দুতরফা ও একতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ। এসএসসি হিসাব বিজ্ঞান ৫ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।
অ্যাসাইনমেন্টের ক্রমিক নং : 03
অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম: দুতরফা ও একতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ
বিষয় কোড: 146
বিষয়: Accounting
এসএসসি হিসাব বিজ্ঞান ৫ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান
এসএসসি ২০২১ সালের পরীক্ষার্থীদের হিসাব বিজ্ঞান পঞ্চম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর শিরোনাম “দুতরফা এবং একতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ”। এই এসাইনমেন্টে সম্পূর্ণ করার জন্য চারটি নির্দেশনা রয়েছে। এসাইনমেন্ট সমাধানে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির সুবিধা সমূহ ব্যাখ্যা করতে হবে, সহায়ক তথ্য-১ ব্যবহার করে লেনদেনের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয় করতে হবে, হিসাব চক্রের ধাপ গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করতে হবে, এবং সহায়ক তথ্য-২ ব্যবহার করে একতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে লাভ-ক্ষতি নির্ণয় করতে হবে। নিচে এই সকল নির্দেশনা মেনে হিসাব বিজ্ঞান তৃতীয় অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান করা হল।
দুতরফা ও একতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ
দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির সুবিধাসমূহ
দুতরফা দাখিলা হিসাব পদ্ধতি হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ, নির্ভরযোগ্য, বিজ্ঞানসম্মত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি পদ্ধতি। এ হিসাব পদ্ধতির বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। দুতরফা দাখিলা হিসাব পদ্ধতির সুবিধার কারণে বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হিসাব সখ্রক্ষণের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। এর সুবিধাগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
১। পরিপূর্ণ হিসাব সংরক্ষণ : প্রতিটি লেনদেনকে ডেবিট ও ক্রেডিট বিশ্লেষণ করে সমপরিমাণ টাকায় লিপিবদ্ধ করা হয় বলে যেকোন লেনদেনের পূর্ণাঙ্গ হিসাব জানা যায়।
২। লাভ লোকসান নিরুপণ : এ পদ্ধতিতে ব্যবসায়ের মুনাফা জাতীয় আয়-ব্যয়ের পরিপূর্ণ ও সঠিক হিসাব সংরক্ষণ করা হয় বলে নির্দিষ্ট সময় পরে বিশদ আয় বিবরণী তৈরির মাধ্যমে ব্যবসায়ের নিট মুনাফা বা নিট লোকসান নির্ণয় করা যায়।
৩। গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই : প্রতিটি লেনদেনের ডেবিট পক্ষের বিপরীতে সমপরিমাণ অঙ্কের ক্রেডিট দাখিলা লিপিবদ্ধ করতে হয়। ফলে কোনো নির্দিষ্ট তারিখে রেওয়ামিল প্রস্তুত করে হিসাবের গাণিতিক নির্ভুলতা যাচাই করা যায়।
৪। আর্থিক অবস্থা নিরুপণ : একটি নির্দিষ্ট তারিখে আর্থিক অবস্থার বিবরণী তৈরির মাধ্যমে কারবারের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
৫। ভুল-ত্রুটি ও জালিয়াতি উদ্ঘাটন ও প্রতিরোধ : এ পদ্ধতিতে হিসাব সংরক্ষণ করলে খুব সহজেই ভুল ত্রুটি ও জালিয়াতি চিহ্নিত করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা যায়।
৬। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ : এ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত ব্যয় সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৭। মোট দেনা-পাওনার পরিমাণ নির্ণয়: এ পদ্ধতিতে হিসাব রাখার ফলে ব্যবসায়ের মালিক যেকোন সময় তার মোট পাওনা ও দেনার পরিমাণ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
৮। সঠিক কর নির্ধারণ : এ পদ্ধতিতে সঠিক হিসাব রাখার ফলে এর ভিত্তিতে নির্ণীত বিভিন্ন কর যথা আয়কর, ভ্যাট, আমদানি শুল্ক ও রপ্তানি শুল্ক ইত্যাদি কর কর্তৃপক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়।
সহায়ক তথ্য-১ এর আলোকে সাবিনা এন্টারপ্রাইজের ডেবিট ক্রেডিট নির্ণয় করা হলো:
তারিখ |
সংশ্লিষ্ট হিসাব |
ডেবিট |
ক্রেডিট |
মে-5 মে-15 মে-22 মে-30 |
ব্যাংক হিসাব বিক্রয় হিসাব |
ডেবিট |
ক্রেডিট |
অগ্রিম ভাড়া হিসাব নগদান হিসাব |
ডেবিট |
ক্রেডিট |
|
উত্তোলন হিসাব ক্রয় হিসাব |
ডেবিট |
ক্রেডিট |
|
ব্যাংক হিসাব ব্যাংক সুদ হিসাব |
ডেবিট |
ক্রেডিট |
