যের উপস্থাপনা মূল্যায়ন করা।

১২) ধারা বর্ণনা করা

১৩) উপস্থিত বক্তৃতা দেওয়া

১৪) টেলিফোনে কথোপকথন করা

১৫) দলে কোনো পাঠ ধরে প্রশ্ন-উত্তর করা

১৬) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বারবার অনুশীলন করা।

বিচারকগণ সাধারণত দেশে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু কিছু অবশ্যম্ভাবী সীমাবদ্ধতার কারণে এই আইন সব সময় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পারে না। সেক্ষেত্রে বিচারকগণ তাদের বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে ন্যায় বিচার করে থাকেন। তাদের এই ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত পরবর্তীতে আইন হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

উপর্যুক্ত উৎস ছাড়াও আইনের আরো কয়েকটি উৎস রয়েছে। যেমন- বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা, প্রশাসনিক ঘোষণা, সংবিধান, ন্যায়বোধ, জনমত ইত্যাদি।

গ) স্বাধীনতার মূল বিষয়বস্তু

সাধারণ কথায় স্বাধীনতা হচ্ছে মানুষের ইচ্ছামত কোন কিছু করা বা না করার অবাধ অধিকার। এ অর্থে অধীনতামুক্ত অবস্থাকেই বলা যেতে পারে স্বাধীনতা। অর্থাৎ স্বাধীনতা বলতে বোঝায় সব ধরনের নিয়ন্ত্রণের অনুপস্থিতি।

প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা মানেই নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা। স্বাধীনতা বলতে নিয়ন্ত্রণ বা বিধি-নিষেধের অনুপস্থিতি বোঝায় না। সকলের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রত্যেকের কর্মকাÐের উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলে।

অধ্যাপক গেটেল (Gettel) -এর মতে, “স্বাধীনতা হচ্ছে সেসব কাজ করা এবং উপেভাগ করার সরাসরি ক্ষমতা যেগুলো করা ও উপভোগ করার মত।”

প্রাকৃতিক স্বাধীনতা: প্রাকৃতিক স্বাধীনতা হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা যার বলে ব্যক্তি তার ইচ্ছামত সবকিছু করতে পারে। চুক্তিবাদী দার্শনিকদের (হবস্, লক, রুশো) ধারণানুসারে মানুষ প্রকৃতির রাজ্যে প্রাকৃতিক অধিকার তথা স্বাধীনতা ভোগ করত। কিন্তু সমাজ তথা রাষ্ট্রে বসবাসকারী মানুষ এ ধরনের প্রাকৃতিক স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না;

নাগরিক স্বাধীনতা: নাগরিক স্বাধীনতা বলতে বোঝায় সে ধরনের স্বাধীনতা যা মানুষ রাষ্ট্র ও সমাজে বসবাস করতে গিয়ে ভোগ করে। এ অধিকার ভোগ অবারিত নয়; আইন দ্বারা তা সীমিত। আইনই নাগরিক স্বাধীনতার রক্ষক। এ স্বাধীনতা তাই আইনের শাসনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। গেটেল এ প্রসঙ্গে বলেন, “সুনির্দিষ্ট আইন, বাস্তবায়নে নিশ্চয়তা এবং আইনের সামনে সমতা মানুষের মাঝে পরস্পর নাগরিক স্বাধীনতাকে প্রসারিত করেছে।

ব্যক্তিগত স্বাধীনতা: ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অর্থ এই যে, ব্যক্তির সামনে এমন সুযোগ থাকতে হবে যাতে করে সে কোন প্রকার স্বেচ্ছাচারী এবং অবৈধ প্রতিরোধ ছাড়া নিজের খুশীমত কর্ম সম্পাদন করতে পারে। প্রত্যেক ব্যক্তিরই অধিকার থাকবে অপর কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার। ব্যক্তি মাত্রই তার পরিধান, আহার, জীবনযাত্রার মান, বিয়ে, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করবে।

রাজনৈতিক স্বাধীনতা: রাজনৈতিক স্বাধীনতা এমন স্বাধীনতা নির্দেশ করে যার মাধ্যমে নাগরিকরা রাজনৈতিক জীবনে এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাÐে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে। রাজনৈতিক স্বাধীনতা কতিপয় ন্যূনতম অধিকার অন্তর্ভুক্ত করে। এগুলো হচ্ছে ভোটের অধিকার, নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করার অধিকার, সরকারী পদ লাভের অধিকার, রাজনেতিক মতামত ব্যক্ত করার অধিকার, ক্ষমতাসীন সরকারের নীতিমালা ও কর্মকাÐের সমালোচনা করার অধিকার এবং আবেদন করার অধিকার।

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা: অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলতে কোন নাগরিকের দৈনন্দিন অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করা বোঝায়। এ অর্থে প্রতিটি নাগরিকের যোগ্যতা অনুসারে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকা আবশ্যক। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার অভাবে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয় এর অনুপস্থিতিতে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে না। বংশ, গোত্র, বিশ্বাস, ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সকলের সমান অর্থনৈতিক সুযোগ থাকা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার এক অত্যবশ্যকীয় শর্ত।

