0

উৎপাদনের পরিবর্তণীয় উপকরণ অণুপাত বিধির সাথে মোট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের সম্পর্ক বিশ্লেষণ। এইচএসসি অর্থনীতি ৭ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান।

উৎপাদনের পরিবর্তণীয় উপকরণ অণুপাত বিধির সাথে মোট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের সম্পর্ক বিশ্লেষণ

বিষয়: অর্থনীতি ১ম পত্র, বিষয় কোড: ১০৯, অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ০৫, স্তর: এইচএসসি, তৃতীয় অধ্যায়: উৎপাদন, উৎপাদন ব্যয় ও আয়।

অ্যাসাইনমেন্ট: উৎপাদনের পরিবর্তনীয় উপকরণ অনুপাত বিধির সাথে মােট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের সম্পর্ক বিশ্লেষণ।

কটি স্টিল মিলের বিনিয়ােগকৃত মূলধনের পরিমাণ স্থির রেখে প্রতি একক শ্রমিক নিয়ােগের ফলে তাদের স্টিল মিলের উৎপাদন মাসিক প্রথমে ক্রমবর্ধমানহারে ও পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমানহারে এবং উৎপাদন ব্যয় প্রথমে ক্রমহ্রাসমানহারে ও পরবর্তীতে ক্রমবর্ধমানহারে হয়। এ সম্পর্ক হতে উৎপাদনের পরিবর্তন এবং মােট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের গাণিতিক বিশ্লেষণ

বিষয়বস্তু

  • ১. উৎপাদন অপেক্ষক গঠন করে তা বর্ণনা করতে পারবে।
  • ২. উৎপাদনের কোনাে একটি উপকরণ বা উপকরণসমূহের পরিবর্তনের ফলে উৎপাদনের পরিবর্তন ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৩. উৎপাদন ব্যয়ের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • ৪. মােট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের মধ্যে তুলনা করতে পারবে।

নির্দেশনা

  • ক. উৎপাদন অপেক্ষক
  • খ. পরিবর্তনীয় উপকরণ
  • গ. অনুপাত বিধি
  • ঘ. উৎপাদন ব্যয় ধারণা
  • ঙ. মােট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের সূচি ও চিত্র

এইচএসসি অর্থনীতি ৭ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট ২০২১ উত্তর

ক) উৎপাদন অপেক্ষকঃ

অপেক্ষক বলতে সাধারণত: স্বাধীন চলকের উপর অধীন চলকের নির্ভরশীলতার সম্পর্ককেই বুঝায়। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় উপাদান বা উপকরণ প্রয়োজন হয়। উৎপাদনের ক্ষেত্রে উপকরণ যথা- ভূমি, শ্রম, মূলধন, সংগঠন হলো স্বাধীন চলক এবং উৎপাদন হলো অধীন চলক। উপকরণের ব্যবহার ও পরিমাণের উপর সাধারণত: উৎপাদন নির্ভর করে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদন ও উপকরণসমূহের মধ্যে যে কারিগরী ও গাণিতিক সম্পর্ক বিরাজ করেতাকেই উৎপাদন অপেক্ষক বলে।

১। স্বল্পমেয়াদী উৎপাদন অপেক্ষক (Short-run Production Function)

স্বল্পকাল হচ্ছে এমন একটি সময় যখন উৎপাদন ক্ষেত্রে কমপক্ষে একটিউপকরণ স্থির এবং কেবল মাত্র কয়েকটি উপকরণ পরিবর্তন করা যায়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যে উৎপাদন অপেক্ষকে স্থির উপকরণের সাথে পরিবর্তনশীল উপকরণ বিবেচনা করা হয় তকে স্বল্পমেয়াদী উৎপাদন অপেক্ষক বলে। যেমন-

0 = f(L,K°)

এখানে, = উৎপাদনের পরিমাণ 

L = শ্রমের পরিমাণ যা পরিবর্তনশীল 

K° = মূলধনের পরিমাণ যা স্থির ।

২। দীর্ঘমেয়াদী উৎপাদন অপেক্ষক (Long-term Production Function)

