0

উৎপাদনকারী ও ভোক্তার মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করা বিপণন কার্যাবলির প্রধান উদ্দেশ্য। এইচএসসি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ৯ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২২ সমাধান।

HSC Production Management and Marketing 9th Week Assignment 2022

অ্যাসাইনমেন্ট: উৎপাদনকারী ও ভোক্তার মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করা বিপণন কার্যাবলির প্রধান উদ্দেশ্য।

এইচএসসি উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন ৯ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর

বিপণন কার্যাবলির ধারণ

সাধারণ লোকজন বিপণন কার্য বলতে শুধুমাত্র ক্রয় ও বিক্রয়কেই বুঝে থাকে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষেবিপণন কার্যের পরিধি অনেক বিস্তৃত। বিপণন কার্যাবলীকে এমন কতগুলো কাজ বা সেবার সমষ্টি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় যা উৎপাদকের নিকট থেকে ভোক্তা বা ব্যবহারকারীর নিকট পণ্য বা সেবার প্রবাহ পরিচালিত করার প্রক্রিয়ায় সম্পাদিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ উৎপাদক ও ভোক্তার মধ্যে পণ্য ও সেবার আদান-প্রদানে যেসব কার্যাবলি জড়িত থাকে সেগুলো বিপণন কার্যের আওতায় পড়ে। একটি বিপণন কার্য উৎপাদক নিজে কিংবা মধ্যস্থ ব্যবসায়ী (পাইকার, খুচরা ব্যবসায়ী, আড়তদার) বা ভোক্তারা সম্পাদন করতে পারে।

বিপণন কার্যাবলি উৎপাদক ও ভোক্তার মধ্যবর্তী পর্যায়ে পণ্য বা সেবা পৌছে দেওয়ার জন্য সম্পাদিত হয়ে থাকে। বিপণন কার্যাবলির সাথে পণ্যের স্বত্ত¡ পরিবর্তন,পণ্যের হস্তান্তর, পণ্যের সংরক্ষণ, পণ্যের প্রসারসহ ইত্যাদি জড়িত। বিপণন পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে বিপণন কার্যাবলি নিয়মিত বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। কারণ এর মাধ্যমে বিপণন-দক্ষতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। সাধারণত বিপণনেক্রয়, বিক্রয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ, প্রমিতকরণ ও পর্যায়িতকরণ, অর্থসংস্থান, মোড়কীকরণ, ঝুঁকি-বহন, বাজার তথ্য সংগ্রহ, মূল্য নির্ধারণ, পণ্যের প্রসারইত্যাদি কাজ সম্পাদিত হয়।

বিপণনের বন্টন সংক্রান্ত কার্যাবলী

পরিবহণ: বণ্টন সংক্রান্ত কার্যাবলির মধ্যে পরিবহন অন্যতম। পরিবহন পণ্যের স্থানগত উপযোগ সৃষ্টি করে। আসলে পরিবহন পণ্যের উৎপাদন স্থান এবং ভোগের স্থানের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করে। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির ফলে উৎপাদনে বিশেষায়ন, শ্রমবিভাজন ও বৃহদায়তন উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।

গুদামজাতকরণ: গুদামজাতকরণের মাধ্যমে পণ্যদ্রব্যের সময়গত উপযোগ সৃষ্টি করা হয়। চাহিদা ও যোগানের সাথে এবং এক মৌসুমের পণ্য অন্য মৌসুমে ভোগ করার ক্ষেত্রে গুদামজাতকরণ সহায়তা করে থাকে। উৎপাদন এবং ভোগের মধ্যবর্তী সময়ে পণ্য সংরক্ষণে গুদামজাতকরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

মোড়কিকরণ: পণ্যসামগ্রী সহজে বহনযোগ্য এবং আকর্ষণীয় করার জন্য মোড়কিকরণ প্রয়োজন হয়। এর পরে পণ্যের গুনগত মান বজায় রাখা যায় এবং ফলে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। পণ্যের মান নির্ধারণ এবং শ্রেণীকরণের সাথে মোড়কীকরণ জড়িত। পণ্য হস্তান্তরের সময় মোড়কিকরণ বিশেষ ভূমিকা রাখে।

