0

আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠন এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও সরকার বিনির্মাণে তুমি কিভাবে পৌরনীতি ও নাগরিকতার জ্ঞান প্রয়োগ করবে। এসএসসি ২০২২ পৌরণীতি ৫ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান।

আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠন এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও সরকার বিনির্মাণে পৌরনীতি ও নাগরিকতা

অ্যাসাইনমেন্ট: আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠন এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও সরকার বিনির্মাণে তুমি কিভাবে পৌরনীতি ও নাগরিকতার জ্ঞান প্রয়োগ করবে।

নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি)

প্রথম অধ্যায়ঃ পৌরনীতি ও নাগরিকতা

  • ১। পৌরনীতি ও নাগরিকতা
  • ২।পরিবার
  • ৩। সমাজ
  • ৪। রাষ্ট্র
  • ৫। সরকার

নির্দেশক:

  • পৌরনীতি ও নাগরিকতার ধারণা
  • পরিবারের কার্যাবলীর তালিকা প্রস্তুত
  • সমাজ সম্পর্কে ধারণা
  • আধুনিক রাষ্ট্রের ভূমিকা
  • রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক।

আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠন এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও সরকার বিনির্মাণে পৌরনীতি ও নাগরিকতা

আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠন এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও সরকার বিনির্মাণে পৌরনীতি ও নাগরিকতা

Get SSC Civics Assignment Answer

[Join]

পৌরনীতি ও নাগরিকতার ধারণাঃ

পৌরনীতি ও নাগরিকতা দুটি প্রত্যয়ের সমষ্টি। কিন্তু বিষয়বস্তু একই। পেীরণীতি শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ Civics। Civics শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ Civis এবং Civitas থেকে। Civis অর্থ হল নাগরিক (Citizen) এক Clwas অর্থ হল নগৱ বই। অর্থাৎ, Civics মানে সে শাহ যা নারাষ্ট্র বা রাষ্ট্রে বসবাসকারী নাগরিকদের নিয়ে আলােচনা করে। পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ে রাষ্ট্রের আলােচনায় নাগরিক আরও বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পৌরনীতি শাস্ত্রে যাত্রা শুরু মূলত প্রাচীন গ্রীসে। প্রাচীন গ্রীসে নাগরিক ও নগররাষ্ট্র পরস্পর অবিচ্ছেদ্য ছিল। তৎকালীন গ্রীসের সকল জনসাধারণ শরিক ছিলেন না।

কেবল যারা রাষ্ট্রের শাসনকার্যে অংশ নিতেন তারাই নাগরিকত্ব লাভ করেন। তাই civics নামক বিষয়টি ছিল কেবল রাষ্ট্র ও নাগরিক সম্পর্কিত জ্ঞানের সমষ্টি। নগররাষ্ট্রের সাথে নাগরিকের সম্পর্ক, কার্যাবলি, নাগরিকের সুযােগ-সুবিশ্ব ইত্যাদিই আলােচিত হত। এফ আই গ্লাউড বলেন “যে সকল অভয়াস, প্রতিষ্ঠান, অভ্যাস, কার্যাবলি ও চেতনার দ্বারা মানুষ রাস্ট্রীয় বা রাজনৈতিক সমাজের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে এবং অধিকার ভোগ করতে পারে, তার অধ্যয়নই পৌরনীতি। উপরের সংজ্ঞাগুলাে থেকে পৌরনীতি বলতে কি বুঝায় তা স্পষ্ট। কিন্তু এই পৌরনীতি যখন নাগরিকের জীবনের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে আলোচনা করে তখনই তা পৌরনীতিও নাগরিকতা (Civists & Citizenship)।

পরিবারের কার্যাবলিঃ

পরিবার এমন একটি প্রতিষ্ঠান যার মাধ্যমে মানুষ তার প্রয়ােজনীয় চাহিদা পূরণ করে থাকে। সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। নিজ পরিবারের কার্যাবলি উল্লেখ করা হল-