দীর্ঘকালে সব উৎপাদন উপকরণ পরিবর্তনশীল। সুতরাং যে উৎপাদন অপেক্ষকে সকল উপকরণ পরিবর্তনশীল ধরা হয় তাকে দীর্ঘমেয়াদী উৎপাদন অপেক্ষক বলে। যেমন:

 0 = f(L, K) 

এখানে, 

0 = উৎপাদনের পরিমাণ 

L = শ্রমের পরিমাণ যা পরিবর্তনশীল 

K = মূলধনের পরিমাণ যা পরিবর্তশীল

খ) পরিবর্তনশীল উপকরণ অনুপাত বিধিঃ

পরিবর্তনশীল উপাদান অনুপাত বিধি (The law of Variable Proportions) 

পরিবর্তনশীল উপাদান অনুপাত বিধিটি ক্রমহাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধিরই আধুনিক সংস্করন। এ বিধিতে উৎপাদনের অন্যান্য উপকরন স্থির রেখে একটি মাত্র উপকরণের পরিবর্তন সাপেক্ষে উপকরণ অনুপাতের ভিন্নতার ভিত্তিতে উৎপাদনের পরিবর্তন পর্যালোচনা করা হয়েছে।

মনে করি K°(ভূমি) স্থির উপাদান এবং L (শ্রম) হল পরিবর্তনশীল উপাদান। প্রাথমিক অনুপাত = থেকে 2L 3L 4L 5L= তে অনুপাত পরিবর্তন হতে থাকে। পরিবর্তনশীল উপাদান বাড়াতে থাকলে মোট Ke’ Ke’ Ke Ke উৎপাদন (TP) ,গড় উৎপাদন (AP) এবং প্রান্তিক উৎপাদনের (MP) মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। তাই স্থির ও পরিবর্তনশীল উপাদনের অনুপাতের পরিবর্তনের সাথে মোট উৎপাদন (TP),গড় উৎপাদন (AP) এবং প্রান্তিক উৎপাদন (MP) কি হারে পরিবর্তন হয় তা পরিবর্তনশীল উপাদান অনুপাত বিধির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়। [newresultbd.com] অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে যদি উৎপাদনের অন্যান্য উপাদানকে স্থির রেখে একটি উপকরণকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করা যায় তাহলে প্রথম দিকে প্রান্তিক উৎপাদন (MP), গড় উৎপাদন (AP) ও মোট উৎপাদন (TP) বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এক পর্যায়ে প্রান্তিক উৎপাদন (MP) শুন্যে পৌঁছে এবং মোট উৎপাদন সর্বোচ্চ হয়। এরপরও যদি পরিবর্তনশীল উপাদানটির অতিরিক্ত একক উৎপাদনে নিয়োগ করা হয় তাহলে গড় উৎপাদন (AP) ধনাত্মক থাকলেও প্রান্তিক উৎপাদন (MP) ঋনাত্মক হবে। ফলে মোট উৎপাদন (TP) হ্রাস পাবে। এটাকেই পরিবর্তনশীল উপাদান অনুপাত বিধি বলে। অনুমিত শর্ত:

১) কারিগরি অবস্থা অপরিবর্তিত থাকবে।

২) একটি উপাদান পরিবর্তনশীল এবং অন্যান্য উপাদান সমূহ স্থির থাকে। 

৩) পরিবর্তনশীল উপাদান সমস্বত্ব ও বিভাজ্য হবে। 

৪) স্বল্পকালীন অর্থনীতি বিবেচ্য।

পরিবর্তনশীল উপাদান অনুপাত বিধির ব্যাখ্যা (Explanation of the Law of Variable Proportion) 

