খাদ্যাভ্যাস গঠন
পাঠ ১- খাদ্য গ্রহণে ভ্রান্ত ধারণা ও কুফল
আমরা প্রায়ই মাছে ভাতে বাঙালি এই প্রচলিত কথাটি শুনে থাকি, যা বহুকাল থেকে প্রচলিত বাঙালির খাদ্যাভ্যাসকেই বুঝায়। বংশ পরম্পরায় খাদ্য গ্রহণের ধারাবাহিকতা থেকেই খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে। খাদ্যাভ্যাস অনেকগুলাে বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সাধারণত জাতিগতভাবে ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে একটা সাধারণ খাদ্যাভ্যাসের প্রচলন দেখা যায়। যেমন- বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসীদের জীবন ব্যবস্থা ভিন্ন এবং তাদের খাদ্য গ্রহণ রীতি ও অভ্যাসও ভিন্ন। এছাড়াও ভৌগােলিক পরিবেশ, আবহাওয়া, খাদ্য উপকরণের সহজলভ্যতা, সংস্কৃতি, আর্থসামাজিক অবস্থা, উপজীবিকা, যােগাযােগ ব্যবস্থা ইত্যাদির ভিন্নতার কারণেও খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস প্রভাবিত হয় ও রীতি নীতিতে ভিন্নতা দেখা দেয়। আমাদের যে খাদ্যাভ্যাস প্রচলিত ছিল বর্তমানে বিভিন্ন কারণে সেই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। যেমন- ঘরে তৈরি শরবতের পরিবর্তে কোমল পানীয় ও ঘরে তৈরি খাবারের পরিবর্তে ফাস্ট ফুড বেকারির খাবার গ্রহণ বর্তমানে প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসের উদাহরণ। এই ধরনের পরিবর্তন প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসের ধারাকে পরিবর্তন করছে। এই খাদ্যাভ্যাসের নিয়মিত চর্চা করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমাদের স্বাস্থ্যসম্মত সুষ্ঠু খাদ্যাভ্যাস গঠনের জন্য ছােটবেলা থেকেই সচেতন হতে হবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস গঠনের জন্য ব্যক্তিগত সচেতনতা প্রয়ােজন। যেমন
- শরীরকে সুস্থ, কর্মক্ষম ও নীরােগ রাখার জন্য উপযােগী খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করা।
- প্রতিদিনের প্রতিবেলার আহার গ্রহণে নির্দিষ্ট সময় বজায় রাখা ও নির্ধারিত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করা।
- দৈনিক খাদ্য তালিকায় মাছ-মাংস, ডাল, দুধ, মৌসুমি শাক-সবজি ও ফল ইত্যাদির সমন্বয় ঘটিয়ে সুষম খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করা।
- পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার রান্না ও পরিবেশনের বিষয়টি নিশ্চিত করা।
তাপসী সচ্ছল পরিবারের মেয়ে। প্রতিদিন নিজের পছন্দমতাে মাছ, মাংস না পেলে পেট ভরে খায় না। তার মায়েরও ধারণা পুষ্টিকর খাবার মানেই দামি খাবার। এভাবে সবসময় খাবার বেছে খাওয়ার ফলে তার শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় না। ফলে সে প্রায়ই অপুষ্টিজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে সুমন ক্লাসের ভালাে ছাত্র। সে পরীক্ষা দিতে যাবে। তার দাদু মনে করেন যে পরীক্ষার সময় ডিম খেলে পরীক্ষার ফলাফল ভালাে হয় না। তাই তিনি সুমনকে ডিম খেতে দেন না। উপরের এই ঘটনাগুলাের মতাে অনেক ঘটনাই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে দেখতে পাই যেগুলাের মূল ভিত্তি হলাে কিছু ভুল ধারণা ও বিশ্বাস। এই ধরনের ধারণাগুলাের কোনাে বিজ্ঞান ভিত্তিক যুক্তি নেই। খাদ্য সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণারই প্রতিফলন মাত্র। খাদ্য সম্পর্কিত সঠিক ধারণা না থাকার কারণে আমরা সুষম খাদ্য গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হই। ফলে বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সম্পর্কিত ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। যেমন
