0

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখ। Class 8 Bangla 6th Week Assignment Answer, ক্লাস ৮ / অষ্টম শ্রেণীর এর বাংলা এসাইনমেন্ট ষষ্ঠ সপ্তাহের প্রশ্ন সমাধান। Write down the arguments put forward by Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, the greatest Bengali of all time, the architect of independence, the father of our nation, to jump into the war of independence.

Class 8 6th week means the last Bengla assignment has been questioned about the freedom struggle. Students have to answer with information from the chapter ‘Ebarer Songram Sadhinotar Songram’. We know that Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman is the greatest Bengali of all time. He is the architect of independence and the father of our (Bengali) nation. His role in the freedom struggle of Bangladesh is immense. And this assignment has to be written in the arguments that he has put forward for jumping into the war of independence.

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখ।

অষ্টম শ্রেণীর ষষ্ঠ সপ্তাহ মানে শেষ বাংলা এসাইনমেন্টর প্রশ্নে স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে প্রশ্ন হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ অধ্যায় থেকে তথ্য উপাত্য নিয়ে উত্তর করতে হবে। আমরা জানি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিঁনি স্বাধীনতার স্থপতি এবং আমাদের (বাঙ্গালীদের) জাতির পিতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা অপরিসীম। আর এই এসাইনমেন্ট তিঁনি স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখতে হবে।

প্রশ্নঃ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখ।

প্রশ্নটির দুইটি উত্তর দেওয়া হয়েছে। একটি ছোট উত্তর এবং একটি বড় উত্তর।

বাংলার এক অবিসংবাদিত নেতা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যিনি বাংলার স্বাধীনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি বাংলা ও বাঙ্গালীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। বাংলা স্বাধীনতার জন্য তার গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বাঙ্গালীদের মাঝে বাংলার স্বাধীনতার ডাক দেন। তার জন্য তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি প্রদর্শন করেন । পাকিস্তান অনেককাল যাবত বাঙালির উপদেশ তাদের ক্ষমতা তাদের অত্যাচার তাদের স্বৈরাচারীতা করে আসছিল। বাঙালিদের ওপর তাদের অত্যাচারের কোন সীমা ছিল না। তারা তাদের অভিন্ন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিলেও তারা এদেশকে সব সময় তাদের গোলামীর শৃংখলে বেঁধে রাখতে চেয়েছিল। এদেশের মানুষকে কোন ধরনের অধিকার দিতে তারা রাজি ছিল না। বাঙালির মর্যাদা বাঙালির অধিকার বাঙালির স্বাধীকার কোন কিছুই দিতে প্রস্তুত ছিল না তারা। বাঙ্গালীদের কে তাদের পায়ের কাছে রাখতে চাইতো। বাংলার মানুষের জীবনের কোন মূল্যই ছিলনা তাদের কাছে। ১৯৬৯ সালে যখন বঙ্গবন্ধু বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেন তখনও তারা ক্ষমতা দিতে বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করছিল। যখন বাঙালি তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল, পাকিস্তানিরা নির্দ্বিধায় তাদের ওপর গুলি চালাল। মারা গেল অজস্র মানুষ। বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করেই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখ।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখ।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন সেগুলাে সাজিয়ে লিখ।

বিস্তরিত পড়ুন

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

[পূর্বকথা: ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সামরিক একনায়ক আইয়ুব খান ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর ক্ষমতায় এসে নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। গণতন্ত্রের ধারা অনুসারে পাকিস্তানের শাসনভার পাওয়ার কথা আওয়ামী লীগের অর্থাৎ বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ও গণতন্ত্র হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭১-এর ৩রা মার্চ ঢাকায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন ডেকেছিলেন। কিন্তু কোনাে কারণ ছাড়াই তিনি হঠাৎ ১লা মার্চ এক ঘােষণায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘােষণা করেন। এই ষড়যন্ত্রমূলক ঘােষণা শুনেই পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঝড় ওঠে। জয় বাংলা’, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘তােমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জাগাে জাগাে বাঙালি জাগাে ইত্যাদি স্লোগানে শহর-বন্দর-গ্রাম আন্দোলিত হয়।

