0

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব বিশ্লেষণ। এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র চতুর্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

HSC Business Organization and Management 4th Week Assignment 2021

স্তর: এইচএসসি পরীক্ষা ২০২১, বিভাগ: ব্যবসায় শিক্ষা, বিষয়: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র, বিষয় কোড: ২৭৭, মোট নম্বর: ১৬, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০৩, অধ্যায় দ্বিতীয়: ব্যবসায় পরিবেশ।

অ্যাসাইনমেন্ট: ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব বিশ্লেষণ।

শিখনফল/বিষয়বস্তু:

  1. ক) ব্যবসায় পরিবেশের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে;
  2. খ) ব্যবসায় পেিবশের বিভিন্ন উপাদান ব্যাখ্যা করতে পারবে;
  3. গ) ব্যবসায়ের উপর পরিবেশের উপাদানগুলাের প্রভাব বিশ্লেষণ করতে পারব;
  4. ঘ)  ব্যবসায়ের পরিবেশের উপাদানগুলাের মধ্যে কোনগুলাে বাংলাদেশের অনুকূল বা প্রতিকূল তা চিহ্নিত করতে পারবে;
  5. ঙ) বাংলাদেশে ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়নের পথে বিদ্যমান সমস্যাগুলাে সনাক্ত করতে পারবে এবং তা দূরীকরণের উপায় চিহ্নিত করতে পারবে;

নিদের্শনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):

  • ব্যবসায় পরিবেশের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে;
  • ব্যবসায়ের উপর ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলাের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে হবে;
  • ব্যবসায়ের উপর সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানগুলাের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে হবে;
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে হবে;
  • প্রয়ােজনে নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে

এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা চতুর্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানসমূহের প্রভাব

Get HSC Business Organization and Management Assignment Answer

[Join]
Read More About HSC Business Organization and Management 4th Week Assignment Answer

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পরিবেশের প্রভাব

ক) ব্যবসায়ের ধারণাঃ

সাধারণভাবে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে ব্যবসায় বলে। মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে মানুষ যে সব বৈধ অর্থনৈতিক কার্যাদি সম্পন্ন করে থাকে তাকে ব্যবসায় বলে। পরিবারের সদস্যদের জন্য খাদ্য উৎপাদন করা হাঁস মুরগী পালন করা সবজি চাষ করাকে ব্যবসায় বলা যায় না। কিন্তু যখন কোন কৃষক মুনাফার আশায় ধান চাষ করে বা সবজি ফলায় তা ব্যবসায় বলে গণ্য হবে। তবে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যবসায় বলে গণ্য হবে যদি সেগুলো দেশের আইনে বৈধ ও সঠিক উপায়ে পরিচালিত হয়। সুতরাং যে কাজটিকে আমরা ব্যবসায় বলবো তা চারটি মৌলিক উপাদান আছে। যেমন – ক. অর্থনৈতিক কাজ, খ. মুনাফার উদ্দেশ্য, গ. ঝুঁকি, ঘ. বৈধতা। এই ৪টি উপাদান না থাকলে কোন কাজকে ব্যবসায় বলা যাবে না। ব্যবসায়ের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা একে অন্য সব পেশা থেকে আলাদা করেছে। ব্যবসায়ের সাথে জড়িত পণ্য বা সেবার অবশ্যই আর্থিক মুল্য থাকতে হবে। ব্যবসায়ের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এর সাথে ঝুঁকির সম্পর্ক। মূলত মুনাফা অর্জনের আশাতেই ব্যবসায়ী অর্থ বিনিয়োগ করে। ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি অবশ্যই সেবার মনোভাব থাকতে হবে।

খ) ব্যবসায় ব্যষ্টিক পরিবেশের উপাদানঃ

ব্যষ্টিক পরিবেশ বলতে ওই সকল পক্ষ, শক্তি অথবা উপাদানের সমষ্টি কে বঝায় যেগুলো বিপণন কার্যক্রমকে সরাসরি প্রভাবিত করে।

১। কোম্পানিঃ কোম্পানি বলতে এমন এক ধরনের সংস্থাকে বোঝায় যেখানে সকল সদস্য একত্রিত হয়ে আইনগত ভাবে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করে । নিচে কোম্পানির বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রমের প্রভাব দেওয়া হলঃ