- ডিম খেলে পরীক্ষায় ডিম পাবে বা শূন্য পাবে।
- কলা খেলে ঠাণ্ডা লাগবে।
- চিনি, গুড়, মিষ্টি খেলে পেটে কৃমি হয়।
- গর্ভবতী মা মৃগেল মাছ খেলে গর্ভস্থ শিশুর মৃগী রােগ হবে, জোড়াকলা খেলে যমজ সন্তান হবে, হাঁসের ডিম খেলে শিশুর গলা ফেসফেসে হবে।
এছাড়াও জ্বর, ডায়রিয়া হলে স্বাভাবিক খাবার খাওয়া যায় না, কেবল মাত্র দামি খাবার খেলেই সব সময় সুস্থ থাকা যায় ধারণাটি সম্পূর্ণই ভুল। প্রকৃত পক্ষে সঠিক বিষয়টি এর একেবারেই বিপরীত অর্থাৎ জ্বর, ডায়রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি সব ধরনের স্বাভাবিক খাবার খাওয়া যায় এবং প্রতিদিন ছােট মাছ, ডাল, হলুদ ও সবুজ শাক-সবজি, দেশীয় মৌসুমি ফল ইত্যাদি বিভিন্ন খাবারের সমন্বয়ে যদি সুষম খাবার খাওয়া যায় তাহলেই সুস্থ থাকা যায়।
পাঠ ২- অস্বাস্থ্যকর খাদ্য পরিহার, খাদ্যে রঞ্জক পদার্থ ব্যবহারের কুফল
খাদ্য শরীরকে সুস্থ সবল, কর্মক্ষম ও নীরােগ রাখে। কিন্তু কোনাে কারণে খাদ্য যদি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় বা জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় তখন তাকে অস্বাস্থ্যকর খাবার বলা হয়।
যেসব কারণে খাদ্য অস্বাস্থ্যকর হয়
- খাদ্য জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলে।
- খাদ্যে ক্ষতিকর পদার্থ বা রাসায়নিক দ্রব্যাদি মিশ্রিত হলে।
- খাদ্য হিসাবে গ্রহণযােগ্য নয় এমন দ্রব্যাদি যেমন- ধুলাবালি, ইট, পাথর ইত্যাদি মিশ্রিত হলে।
- খাদ্য প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত পানি, তেল, মসলা, বিভিন্ন উপকরণ বিশুদ্ধ না হলে বা ভেজাল হলে।
- খাদ্য প্রস্তুতকারীর ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সুস্থতা না থাকলে।
- খাদ্য রান্না, সংরক্ষণ ও পরিবেশনের স্থান, ব্যবহৃত তৈজসপত্র ইত্যাদি দ্বারা খাবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে।
কয়েকটি অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের নাম
- স্কুলের সামনে, রাস্তাঘাটের পাশে, ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করে খােলা অবস্থায় বিক্রি করা খাবার। যেমনঝালমুড়ি, ফুচকা, আচার, চটপটি, আইসক্রিম ইত্যাদি।
- রাস্তার পাশে অস্থায়ী ভােলা রেস্তোরায়, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে যেসব খাবার পাওয়া যায় যেমন- পরাটা, শিঙ্গাড়া, সমুচা, ডালপুরি ইত্যাদি।
- অনুমােদনহীন, পুষ্টি গুণহীন, ঝুঁকিপূর্ণ রঞ্জক উপাদান ও রাসায়নিক উপাদান সংবলিত খাবার। যেমন- জুস,পানীয়, চকোলেট, কেক, বিস্কিট ইত্যাদি।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় যে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের সাথে বিভিন্ন ধরনের রােগের সম্পর্ক আছে। যেমন- ডায়রিয়া, পেটের সমস্যা, হেপাটাইটিস, আমাশয়, টাইফয়েড, কিডনির সমস্যা, চর্ম রােগ ইত্যাদি। স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস গঠনের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়ােজন।
খাদ্যে রঞ্জক পদার্থ ব্যবহারের কুফল