এই পটভূমিতেই ১৯৭১-এর ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) প্রায় ১০ লক্ষ লােকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ১৮ মিনিটের ওই ভাষণে তিনি বাঙালির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের আহবান জানান। আবেগে, বক্তব্যে, দিক-নির্দেশনায় ওই ভাষণটি ছিল অনবদ্য। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণটিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ঐতিহাসিক গেটিসবার্গ ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো এই ভাষণটিকে ইন্টারন্যাশনাল মেমােরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে। ঐতিহাসিক ভাষণটি এখানে লিপিবদ্ধ হলাে।]

ভাইয়েরা আমার,

আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বােঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়। কী অন্যায় করেছিলাম? নির্বাচনের পর বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে ও আওয়ামী লীগকে ভােট দেন। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র । তৈরি করবাে এবং এ দেশকে আমরা গড়ে তুলবাে। এদেশের মানুষ অর্থনীতি, রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ দুঃখের সাথে বলতে হয় ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস বাংলার অত্যাচারের, বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস। ২৩ বৎসরের ইতিহাস মুমূর্ষ নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস। বাংলার ইতিহাস এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস।

১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারিনি। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল-ল’ জারী করে ১০ বছর পর্যন্ত আমাদের গােলাম করে রেখেছে। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনে ৭ জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯ সালের আন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন। হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন, তিনি বললেন দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন-গণতন্ত্র । দেবেন, আমরা মেনে নিলাম। তারপর অনেক ইতিহাস হয়ে গেল, নির্বাচন হলাে। আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সাহেবের সাথে দেখা করেছি।

আমি, শুধু বাংলার নয়, পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা হিসেবে তাকে অনুরােধ করলাম, ১৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে | আপনি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দেন। তিনি আমার কথা রাখলেন না, তিনি রাখলেন ভুট্টো সাহেবের কথা। তিনি বললেন, প্রথম সপ্তাহে মার্চ মাসে হবে। আমি বললাম, ঠিক আছে আমরা অ্যাসেম্বলিতে বসব। আমি বললাম অ্যাসেম্বলির মধ্যে আলােচনা করব— এমনকি আমি এ পর্যন্তও বললাম, যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও একজন যদিও সে হয় তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।

ভুট্টো সাহেব এখানে এসেছিলেন, আলােচনা করলেন। বলে গেলেন যে, আলােচনার দরজা বন্ধ নয়, আরও আলােচনা হবে। তারপর অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আমরা আলােচনা করলাম—আপনারা আসুন, বসুন, আমরা আলাপ করে শাসনতন্ত্র তৈরি করবাে। তিনি বললেন, পশ্চিম পাকিস্তানের মেম্বাররা যদি এখানে আসে তাহলে কসাইখানা হবে অ্যাসেম্বলি। তিনি বললেন, যে যাবে তাকে মেরে ফেলা হবে, যদি কেউ অ্যাসেম্বলিতে আসে তাহলে পেশােয়ার থেকে করাচি পর্যন্ত দোকান জোর করে বন্ধ করা হবে। আমি বললাম, অ্যাসেম্বলি চলবে। তারপর হঠাৎ ১ তারিখে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করে দেয়া হলাে।

ইয়াহিয়া খান প্রেসিডেন্ট হিসেবে অ্যাসেম্বলি ডেকেছিলেন। আমি বললাম, আমি যাব। ভুট্টো বললেন, তিনি যাবেন না। ৩৫ জন সদস্য পশ্চিম থেকে এখানে আসলেন। তারপর হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলাে, দোষ দেওয়া হলাে বাংলার মানুষকে, দোষ দেওয়া হলাে আমাকে। বন্ধ করার পর এদেশের মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠল।

আমি বললাম, শান্তিপূর্ণভাবে আপনারা হরতাল পালন করুন। আমি বললাম, আপনারা কল-কারখানা সবকিছু বন্ধ করে দেন। জনগণ সাড়া দিল। আপনার ইচ্ছায় জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার জন্য স্থির প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাে। কী পেলাম আমরা? আমরা পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরিব-দুঃখী নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধেতার বুকের উপর হচ্ছে গুলি। আমরা পাকিস্তানে। সংখ্যাগুরু—আমরা বাঙালিরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি তখনই তারা আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে। টেলিফোনে আমার সাথে তার কথা হয়। তাকে আমি বলেছিলাম, জেনারেল ইয়াহিয়া খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কীভাবে আমার গরিবের উপর, আমার মানুষের বুকের উপর গুলি করা হয়েছে। কী করে আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে, কী করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন। তিনি বললেন, আমি নাকি স্বীকার করেছি ১০ তারিখে রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স হবে।