  • উচ্চতর ব্যবস্থাপনা 
  • অর্থায়ন 
  • গবেষণা ও উন্নয়ন 
  • ক্রয় 
  • উৎপাদন
  • হিসাব 
  • বিপণন

২। সরবরাহকারীঃ সরবরাহকারীরা পণ্য ও সেবা বিপণনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে । সরবরাহকারীকে অবশ্যই সঠিক মানের , সঠিক মূল্যের এবং সঠিক সময়ে কাচামালের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে অন্যথায় কোম্পানি তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়।

৩। বিপণন মধ্যস্থব্যবসায়ীঃ পন্য ও সেবা সামগ্রী বিপণনে বিভিন্ন ধরনের মধ্যস্থব্যবসায়ী নিয়জিত থাকে । নিচে এরূপ মধ্যস্থব্যবসায়ী সম্পর্কে দেওয়া হলঃ 

  • প্রতিনিধি মধ্যস্থব্যবসায়ী 
  • মার্চেন্ট মধ্যস্থব্যবসায়ী 
  • বিপণন সেবা সংস্থা 
  • আর্থিক মধ্যস্থ কারবারী

৪। ক্রেতা সাধারণঃ নিচে পাঁচ ধরনের ক্রেতা বাজার সম্পর্কে দেওয়া হল-

  • ভোক্তা বাজার 
  • ক্রেতা বাজার 
  • সরকারি বাজার
  • পুনঃ বিক্রেতা বাজার
  • আন্তর্জাতিক বাজার 

৫। প্রতিযোগীঃ একই জাতীয় পণ্য বা সেবা উৎপাদনকারী ও বিপণনকারী প্রত্যেক কোম্পানি একে অন্যের প্রতিযোগী ।  

৬। জনগোষ্ঠীঃ প্রত্যেক কোম্পানি সাত ধরণের জনগোষ্ঠী

দ্বারা প্রভাবিত হয় যা নিচে আলোচনা করা হলঃ 

  • অর্থ সংস্থানকারী জনগোষ্ঠী
  • গণমাধ্যম জনগোষ্ঠী
  • সরকারী জনগোষ্ঠী
  • নাগরিক-কার্যক্রম জনগোষ্ঠী
  • স্থানীয় জনগোষ্ঠী
  • অভ্যন্তরীণ জনগোষ্ঠী
  • সাধারণ জনগোষ্ঠী

গ) ব্যবসায় সামষ্টিক পরিবেশের উপাদানঃ

Image

১। জনসংখ্যাগত পরিবেশঃ বাজারজাতকারীর জন্য প্রথম এবং প্রধান বিষয় হলো জনসংখ্যা। পরিবেশের একটা অন্যতম উপাদান হিসাবে জনসংখ্যা বাজারজাতকরণের উপর প্রভাব ফেলে। কোন একটি নির্দিষ্ট অ লের জনসংখ্যার আয়তন, ঘনত্ব, অবস্থান, গতিশীলতার ধারা, বয়স, বর্ণ, পেশা ইত্যাদি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত অবস্থাই জনসংখ্যা পরিবেশ। জনসংখ্যা পরিবেশ বাজারজাতকারীর কাছে মূল আগ্রহের বিষয় কারণ এর সংঙ্গে জনগন জড়িত এবং জনগন বাজার সৃষ্টি করে। পৃথিবীর বিভিন্ন অ লের জনসংখ্যার পরিমান, ধর্মের পার্থক্য, জীবনধরণের পদ্ধতির পার্থক্য প্রভৃতি জনগনের ভোগের পরিমান, ক্রয়,অভ্যাস, রুচি ইত্যাদিতে পার্থক্য সৃষ্টি করে।

২। অর্থনৈতিক পরিবেশঃ একটি দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ পরিলক্ষিত হয় ঐ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানের দ্বারা। বাজারে পণ্য সরবরাহ করাটাই বাজারজাতকারীর প্রধান কাজ নয় বরং বাজারে ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করে পণ্য সরবরাহ করতে হয়। সুতরাং পণ্যের বাজারজাতকরণে ক্রেতার অর্থনৈতিক অবস্থাও প্রভাব বিস্তার করে। ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা এবং ব্যয়ের ধরণকে প্রভাবিত কওে এমন কতিপয় উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত অবস্থাই অর্থনৈতিক পরিবেশ।