হিসাব চক্রের ধাপ গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
১. লেনদেন সনাক্তকরণ ও পরিমাপকরণ: হিসাব চক্রের প্রথম ধাপে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত ঘটনাগুলো থেকে লেনদেন সনাক্তকরণ ও অর্থের মাপ কাঠিতে পরিমাপ করতে হয়। যে ঘটনা অনার্থিক এবং টাকার অংকে পরিমাপ করা যায় না তা হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা যায় না।
২. লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ: হিসাব চক্রের দ্বিতীয় ধাপে হিসাবের বইতে লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়। লেনদেন সংঘটিত হওয়ার পর প্রতিটি লেনদেনের দ্বৈতসত্তা বশ্লিষেণ করে এক পক্ষকে ডেবিট ও অন্য পক্ষকে ক্রেডিট করে ।প্রাথমিক পর্যায়ে তারিখ অনুযায়ী হিসাবের বই জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয়। জাবেদায় লেনদেন লিপিবদ্ধ করাকে জাবেদাভুক্তকরণ বলা হয়।
৩. শ্রেণীবদ্ধকরণ: লেনদেনগুলোকে জাবেদাভুক্তকরণের পর সমজাতীয় লেনদেনগুলো শ্রেণীবিন্যাস করে পৃথক পৃথক শিরোণামে লিপিবদ্ধ করা হয়। এ কার্যক্রমকে খতিয়ানভুক্তকরণ বলা হয়। যে হিসাবের বইতে লেনদেনসমূহ শ্রেণীবদ্ধভাবে ও সংক্ষিপ্তাকারে পাকাপাকিভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করার কাজকে খতিয়ানভুক্তকরণ বলা হয়।
৪. সংক্ষিপ্তকরণ: খতিয়ানস্থিত হিসাবসমূহের ডেবিট ও ক্রেডিট উদ্বৃত্তসম‚হ নিয়ে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এই তালিকাকে রেওয়ামিল বলে। রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয় হিসাবসম‚হের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই ও আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতে তথ্য সরবরাহ করার জন্য। রেওয়ামিলের দুইপার্শ্ব সর্বদাই সমান হয়।
৫. সমন্বয় ও সমাপনি দাখিলা: রেওয়ামিল প্রস্তুতের পর বকেয়া ও অগ্রিম আয়-ব্যয় সমন্বয় করে হিসাব কালের সঠিক আয়-ব্যয় নির্ণয় করা হয়। হিসাবের কোথাও ভুল-ত্রুটি থাকলে সংশোধন করতে হয়। এরূপ সমন্বয় ও সংশোধন, সমন্বয় ও সংশোধনী দাখিলার মাধ্যমে করা হয়। তাছাড়া, মুনাফা জাতীয় আয় ও ব্যয় হিসাবগুলোর উদ্বৃত্ত আর্থিক বিবরণীতে স্থানান্তর করে মুনাফাজাতীয় হিসাবসমূহ বন্ধ করতে হয়। মুনাফা জাতীয় হিসাব বন্ধের জন্য যে দাখিলা দেয়া হয় তাকে সমাপনী দাখিলা বলে।
৬. আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণ: রেওয়ামিল ও সমন্বয় তথ্য নিয়ে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। সাধারণত হিসাবকাল শেষে আর্থিক ফলাফল ও আর্থিক অবস্থা জানার জন্য আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। আর্থিক বিবরণীসমূহের মধ্যে উৎপাদন ব্যয় বিবরণী, আয় বিবরণী ও উদ্বৃতপত্র প্রধান।
৭. বিবরণী বশ্লিষেণ ও ব্যাখাদান: ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে স্বার্থ সংশ্লষ্টি বিভিন্ন পক্ষ যেমন মালিক, ব্যবস্থাপনা, পাওনাদার, দেনাদার, কর্মচারী, সরকার, কর কর্তৃপক্ষ, জনসাধারণ, গবেষক প্রমুখ বিভির্ন্ন তথ্যের প্রয়োজন অনুভব করে। আর্থিক বিবরণী ও এর ব্যাখ্যা বশ্লিষেণ থেকে তথ্য বিবরণ ও প্রতিবেদনের আকারে ঐ পক্ষগুলোকে সরবরাহ করে।
৮. প্রারম্ভিক জাবেদা লিখন: হিসাবকাল শেষে সম্পত্তি ও দায় হিসাবসমূহের উদ্বৃত্ত একটি প্রারম্ভিক জাবেদার মাধ্যমে পরবর্তী বৎসরের হিসাব বইয়ে স্থানান্তর করা হয়। এভাবেই বিগত ও চলতি বৎসরের হিসাবের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপিত হয় এবং এভাবে হিসাবরক্ষণ চক্রাকারে আবর্তিত হয়।
সহায়ক তথ্য-২ ব্যবহার করে একতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে লাভ-ক্ষতি নির্ণয়:
- প্রাম্ভিক মূলধন= প্রাম্ভিক মোট সম্পদ – প্রাম্ভিক মোট দায়
=5,30,000-2,90,000
=2,40,000 টাকা
- সমাপনী মূলধন নির্ণয়:
বিবরণ |
বিস্তারিত টাকা |
পরিমাণ টাকা |
সমাপনী সম্পদসমূহ অফিস সরঞ্জাম প্রাপ্য হিসাব মজুদ পণ্য ব্যাংক জমা বিনিয়োগ মোট সম্পদ বাদ: সমাপনী দায় সমূহ প্রদেয় হিসাব ঋণ বকেয়া বেতন মোট দায় সমাপনী মূলধন |
1,50,000 80,000 70,000 50,000 2,00,000 |
5,50,000 (2,60,000) 2,90,000 |
50,000 2,00,000 10,000 |
||
- লাভ/ ক্ষতি= {(সমাপনী মূলধন+ উত্তোলন)-( প্রাম্ভিক মূলধন+ অতিরিক্ত মূলধন)}
={(2,90,000+65,000)-( 2,40,000 + 80,000)}
=3,55,000-3,20,000
=35,000 টাকা
অতএব লাভ 35,000 টাকা।