১। সন্তান প্রজনন ও প্রতিপালন : সমাজে সন্তান প্রজননের একমাত্র স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হল পরিবার। শিক্ত ভূমিষ্ট হওয়ার পর অসহায় অবস্থা থেকে শিশুর স্বাবলম্বী হওয়া পর্যন্ত সেবা শু শ্ৰতিপালনের কাজ পরিবার সুষ্ঠুভাবে করে থাকে।

২। অর্থনৈতিক কার্যাবলি : পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য পরিবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সকল পরিবারই তার অন্ত এক ব্যক্তিবর্গের অনেক মহিলা সাধ্যমত পূরণ করে।

৩। সামাজিকীকৱণ : পরিবারের মধ্যেই শিশু সমাজে প্রচলিত নিয়মানুবর্তিতা, বিধি-ব্যবস্থা, নৈতিক আদর্শ, আচারআচরণ, আনব-কেতা প্রভৃতির সাথে পরিচিত হয় এবং অর্জন করে। শিশুর সামাজিকীকরণের হাতে-খড়ি পরিবারেই হয়ে থাকে।

৪। শিক্ষামূলক কাজঃ শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পাদিত হয় পরিবারেই। পরিবারকে বলা হয় প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র। পরিবারের তাবধানেই শিশু শিক্ষা জীবনে প্রবেশ করে। এছাড়া শিশু শিষ্টাচার, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা প্রকৃতি গুণাবলি পরিবার থেকে শিক্ষালাক্ত করে।

৫। মনস্তাত্ত্বিক কাজ : শি তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে স্নেহ, ভালােবাসা পায় তা তার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। শিশুরা বড় হলে তারাও স্নেহ- ভালােবাসার অধিকারী হয়। তাই পরিবার হল মানসিক প্রবৃত্তি।

৬। ধর্মীয় কাজ : পৱিৱেৱ মধ্যেই সন্তান-সন্ততিদেৱ ধর্মীয় শিক্ষা সম্পাদিত হয়ে থাকে। ধর্মীয় রীতি-নীতি, মূল্যবােধ, নিয়ম-কানুন, বিধি-নিষেধ এবং আচার-অনুষ্ঠানের সাথে শিক্রয়া পরিবারে পরিচিত হন্য। বা শিশুর মনে ধর্মীয় অনুরাগ এনে দেয়।

৭। অবকাশমূলক কাজ। এক সময় পরিবারই ছিল অবকাশ ও চিবিনােদনের একমাত্র কেন্দ্র। মানুষ সারাদিনের কাজ শেষে ঘরে ফিরে পরিবার-পরিজনদের সাথে গল্প-গুজব, খেলা-ধূলা, গান-বাজনা ইত্যাদি করে অবসর বিনােদন ত। বর্তমানে রেডিও, টেলিভিশন, সিনেমা, নাটক, থিয়েটার, বই-পত্র ইত্যাদির মাধ্যমে পারিবারিক বিনোদন করা আয়।

৮। রাজনৈতিক কার্যাবলি : শিতৱা পৱিৰাৱেৱ মাধ্যমেই দায়িত্ব, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রভৃতি শিক্ষা লাভ করে, যা সন্তানকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তােলে। রাষ্ট্রের সদস্য হিসেবে নাগরিকের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য ইত্যাদি সম্পর্কে সকল জান শিশু পরিবার থেকেই অর্জন করে। অতএব, বলা যায়, পরিবার হল আদি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। পরিবারের মাধ্যমেই একটি শিশু যথার্থ জ্ঞান অর্জনের মধ্য নিয়ে পরিপূর্ণ সুনাগরিক হয়ে উঠে। তাই এক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা অনন্য।

সমাজ সম্পর্কে ধারণাঃ

সমাজ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ “Socity’। শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Socials’ থেকে যার অর্থসহযােগিতা বা পারস্পরিক বন্ধুত্ব। সমাজ মানুষের মৌলিক প্রয়ােজন এবং সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের স্থান। মানুষের সংঘবদ্ধ জীবনের সূচনা ঘট সমাজে। মানুষ সমাজেই জন্মগ্রহণ করেন, সমাজেই লালিত-পালিত হয় এবং সমাজেই মৃত্যুৰৱণ করে। এখানে মানুষ তার খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা লাভ করে থাকে।