অন্যান্য উপাদান (যেমন ভূমি, বীজ, সার) স্থির রেখে একটি উপাদান (যেমন শ্রম) বাড়াতে থাকলে উৎপাদনের ক্ষেত্রে তিনটি পর্যায় সৃষ্টি হয়। প্রথম দিকে পরিবর্তনশীল উপাদান বাড়ানোর ফলে মোট উৎপাদন (TP) ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে কারণ উপাদানটির প্রান্তিক উৎপাদন (MP) ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। তবে একটি বিন্দুর পর প্রান্তিক উৎপাদন (MP) ক্রমহ্রাসমানহারে বাড়ে এবং এক সময় শূন্যে পৌছে। তখন মোট উৎপাদন (TP) সর্বোচ্চ হয়। এরপর যদি পরিবর্তিত উপকরণের একক বৃদ্ধি করা হয় তাহলে প্রান্তিক উৎপাদন (MP) ঋণাত্মক হবে এবং মোট উৎপাদন (TP) কমে যাবে। ছক ১-এর মাধ্যমে আমরা বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে পারি।

ছক-১ এর মাধ্যমে আমরা পরিবর্তিত অনুপাত বিধিটি ব্যাখ্যা করতে পারি। আনুসঙ্গিক স্থির উপকরণ সহ ১ বিঘা জমির উপর পরিবর্তনশীল উপকরণ শ্রম নিয়োগের ফলে উৎপাদন হচ্ছে। ছক-১ এ লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রথম দিকে মোট, গড় ও প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোট উৎপাদন সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌছে যখন ৭ একক শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। তারপর তা ক্রমশ কমতে থাকে। [newresultbd.com] গড় উৎপাদন ৪ একক শ্রমিক নিয়োগ পর্যন্ত ক্রমাগত বাড়তে থাকে। প্রান্তিক উৎপাদন ক্রমাগত বাড়তে থাকে যতক্ষন ৩ একক পর্যন্ত শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। তখন MP সর্বোচ্চ হয়। তারপর ক্রমশ তা কমতে থাকে। গড় উৎপাদন ৪ একক শ্রমিক নিয়োগ পর্যন্ত ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অথচ প্রান্তিক উৎপাদন সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌছে ৩ একক শ্রম নিয়োগের সময়। তারপর তা কমতে শুরু করে। এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় যে, উৎপাদন কমার প্রবনতা মোট, গড় ও প্রান্তিকের ক্ষেত্রে এক রকম নয়। বরং প্রথমে প্রান্তিক উৎপাদন কমছে, পরে গড় উৎপাদন এবং সর্বশেষে মোট উৎপাদন কমতে থাকে। 

চিত্র ৪.১ লম্ব অক্ষে মোট বস্তুগত উৎপাদন (TPP), গড় বস্তুগত উৎপাদন (APP) ও প্রান্তিক বস্তুগত উৎপাদন (MPP) এবং ভূমি অক্ষে পরিবর্তনশীল উপকরণের একক (যেমন: শ্রমিক) এর বিভিন্ন একক দেখানো হয়েছে। মোট বস্তুগত উৎপাদন (TPP) রেখা A বিন্দু পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে। পরে C বিন্দুতে মোট বস্তুগত উৎপাদন (TPP) রেখা সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছেছে। এরপর থেকে মোট উৎপাদন কমতে শুরু করে।

গ) উৎপাদন ব্যয় ধারণাঃ

কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত: কোন দ্রব্য বা সেবা উৎপাদনের জন্য উৎপাদকারী উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যে ব্যয় করে থাকে তাকে উৎপাদন ব্যয় বলে।

উদ্যোক্তাকে উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন প্রকার উপকরণ নিয়োগ করতে হয়। আর এ উপকরণের মূল্য বাবদ মূল্য পরিশোধ করতে হয়। যেমন- ভূমি ব্যবহারের জন্য খাজনা, শ্রমের জন্য মজুরি, মূলধনের জন্য সুদ, সংগঠনের জন্য মুনাফা এবং কাঁচামাল ক্রয়, পরিবহন খরচ, কারখানা ভাড়া ইত্যাদির জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয়। এই সকল অর্থ ব্যয়ের সমষ্টিই হলো উৎপাদন ব্যয়।