৩। প্রাকৃতিক পরিবেশঃ কোন দেশের জালবায়ু, নদ-নদী, আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সম্পদ, ইত্যাদির সমন্বয়ে সেই দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত হয়। এই সকল প্রাকৃতিক পরিবেশ কোম্পানির অজান্তইে বাজারজাতকরণ কার্যাবলিকে প্রভাবিত করে। প্রাকৃতিক পরিবেশ সেই দেশের উৎপাদন, বণ্টন, ভোগ, জীবনযাত্রা ইত্যাদির উপর ব্যাপক প্রভাব বিহস্তার করে থাকে। শীতকালে গরম পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, গরমকালে ভোক্তারা শীত বস্ত্র ক্রয় করে না। প্রাকৃতিক পরিবেশ বর্তমান যান্ত্রিক যুগে বাজারজাতকরণকে বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রভাবিত করছে। এই পরিবেশ বাজারজাতকরণের অনুকুলে এবং প্রতিকুলে কাজ করতে পারে। দেশের বণ্যা, ঘুর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, ইত্যাদি দ্বারা সমগ্রিক বাজারজাতকরণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আবার প্রাকৃতিক সম্পদের প্রচুর্য একটা দেশের বাজারজাতকরণের চেহারা পরিবর্তন করতে পারে। ফলে বাজারজাতকারীকে প্রাকৃতিক পরিবেশের বিষয়টি সর্বদা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।

৪। প্রযুক্তিগত পরিবেশঃ প্রযুক্তিগত পরিবেশ ঐ উপাদান নিয়ে গঠিত যার মাধ্যমে প্রযুক্তি প্রভাবিত হয়ে একদিকে যেমন নতুন পণ্য উদ্ভাবন করে অন্য দিকে তেমন বাজারজাতকরণ নতুন সুযোগ ও হুমকির সৃষ্টি করে। প্রযুক্তগত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি দেশে নিত্যনতুন বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদানের মাধ্যমে ব্যবসা বানিজ্যকে সচল করে রাখে। যে সকল দেশে প্রযুক্তিতে উন্নতি লাভ করতে পারেনি সেই সকল দেশ উন্নয়ন থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে নতুন পণ্য, ভোগ ও সেবার বৈচিত্রতা দেখা যায়। প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রায় মান বৃদ্ধি করছে। প্রযুক্তিগত বিষয়টি বাজারজাতকরণে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাবফেলছে।

ঘ) ব্যবসায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় পরিবেশের উপাদান সমূহের প্রভাবঃ

ব্যবসায়ের সিদ্ধান্তের উপর অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রভাব

উন্নয়নশীল দেশে ব্যবস্থাপনা শ্রেনির স্বল্পতা রয়েছে। যদিও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি পূর্বশর্ত হলো সংখ্যাগুরু শিল্পোদ্যোক্তা শ্রেণির উপস্থিতি। এই শ্রেণি সময়ের অগ্রগতির সাথে আস্তে আস্তে গড়ে উঠে। তবে প্রশিক্ষন, প্রশাসনিক | সহযোগিতা, অর্থনৈতিক উৎসাহ ও ব্যাপক পরিকল্পনার মাধ্যমে শিল্পোদ্যোক্তা শ্রেণির সংগঠন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, অর্থনৈতিক পরিবেশ বহুমূখী। 

১। শিল্প-বিনিয়োগ নীতিঃ ব্যবসায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শিল্প-বিনিয়োগ নীতি ব্যবসায়ীর কাছে একটি দিক নির্দেশনা দলিল। এতে শিল্পোন্নয়নের প্রত্যাশিত কাঠামো, মূলধন সংগ্রহের উৎস ও উপায়সমূহ, বিনিয়োগ সেবা, কর কাঠামো, ব্যবসায় অথবা কারখানার জন্য ভূমির প্রাপ্যতা, অগ্রাধিকারযুক্ত খাত চিহ্নিতকরণ প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভূক্ত থাকে। একজন আগ্রহী শিল্পোদ্যোক্তা শিল্পনীতি পাঠ করে তার প্রত্যাশিত প্রকল্পের ধারনা, মূলধন সংগ্রহের উপায় জানতে পারে। অধিকন্তু, কোন খাতে কোথায় কিভাবে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যাবে তাও জানতে পারে।