খাদ্যকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনের জন্য অনেক সময় স্বাস্থ্যসম্মত ফুডগ্রেড কালার ব্যবহার করা হয়। খাদ্যে ব্যবহৃত এইসব প্রকৃত ফুডগ্রেড কালার বেশ দামি। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ী খাদ্যের উজ্জ্বলতা ও আকর্ষণ বাড়ানাের জন্য স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন কৃত্রিম ও রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত সস্তা রং ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে প্রকৃত ফুডগ্রেড কালারের পরিবর্তে টেক্সটাইল ডাই কিংবা লেদার ডাইয়ের মতাে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয়।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন- খাবারের রং উজ্জ্বল করে উন্নত করার জন্য খুব সামান্য পরিমাণে খাওয়ার রং (ফুডগ্রেড কালার) ব্যবহার করা যায়। যেমন- লেমন স্কোয়াস, পাইন অ্যাপেল স্কোয়াস, গ্রীন ম্যাংগাে স্কোয়াস। বিভিন্ন ধরনের জুস তৈরিতে সামান্য রং দিলে এর ফ্যাকাসে ভাব দূর হয়। কিন্তু বিভিন্ন কৃত্রিম ও রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত সস্তা রং খাবারে কোনােভাবেই ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এগুলাে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিকভাবে খাদ্যে যে রং থাকে তাই আমাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও উপকারী। কৃত্রিম রংযুক্ত ক্রিম, ফল ইত্যাদি দিয়ে সাজানাে খাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয়। রাস্তাঘাট, হােটেল, রেস্তোরা, বেকারি, দোকান, ভ্যান গাড়ি ইত্যাদি স্থানে যে সব কৃত্রিম রংযুক্ত বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায় সেগুলাে পরিহার করাই স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।
কৃত্রিম রংযুক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে বদহজম, ডায়রিয়া, চামড়ার সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমনলিভার ও কিডনির রােগ, ক্যান্সার ইত্যাদি রােগ সৃষ্টি হতে পারে।
পাঠ ৩ – ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কুফল, ফাস্ট ফুডের অপকারিতা
আমরা বাজার থেকে কাঁচা কিংবা রান্না করা বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য কিনে আনি। এই খাবারগুলাের মধ্যে
অনেক সময় খাদ্য নয় এমন সব দ্রব্যাদি মেশানাে হয় যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যেমন| কৃত্রিম রং, পচনশীলতা রােধক রাসায়নিক পদার্থ, খাদ্যের ওজন বাড়ানাের জন্য ইটের টুকরা, পাথরের টুকরা, বালি ইত্যাদি। এছাড়াও খাদ্যের রং আরও সাদা করার জন্য এবং অপরিপক্ব ও কাঁচা ফল দ্রুত পাকানাের জন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। খাদ্য নয় এমন সব দ্রব্যাদিকে ভেজাল দ্রব্যাদি বলা হয় এবং এই ভেজাল দ্রব্যাদি মিশ্রিত খাদ্যকে ভেজাল খাদ্য বলা হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাক্তিগত ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য খাদ্যের মধ্যে এই সকল দ্রব্যাদি অর্থাৎ ভেজাল দ্রব্যাদি অবাধে মিশ্রিত করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। যা খেয়ে মানুষ নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। খাদ্যের মধ্যে যেসব ভেজাল দ্রব্যাদি মেশানাে হয়
- কাঁচা মাছ, পাকা ফল, সতেজ রাখতে ফরমালিন।
- দুধ, চিনি ইত্যাদিতে সাদা ভাব আনার জন্য হাইড্রোজ।
- অপরিণত ফলমূল পাকানাের জন্য কার্বাইড।
- মুড়ি আরও সাদা করার জন্য ও আকার বড় ও সুন্দর করার জন্য ইউরিয়া।
- গুঁড়া মশলার মধ্যে কৃত্রিম রং, ইটের গুঁড়া ইত্যাদি।
- ভাজার জন্য পাম অয়েল, পশুর চর্বি কিংবা অন্য গলনশীল চর্বি ব্যবহার।
- চিকেনফ্রাই-এর জন্য ব্যবহৃত হয় রােগাক্রান্ত বা মৃত মুরগি। মাখন-মেয়নেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয় অপরিশােধিত সস্তা চর্বি।
- শুটকী মাছে ডি ডি টি।
- মাংসের কিমা হিসেবে গরু ছাগলের অব্যবহৃত উচ্ছিষ্ট অংশ, নাড়ি-ভুঁড়ি ইত্যাদি ব্যবহার।