আমি তাে অনেক আগেই বলে দিয়েছি কীসের রাউন্ড টেবিল, কার সাথে বসবাে? যারা আমার মানুষের | বুকের রক্ত নিয়েছে, তাদের সাথে বসবাে? হঠাৎ আমার সাথে পরামর্শ না করে পাঁচ ঘণ্টার গােপন বৈঠক। করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন তাতে সমস্ত দোষ তিনি আমার উপর দিয়েছেন, বাংলার মানুষের উপর দিয়েছেন।

ভাইয়েরা আমার,

২৫ তারিখে অ্যাসেম্বলি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঐ শহিদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে আরটিসিতে মুজিবুর রহমান যােগদান করতে পারে না। অ্যাসেম্বলি কল করেছেন, আমার দাবি মানতে হবে। প্রথমে সামরিক আইন, ‘মার্শাল-ল’ withdraw করতে হবে। সমস্ত সামরিক বাহিনীর লােকদের ব্যারাকে ফেরত যেতে হবে। যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে। আর জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তারপর বিবেচনা করে দেখবাে, আমরা অ্যাসেম্বলিতে বসতে পারবাে কি পারবাে। এর পূর্বে অ্যাসেম্বলিতে বসতে আমরা পারি না।

আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই। আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দেবার চাই যে, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট-কাছারি, আদালত-ফৌজদারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরিবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে সেজন্য সমস্ত অন্যান্য যে | জিনিসগুলাে আছে, সেগুলাের হরতাল কাল থেকে চলবে না। রিকশা, গরুর গাড়ি, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে—শুধু সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট, সেমি-গভর্নমেন্ট দপ্তর, ওয়াপদা, কোনােকিছু চলবে না। ২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন। এরপর যদি বেতন দেওয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লােককে হত্যা করা হয়—তােমাদের কাছে অনুরােধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তােলাে। তােমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মােকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু—আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তােমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব। তােমরা আমার ভাই, তােমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ তােমাদের কিছু বলবে না। কিন্তু আর আমার বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা করাে না। সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবে না।

আর যে সমস্ত লােক শহীদ হয়েছে, আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, আমরা আওয়ামী লীগের থেকে যদুর পারি তাদের সাহায্য করতে চেষ্টা করবাে। যারা পারেন আমার রিলিফ কমিটিকে সামান্য টাকা-পয়সা পৌছে দেবেন। আর | এই ৭ দিনের হরতালে যে সমস্ত শ্রমিক ভাইয়েরা যােগদান করেছে, প্রত্যেক শিল্পের মালিক তাদের বেতন পৌছে দেবেন। সরকারী কর্মচারীদের বলি, আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হচ্ছে, ততদিন খাজনা ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলাে—কেউ দেবে না। শুনুন, মনে রাখবেন, শত্রুবাহিনী ঢুকেছে নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটতরাজ করবে। এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি, অ-বাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই, তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।

মনে রাখবেন, রেডিও-টেলিভিশনের কর্মচারীরা যদি রেডিওতে আমাদের কথা না শােনে তাহলে কোনাে বাঙালী রেডিও স্টেশনে যাবেন না। যদি টেলিভিশন আমাদের নিউজ না দেয়, কোনাে বাঙালি টেলিভিশনে যাবেন না। ২ ঘন্টা ব্যাংক খােলা থাকবে, যাতে মানুষ তাদের মাইনেপত্র নিতে পারে। পূর্ববাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে এক পয়সাও চালান হতে পারবে না। টেলিফোন, টেলিগ্রাম আমাদের এই পূর্ববাংলায় চলবে এবং বিদেশের সাথে দেয়ানেয়া চলবে না। কিন্তু যদি এই দেশের মানুষকে খতম করার চেষ্টা করা হয়, বাঙালিরা বুঝেসুঝে কাজ করবেন। প্রত্যেক গ্রাম, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তােল এবং তােমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরাে দেবাে। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।

Class 8 Bangla 6th Week Assignment Answer