মান নির্ধারণ-/-প্রমিতকরণ: পণ্যদ্রব্যের মৌলিক গুণাবলীর ভিত্তিতে পণ্য বিন্যস্ত করার প্রক্রিয়াকে মান নির্ধারণ বলে। আলুর চিপস্ তৈরী করার জন্য তিন ধরনের আলুর মান নির্ধারণ করা যায়। যেমন ছোট আলু, বড় আলু এবং মধ্যম আলু। ছোট, বড় এবং মধ্যম হলো তিনটি মান। 

বিপণন কার্যাবলি গুরুত্ব

প্রতিযোগিতার কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে উৎপাদনও বন্টন প্রক্রিয়াদিন দিন জটিল হচ্ছে। এই কারণে বিপণন কার্যাবলির গুরুত্ব বাড়ছে। বিপণন কার্যাবলীর গুরুত্ব নিম্নরূপ:

১. পণ্যের সুষম বন্টন: বিপণন কার্যক্রমের কারণে উদ্বৃত্ত পণ্য অপ্রতুলস্থানে সরবরাহ করে সকল স্থানে পণ্যের সুষম বন্টন করা সম্ভব হয়।

২. উৎপাদন বৃদ্ধি: উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করে পণ্যপ্রস্তুতকরণে উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কাজে বিপণন কার্যক্রম সহযোগিতা করে।

৩. স্থিতিশীল মূল্য: পণ্যের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখে। যারফলে ক্রেতা সাধারণ সহজে ও উপযুক্ত মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারে।

৪. ভোগের বৈচিত্র্য: বিপণন তার কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্রেতা ও ভোক্তারবিভিন্ন চাহিদা ও প্রয়োজন মোতাবেক বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও সেবা সরবরাহ করে। যার ফলে ক্রেতা ও ভোক্তাপণ্যের সমাবেশ থেকে পছন্দ অনুযায়ী পণ্য নির্বাচন করতে পারে।

উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিপণনের কার্যাবলী এমন কতগুলো কাজের সমষ্টি যা ব্যবসায়ের কাজে সুবিধা দেওয়ার সাথে সাথে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে। 

পণ্য বিপণনে ও বিক্রয় এর গুরুত্ব

যেকোন পণ্য বা সেবা উৎপাদনের পর তা বিক্রয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য সাধন করা যায়। পণ্য বিপণনে বিক্রয়ের গুরুত্ব নিম্নরূপ-

  • বিক্রয়ের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতা একটি স্থানে একত্রিত হতে পারে। বিক্রেতা পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাকে জানাতে পারে, আবার ক্রেতার কাছ থেকে পণ্য সম্পর্কে অভিব্যক্তিও জানতে পারে।
  • বিক্রয়ের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে পণ্য বা সেবার মালিকানার বিনিময় হয়। তাই বিক্রয় বিপণন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
  • ভোক্তার সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য বিপণনকারী ক্রেতা বা ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করে বিক্রয়ের মাধ্যমে।
  • বিক্রয় কার্যক্রমের মাধ্যমে বিপণনকারী প্রকৃত ক্রেতা সৃষ্টি করতে পারে, আবার স্থায়ী ক্রেতায় রূপান্তর করতে পারে।
  • পণ্য প্রস্তুত করার পর পণ্য বিক্রয় করে বিপণনকারী বাজারে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমতা রাখতে পারে।
  • বিক্রয়কর্মীদের মাধ্যমে উপযুক্ত ক্রেতা ও ভোক্তার কাছে পণ্য হস্তান্তর করে। পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে বিক্রয়কর্মীকে প্রেষণা প্রদান করা যায়।

প্রমিতকরণ ও পর্যায়িতকরণ এর মধ্যে পার্থক্য

প্রমিতকরণ ও পর্যায়িতকরণ এর মধ্যে পার্থক্য