ভেজাল মেশানাে এসব খাবার দেখে আমরা আকৃষ্ট হলেও প্রকৃতপক্ষে এগুলাে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এসব খাদ্য গ্রহণের ফলে ডায়রিয়া, বদহজম, বমি, চর্মরােগ, কিডনী ও লিভারের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, জন্মগত ত্রুটি এমনকি ক্যানসারের মতাে মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীর রােগাক্রান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে মানসিক স্বাস্থ্যও বিঘ্নিত হয়। ফাস্ট ফুডের অপকারিতা ফাস্ট ফুড তৈরির প্রায় সব উপকরণ আগে প্রস্তুত করা থাকে। খাওয়ার সময় দ্রুত তৈরি ও পরিবেশন করা হয়। যেমন বার্গার তৈরির জন্য মাংসের পুর আগেই প্রস্তুত করা থাকে। খাওয়ার আগে ভেজে বার্গার প্রস্তুত করা হয়। ফাস্ট ফুডকে হট ফুড বা জাঙ্ক ফুডও বলা হয়। কয়েকটি ফাস্ট ফুডের নাম হলাে- বিভিন্ন ধরনের বার্গার, স্যান্ডউইচ, শর্মা, ফ্রাইড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইড, পিজ্জা, হট ডগ, নানরুটি, কাবাব, ফালুদা, ফুচকা, আইসক্রিম, কোমল পানীয়, লাচ্ছি ইত্যাদি।
ফাস্ট ফুড যেসব কারণে অস্বাস্থ্যকর হয়
- ভাজার কাজে যে তেল ব্যবহার করা হয় তা যদি বার বার ব্যবহার করা হয় তাহলে তাতে বিষাক্ত (টক্সিক) পদার্থ তৈরি হয়।
- ব্যবহৃত কাঁচামাল যেমন- ময়দা, মসলা, রং ইত্যাদি বিশুদ্ধ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন না হলে।
- বেঁচে যাওয়া পচা, বাসি উপকরণ বার বার ব্যবহার করা হলে।
- খাদ্য প্রস্তুত করার স্থান ও প্রস্তুতকারীর ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা না হলে।
- খাদ্য পরিবেশনের সরঞ্জামাদি জীবাণুমুক্ত না হলে।
- রন্ধন স্থানের পয়ঃনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকলে।
ফাস্ট ফুডের সাথে কোমল পানীয়, আইসক্রিম, লাচ্ছি ইত্যাদি সরবরাহ করা হয়। কোমল পানীয়তে কার্বনেটেডের মাত্রা বেশি হওয়ায় এবং আইসক্রিমে ব্যবহৃত দুধ, এসেন্স ও রং (খাদ্যের সুগন্ধি দ্রব্য এবং ফুড কালার) ইত্যাদির বিশুদ্ধতার অভাব শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
নিয়মিত ফাস্ট ফুড খেলে নিম্নরূপ স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়
- ওজন বৃদ্ধি পায়। • বুক জ্বালাপােড়া করে।
- বদহজম হতে পারে।
- দীর্ঘ মেয়াদি অপুষ্টির প্রভাব সৃষ্টি হয়।
- বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও পানিবাহিত রােগের সৃষ্টি হতে পারে।
পাঠ ৪- বিকল্প খাদ্য, স্বাস্থ্য রক্ষায় শারীরিক শ্রম ও ব্যায়াম
আমরা আমাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন খাবার গ্রহণ করি। অনেক সময় অবস্থার পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে সেই সব প্রচলিত খাবার গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তখন আমাদেরকে প্রচলিত খাবারের পরিবর্তে অন্য খাবার গ্রহণ করতে হয়। যেমন- ভ্রমণকালীন সময় ভাতের পরিবর্তে আলাদা বিভিন্ন ধরনের শুকনা খাবার খাওয়া হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- ঘূর্ণিঝড়, জলােচ্ছাস কিংবা ভূমিকম্প হলে তখন জীবনের স্বাভাবিক গতিশীলতা থাকে না। দুর্যোগ আক্রান্ত জনগােষ্ঠী নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করে। স্বাভাবিক রান্না খাওয়া তখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে যেসব খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করা হয় সেগুলােই হচ্ছে বিকল্প খাদ্য। যেমন- চিড়া, মুড়ি, চাল ভাজা, মােয়া, গুড়, বিস্কুট, খেজুর ইত্যাদি।