সমাজের মধ্যেই ব্যক্তির সমগ্র জীবন আবর্তিত হয়। গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল বলেছেন, “মানুষ স্বভাবতই সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব। যে সমাজে বাস করে না, সে হয় পশু না হয় দেবতা।” সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভার বলেন, ‘সমাজ মানুষের বহুবিধ সামাজিক সম্পর্কের এক সামগ্রিক পদ্ধতি। সমাজবিজ্ঞানী জিমবার্গ বলেন, “সমাজ হল সামাজিক সম্পর্কের সেই জাল, যা দ্বারা প্রত্যেক মানুষ তাদের সঙ্গীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই বলা যায়, সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য।”
আধুনিক রাষ্ট্রের ভূমিকাঃ

মধ্যযুগীয় সামন্ততন্ত্র ও গির্জা কর্তৃক শাসিত খ্রিষ্টীয় সাম্রাজ্যের অধীনে মানুষ ধর্মীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ধর্মীয় বিশ্বাসের নামে প্রাচীন গ্রীসের যুক্তিবােধ উপেক্ষিত হতে থাকে। শাসনের নামে চলতে থাকে গির্জার স্বেচ্ছাচার। রাজনীতি, শিল্প সাহিত্য, সংস্কৃতি সবই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তির প্রতীক্ষা করতে থাকে। চর্তুদশ শতাব্দী থেকেই ধর্মীয় কুশাসনের বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভ দানা বাধতে শুরু করে।

বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে গির্জার ক্ষমতা সীমিত করার দাবী আসতে থাকে। তাছাড়া এ সময় মধ্যযুগীয় সামন্ত অর্থনীতির বিপরীতে নতুন ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির পদধ্বনি শুরু হয়। শিল্প ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে মুক্ত ও উদার দৃষ্টিভংগির উদ্ভব ঘটে। এ প্রবণতাকেই “ইউরােপীয় রেনেসাঁ’ বলা হয়। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক বিষয়াদির ক্ষেত্রে মুক্ত, উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ তথা ইহজাগতিক (Secular) দৃষ্টিভংগির প্রসার লাভ করতে থাকে। উপরােক্ত প্রেক্ষাপটে আধুনিক যুগের সূচনা রচিত হয়। নিকোলাে ম্যাকিয়াভেলীর রাষ্ট্রচিন্তার মাধ্যমে আধুনিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভংগির সূত্রপাত ঘটে।

রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্কঃ

সরকার রাষ্ট্র গঠনের একটি উল্লেখযােগ্য ও অন্যতম উপাদান। সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের কর্মসূচি ও নীতিমালা প্রকাশিত ও কার্যকর হয়। সরকার রাষ্ট্রের মুখপাত্র সৱকাৱ ৱে ইচ্ছাৱ বাস্তবায়ন করে। সকার বলতে সেই জনগণকে বুঝায় যারা আইন প্রণয়ন, শাসন পরিচালনা ও বিচার কাজের সাথে জড়িত। সরকারের সাথে রাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সরকারের বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। ক্ষমতার ভিত্তিতে সরকার দুই ধরনের। গণতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্র।

গণতান্ত্রিক সরকার দুই ধরনের নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ও প্রজাতন্ত্র। আঞ্চলিক ক্ষমতা বন্টনের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক সরকার দু ধরনের । এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয়। আইন ও শাসন বিভাগের সম্পর্কের ভিত্তিতে গনতান্ত্রিক সরকার আবার দু ধরনের, সংসদীয় সরকার ও রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার। অর্থনৈতিক ভিত্তিতে সরকার পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক দুই ধরনের হয়ে থাকে।

Get SSC Civics Assignment Answer