(১) স্বল্পকালীন উৎপাদন ব্যয় 

স্বল্পকাল বলতে এমন একটি সময়কে বুঝায় যখন কমপক্ষে একটি উৎপাদনের উপকরণ স্থির থাকে এবং এর কোন পরিবর্তন করা যায় না। যেমন- মেশিনারি, ফার্মের আয়তন, বিল্ডিং, প্রযুক্তি ইত্যাদি। কিন্তু উৎপাদন কার্যক্রমে নিয়োজিত পরিবর্তনীয় উপকরণ সমূহের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটিয়ে উৎপাদনের হ্রাস-বৃদ্ধি করা সম্ভব। [newresultbd.com] যেমন- কাঁচামাল, শ্রমিক, মজুরি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি পরিবর্তনীয় উপকরণ হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি করা সম্ভব। স্বল্পকালে পরিবর্তনীয় উপকরণগুলোর জন্য যে ব্যয় হয় তাকে স্বল্পকালীন উৎপাদন ব্যয় বলে। স্বল্পকালে উৎপাদনের পরিমাণ যাই হোক না কোন ফার্মকে স্থির উপকরণের ব্যয় বহন অব্যাহত থাকে। স্বল্পকালে উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও স্থির ব্যয় বহন অব্যাহত থাকে। এজন্য স্বল্পকালীন ব্যয়ের একটি বড় অংশ হলো স্থির ব্যয়।

(২) দীর্ঘকালীন উৎপাদন ব্যয়

দীর্ঘকাল বলতে এমন এক সময়কে বুঝায়, যে সময়ে উৎপাদনের সকল উপকরণ পরিবর্তন করে উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি করা সম্ভব। দীর্ঘকালে ফার্মের স্থির ব্যয় বলতে কিছু থাকে না। উৎপাদনের সকল ব্যয়ই পরিবর্তনশীল ব্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়। দীর্ঘকালে ফার্মের স্থির ব্যয়ের পরিবর্তন সাধন করে ফার্মের আকার ও আয়তন বাড়ানো বা কমানো সম্ভব। সংক্ষেপে বলা যায়, স্বল্পকালে ফার্মের স্থির ব্যয় ও পরিবর্তনীয় ব্যয়ের  সমষ্টি হলো মোট উৎপাদন ব্যয়। কিন্তু দীর্ঘকালে ফার্মের স্থির ব্যয় বলে কিছু থাকে না। সকল ব্যয়ই হলো পরিবর্তশীল ব্যয়।

নিন্মে স্বল্পকালীন উৎপাদন ব্যয়ের দুটি অংশ – ১) স্থির ব্যয় ও ২) পরিবর্তনশীল ব্যয় ব্যাখ্যা করা হলোঃ

১) মোট স্থির ব্যয় 

সাধারণত: উৎপাদনের পরিবর্তনের ফলে যে ব্যয়ের কোন পরিবর্তন হয় না তাকে স্থির ব্যয় বলে। যেমনবাড়ীভাড়া, যন্ত্রপাতি, স্থায়ী শ্রমিক, প্রযুক্তি। স্বল্পকালে উৎপাদনের পরিমাণ যাই হোক না কোন উৎপাদনকারীকে এ সকল ব্যয় বহন করতে হয়। উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও উৎপাদনকারীকে এই স্থির ব্যয় বহন করতে হয়। এই স্থির ব্যয় সব সময় অপরিবর্তিত থাকে। মোট স্থির ব্যয়কে ঞঋঈ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

২) মোট পরিবর্তনশীল ব্যয় 

সাধারণত: উৎপাদনের পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যে ব্যয়ের পরিবর্তন হয় তাকে পরিবর্তনশীল ব্যয় বলে। উৎপাদন কাজে নিয়োজিত উপকরণসমূহ যেমন- কাঁচামাল, শ্রমিক, পরিবহন, বিজ্ঞাপন ইত্যাদির খরচকে  পরিবর্তনশীল খরচ বলে। উৎপাদন হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে পরিবর্তনশীল খরচের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। যদি উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তবে পরিবর্তনশীল ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদনের পরিমাণ হ্র্সা পেলে পরিবর্তনশীল ব্যয় পরিমাণ হ্রাস পায়।