 ২। প্রতিষ্ঠানের মূলধন প্রাপ্তিঃ একটি নতুন প্রতিষ্ঠান গড়তে হলে বিভিন্ন প্রকার মূলধন প্রয়োজন হয়। আর এই মূলধনের উৎস হচ্ছে ব্যাংক, শিল্পোদ্যোক্তা, শেয়ার বাজার, বিদেশি সাহায্য প্রভৃতি। প্রারম্ভিক মূলধন প্রাপ্তি অথবা এর সহজলভ্যতা একটি নতুন ব্যবসায় শুরুর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। উপরন্তু, চলমান ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং সম্প্রসারনের জন্যেও স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি মূলধন অথবা ঋণের প্রয়োজন পড়ে। কোন জায়গায় প্রতিষ্ঠানের এই মূলধন প্রাপ্তির সুযোগ অনুপস্থিত থাকলে শিল্পোদ্যেক্তাগণ অন্য জায়গায় সরে যেতে পারে। 

৩। মুদ্রানীতিঃ মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে মুদ্রা সরবরাহ, জনগনের প্রকৃত মজুরি ও মুদ্রাস্ফীতি স্থিতিশীল রাখা। উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সুদের হার নমনীয় রাখা, বাজারভিত্তিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। আর্থিক খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা মুদ্রানীতির অন্য লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি সুষ্ঠু এবং ফলপ্রসূ মুদ্রানীতি ব্যবসায়ের পরিবেশকে উন্নত করে। 

৪। রাজস্ব নীতিঃ সুষ্ঠু এবং সুবিধাজনক রাজস্ব আইন ও নীতিমালা নতুন শিল্প স্থাপন ও পুরাতন শিল্পের সম্প্রসারনে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। পক্ষান্তরে, প্রতিকূল রাজস্ব নীতিমালা বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ও বিকাশ এবং নতুন শিল্প স্থাপনের উপর প্রতিকূল প্রভাব বিস্তার করে। হাবিবুল্লাহ ও আহমেদ এক গবেষনায় দেখিয়েছেন, ত্রুটিপূর্ণ রাজস্ব নীতির ফলে বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রে কাচাঁমাল আমদানির উপর উচ্চহারে শুল্ক ধার্য করা এবং সম্পূর্ণ প্রস্তুতকৃত আমদানি করা পণ্যের উপর কমহারে শুল্ক ধার্য করা ইত্যাদি ক্রটিসমূহ শিল্প প্রতিষ্ঠানের পণ্যসামগ্রী বাজারজাতকরণের উপর প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এই ত্রুটিপূর্ণ রাজস্ব নীতি স্থানীয় পণ্যের বাজারজাতকরনের ক্ষেত্রে ব্যয় ও মূল্যের উপর বাধা বিপত্তি হয়ে দেখা দেয়।

ব্যবসায়ের সিদ্ধান্তের উপর রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব

ব্যবসায় ও রাজনীতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান। দেশের রাজনীতির দর্শন, ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রকৃতি এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক গতিশীলতা শিল্প বাণিজ্যের অগ্রগতিতে প্রভাব বিস্তার করে। 

১। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাঃ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা শিল্প অথবা ব্যবসায় পরিবেশের পূর্বশর্ত। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ঘটে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটলে দেশে সন্ত্রাসী ও দুষ্ট শ্রেণি সৃষ্টি হয়ে ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এই পরিস্থিতিতে কোন উদীয়মান শিল্পোদোক্তা শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উৎসাহ দেখায় , ব্যবসায় স্থাপন সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে না। 

২। ব্যবসায় ও সরকারের সম্পৃক্ততাঃ রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা অনেক সময় নিজের অথবা দলীয় স্বার্থে কোন কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে। প্রতিদিন হিসেবে এরা সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা আদায় করে। এই অবস্থায় শিল্পোদ্যোগীয় গুনসম্পন্ন ব্যক্তিরা রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। এতে শিল্পোদ্যোগের পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। তাই, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও সরকারের মধ্যে পরস্পর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতের আদান-প্রদানের মাধ্যমে সুষ্ঠু নীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকলে ব্যবসায়ের পরিবেশ অনুকূল হয়। 