জাতীয় স্বাধীনতা: জাতীয় স্বাধীনতা বলতে কোন জাতি বা দেশের স্বাধীনতাকে বোঝায়। ব্যক্তি যেমন স্বাধীনতা পেতে আগ্রহী তেমনি রাষ্ট্রও। জাতীয় স্বাধীনতা কেবল তখনই অস্তিত্বশীল হয় যখন কোন জাতি বা সম্প্রদায় স্বাধীন ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হয়।

ঘ) আইন, স্বাধীনতা এবং সাম্যের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক

আইন স্বাধীনতা ও সাম্যের মধ্যে ত্রিমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। এদের সম্পর্ক অনেকটা সামগ্রিক।। আইন ও স্বাধীনতার রক্ষক ও অভিভাবক। আইন ছাড়া স্বাধীনতার কোন অস্তিত্ব থাকতে পারে না। আইন আছে বলেই স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করা যায় আইন সাম্য কেও সার্থক করে তোলে। আইন স্বাধীনতাকে আরো সম্প্রসারিত করে। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে অসাম্যকে দূর করা যায়। সামাজিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও বৈষম্য দূর করতে আইনই মানুষকে যুগ যুগ ধরে সাহায্য করে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলো আইনের মাধ্যমে বর্ণবাদ নিষিদ্ধ করা। ভারতে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সতীদাহ প্রথা রদ করা হয়।

অন্যদিকে সাম্য ও স্বাধীনতার এক অপরকে ছাড়া অচল। সাম্য ছাড়া স্বাধীনতাকে কল্পনা করা যায় না। সাম্য নিশ্চিত করার জন্য স্বাধীনতার প্রয়োজন। স্বাধীনতা না থাকলে সাম্য কেবল মরীচিকায় থেকে যায়। আবার স্বাধীনতাকে ভোগ করতে চাইলে সাম্য প্রতিষ্ঠা করার পূর্বশর্ত। তা না হলে দুর্বলের সাম্য সকলের সুবিধার খেলনা হিসেবে পরিগণিত হবে। সাম্য সমাজের উঁচু নিচু পার্থক্য দূর করে এবং স্বাধীনতার সমাজের সকল মানুষের কাছে সম্পদের সুষম বন্টন করে সকলকে সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে। ৩ অধ্যাপক লাস্কি বলেন, আইন যত বেশি রাষ্ট্রের সমতা বিধান করবে, স্বাধীনতা উপভোগ তত ব ততবেশি নিশ্চিত হবে। আইন ছাড়া সাম্য থাকতে পারেনা, সাম্য ছাড়া স্বাধীনতা পুরোপুরি অচল। মূলত আইন সাম্য ও স্বাধীনতার সম্মিলিত প্রয়াসে আইনের শাসন ও রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে। বলা যায় সাম্য ও স্বাধীনতার সম্পর্ক পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক ও সম্পূরক।

ঙ) উপস্থাপনা কৌশল

সুন্দর করে কথা বলা একটি আর্ট বা শিল্প। যারা এ কাজটি ভালোভাবে পারেন তারা সর্বত্রই সম্মান পান, সবাই তাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে, মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনে এবং মুগ্ধ হয়। মানুষের এই দক্ষতাকেই উপস্থাপনের দক্ষতা বলা হয়। উপস্থাপনের দক্ষতা অর্জনের জন্য নিম্নোক্ত কৌশলসমূহ অবলম্বন করা দরকার:

১) প্রশ্নের উত্তর বলা;

২) ছবি দেখে বিশ্লেষণ করা;

৩) ছবি দেখে গল্প তৈরি করা;

৪) ধারাবাহিক গল্প বলা;

৫) অন্যের কাছে শোনা এবং গল্প পুণঃ বলা;

৬) নিজের ভাষায় গল্প/ কবিতার মূল বক্তব্য বলা;

৭) কোন বিষয় নিয়ে নিজের মতো করে বলা;

৮) পরিচিত গল্প বা কাহিনী সুন্দরভাবে বলে যাওয়া;

৯) ছড়া/কবিতা আবৃত্তি করা।

১০) যতি চিহ্ন ব্যবহার করে এবং বিষয়বস্তুর ভাবকে অনুধাবন করে জানা এবং ছড়া, কবিতা বা গদ্যধর্মী কোনো পাঠ
সম্পর্কে বলা।

১১) জোড়ায় একে অন্যের উপস্থাপনা মূল্যায়ন করা।

১২) ধারা বর্ণনা করা

১৩) উপস্থিত বক্তৃতা দেওয়া

১৪) টেলিফোনে কথোপকথন করা

১৫) দলে কোনো পাঠ ধরে প্রশ্ন-উত্তর করা

১৬) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বারবার অনুশীলন করা।