ঘ) মোট,  গড় প্রান্তিক ব্যয়ের সম্পর্ক বিশ্লেষণঃ

মোট উৎপাদন, গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদনের মধ্যে সম্পর্ক (Relationship between Total Product, Average Product and Marginal Product) 

কোন উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের মোট উৎপাদন, গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদনের মধ্যে সম্পর্ক নিম্নরূপঃ 

১। মোট উৎপাদন (Q) যখন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকে গড় উৎপাদন (AP) ও প্রান্তিক উৎপাদন (MP) তখন বাড়তে থাকে। 

২। মোট উৎপাদন যখন ক্রমহ্রাসমান হারে কমতে থাকে তখন গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদন হ্রাস পেতে থাকে। 

৩। মোট উৎপাদন যখন ক্রমবর্ধমান হার থেকে ক্রমহাসমান হারে মোড় নেয় (Point of inflection) তখন  প্রান্তিক উৎপাদন সর্বোচ্চ হয়। 

৪। মোট উৎপাদন যখন সর্বোচ্চ হয়, প্রান্তিক উৎপাদন তখন শূণ্য হয়। 

৫। মোট উৎপাদন যখন সর্বোচ্চ থেকে ক্রমহাসমান হারে কমতে থাকে প্রান্তিক উৎপাদন তখন ঋণাত্মক হয়। 

৬। গড় উৎপাদন যখন সর্বোচ্চ; তখন AP= MP 

৭। মোট উৎপাদন যখন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকে তখন প্রান্তিক উৎপাদন গড় উৎপাদন থেকে বেশী হয়। অপরপক্ষে মোট উৎপাদন যখন ক্রমহাসমান হারে কমতে থাকে তখন গড় উৎপাদন প্রান্তিক উৎপাদন থেকে বেশী হয়। অর্থাৎ প্রান্তিক উৎপাদন গড় উৎপাদনকে প্রভাবিত করে।

নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে TPL, AP ও MPH এর মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হলো :

চিত্র ৯.২.২ এ OX অক্ষে পরিবর্তনশীল উপকরণ শ্রম (L) এবং OY অক্ষে মোট উৎপাদন (TPL), গড় উৎপাদন (APL) এবং প্রান্তিক উৎপাদন (MPL) নির্দেশ করা হয়েছে। চিত্রে দেখা যায়, শ্রম যখন L1 পর্যন্ত নিয়োগ করা হয় তখন মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকে যা TP রেখার m বিন্দু দ্বারা নির্দেশিত এবং এ অবস্থায় MPL সর্বোচ্চ হয়। এর পরে যদি শ্রম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা যায় তবে মোট উৎপাদন ক্রমবর্ধমান হার থেকে ক্রমহ্রাসমান হারে মোড় (Point of inflection)  নেয়। [newresultbd.com] শ্রমের পরিমাণ L2 পরিমাণ বৃদ্ধিতে গড় উৎপাদন সর্বোচ্চ হয়। 0 অক্ষ থেকে অঙ্কিত ON রেখাটি n বিন্দুতে স্পর্শক বলে বিবেচিত হয়। এ অবস্থানে গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদন সমান হয়  APL = MPL এরপরে শ্রমের পরিমাণ বৃদ্ধি করে L3 পর্যন্ত করা হলে মোট উৎপাদন q বিন্দুতে সর্বোচ্চ হয় এবং শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদন (MPL) শূণ্য হয়। চিত্রানুযায়ী L3 এর পর আরো অধিক শ্রম নিয়োগ করা হলে মোট উৎপাদন কমতে থাকে এবং শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদন ঋণাত্মক হয়।

সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি, মোট উৎপাদন, গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদন একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত।

Get HSC Economics Assignment Answer

[Join]