৩। অর্থনৈতিক নীতিমালাঃ প্রায়শই দেখা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করের কাঠামো, পুরানো কর কাঠামো পুনর্বিন্যাস এবং প্রতিকূল প্রভাব সৃষ্টিকারী অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করার প্রস্তাব আসলেই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, বণিক সভা, ব্যবসায়ী সংঘ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠে। উপরন্তু চিরাচরিত নিয়মে সরকারের প্রস্তাবিত বাজেটের অর্থনীতির উপর অনুকূল ও প্রতিকুল প্রভাব এবং বিশেষ করে শিল্প-বাণিজ্যের উপর প্রভাব সম্পর্কে ব্যবসায়িক সংঘসমূহ জোরালো বক্তব্য পেশ করে। 

৪। সরকারের রাজস্বনীতিঃ ব্যবসায়ের উপর রাজনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বহু গবেষক ও শিক্ষাবিদ সৃষ্টত দেখিয়েছেন, সরকারের নীতিমালা বিশেষ করে কর হার, লাইসেন্স নীতি এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নীতি কার্য উদ্যোগ ও কার্যক্রমের উপর অনুকূল অথবা প্রতিকূল প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। দেশে উৎপাদিত পণ্যের বিদেশে বাজার পাবার জন্যও সরকারের প্রচেষ্টা ও সমর্থন প্রয়োজন। তাছাড়া শুল্ক বিভাগ, কর বিভাগ ও যোগাযোগ বিভাগের সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবসায়ের সফলতার জন্য অপরিহার্য।

ব্যবসায়ের সিদ্ধান্তের উপর আইনগত পরিবেশের প্রভাব

দেশের শিল্প বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্যিক ও শিল্প আইন, পরিবেশগত আইন, শ্রম আইন, আমাদানি-রপ্তানি নীতি প্রভৃতি যেসব আইনগত বিধি বিধান পালন করতে হয় তার সমন্বয়ে গঠিত পরিবেশকে শিল্পদ্যোগের আইনগত পরিবেশ বলে। এ আইনগত কারনেই একজন শিল্পদ্যোক্তা তার ইচ্ছামাফিক বা মনমত শিল্প গঠন ও পরিচালনা করতে পারে না। 

১। বাণিজ্যিক আইন: দেশের বাণিজ্য সংক্রান্ত আইনের আওতায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়। এই বাণিজ্যিক আইন যদি যুগোপযোগী ও সহজ প্রকৃতির হয় তবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সহজে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। অন্যথায় শিল্প- বাণিজ্য পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সরকারকে এ ব্যাপারেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। 

২। শিল্পীয় আইন: দেশের আইন দ্বারাই একটি দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। শিল্প আইনের কারণেই শিল্পে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ রয়েছে। তাই শিল্প আইন শিল্পোদ্যোগকে সরাসরি প্রভাবিত করে। 

৩। ক্ষতিপূরণ আইন: অগ্নিকান্ড, দূর্ঘটনা ইত্যাদির জন্য যে আইন ও বিধি-বিধান দেশে প্রচলিত আছে তাকে ক্ষতিপূরণ আইন বলা হয়। চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পেলে শিল্পোদ্যোগ আরও বেগবান হয়। ব্যবস্থাপনাকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। 

৪। শ্রম আইন: শিল্প কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ, শ্রম বিরোধ মীমাংসা সংক্রান্ত আইনকে শ্রম আইন বলা হয়। বাংলাদেশের বিদ্যমান শ্রম আইন ২০০৬ সালে প্রণীত হয় যা ২০০৯ ও ২০১০ সালে কিছুটা সংশোধন করা হয়।

৫। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন: ব্যবসায়ীগণ শুধু পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করলেই তাদের দায়িত্ব শেষ হয় না। পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদন করে পরিবেশ সংরক্ষন আইনও মেনে চলতে হয়। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষন আইন অনুসরণ করা হয়। 

৬। মজুরি আইন: শ্রমিকদের মজুরি প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা মজুরি আইনের অন্তভূক্ত। কারখানা মালিকগণও আইন অনুসারে শ্রমিকদের মজুরি প্রদান করতে বাধ্য থাকেন। এ আইন শিল্পোদ্যোক্তাদের অনুকূল থাকলে তারা নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে বেশি আগ্রহী হয়। ফলে শিল্পের বিস্তার ঘটে।