0

ভারতবর্ষে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা। এইচএসসি ইতিহাস ষষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ২০২২ সমাধান।

ভারতবর্ষে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা

বিষয়: ইতিহাস, পত্র: প্রথম, বিষয় কোড: ৩০৪, স্তর: এইচএসসি, প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটি প্রথম অধ্যায় “ইউরোপীয়দের আগমন: ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা” থেকে।

অ্যাসাইনমেন্ট: ভারতবর্ষে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনা।

বিষয়বস্তু

  • ভারতবর্ষে আধিপত্য বিস্তারের ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভূমিকা মূল্যায়ন করতে পারবে
  • ভারতবর্ষে ইংরেজ কোম্পানির রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব মূল্যায়ন করতে পারবে
  • ইংরেজ কোম্পানির অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারে বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব মূল্যায়ন করতে পারবে
  • ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেওয়ানি লাভের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে
  • ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠায় দত্ত শাসন এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারবে

নির্দেশনা

  • ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমন বর্ণনা
  • ভারতবর্ষে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রম
  • চূড়ান্ত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার বক্সার যুদ্ধের তাৎপর্য বিশ্লেষণ
  • চূড়ান্ত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার দেওয়ানী ও দ্বৈত শাসন
  • চূড়ান্ত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ফলাফল বিশ্লেষণ

এইচএসসি ২০২২ ষষ্ঠ সপ্তাহের ইতিহাস বিষয়ের নমুনা উত্তর

ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রম

NewResultBD.Com

ক) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমনের বর্ণনা

ইংরেজরা হচ্ছে বণিকের জাত। ১৫৯৯ খ্রি. ইংরেজ বণিকরা প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বাণিজ্য করার জন্যে গঠন করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৬০০ খ্রি. রাণী এলিজাবেথ এই কোম্পানিকে রাজকীয় সনদ বা চার্টার 

প্রদান করেন এবং তিনি স্বয়ং এই কোম্পানির একজন অংশীদার ছিলেন। সতের শতকের প্রথম দশকেই ইংরেজরা ভারতে বাণিজ্যের জন্যে পৌঁছে যায়। রাজকীয় অনুগ্রহের আশায় ক্যাপ্টেন হকিন্স নামে এক ব্যক্তিকে আগ্রায় মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছে পাঠানো হয়। প্রথমদিকে তাঁর প্রতি সৌজন্য ও সম্মান প্রদর্শন করা হলেও পরবর্তীকালে পর্তুগিজদের ষড়যন্ত্রে তিনি আগ্রার রাজদরবার থেকে বিতাড়িত হন। ফলে তাদের সাথে পর্তুগিজদের সংঘাত অনিবার্য ছিল এবং ১৬১২ খ্রি. সুরাটের সোয়ালী নামক স্থানে ইংরেজরা পর্তুগিজদের পরাজিত করে। ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দে আবারও পর্তুগিজরা পরাজিত হয়। পর্তুগিজ-ইংরেজ সংঘর্ষে ইংরেজদের বিজয়ে মুঘলরা বুঝে গিয়েছিল যে, ইংরেজদের সাহায্য নিয়ে নৌপথে পর্তুগিজদের আধিপত্য খর্ব করা যাবে। তদুপরি দেশীয় বণিকরা একাধিক বিদেশী ক্রেতা পাবে এবং পণ্যদ্রব্যেরও চড়ামূল্য পাবে এই ধারণা মুঘলদের হয়েছিল। এই চিন্তাধারা থেকে মুঘল শাসকরা এক ফরমানের মাধ্যমে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারতে কিছু বাণিজ্য কুঠি বা ফ্যাক্টরি স্থাপনের অনুমতি প্রদান করে। ইংরেজরা কিছুদিন পরে মুঘলদের কাছ থেকে আরো অনেক সুবিধা পেয়েছিল। ইংল্যান্ড থেকে রাজদূত টমাস রো মুঘল রাজদরবারে উপস্থিত হয়ে ভারতের সর্বত্র বাণিজ্য কুঠি স্থাপন এবং অবাধ যাতায়তের অধিকার আদায় করে নেন। এতে পর্তুগিজরা প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়। ফলে তারা ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং ১৬২০ খ্রি. এক ভয়ঙ্কর নৌযুদ্ধে পর্তুগিজরা পরাজিত হয়। ১৬৩০ খ্রি. পর্তুগিজ-ইংরেজ বৈরিতার অবসান হয় এবং ১৬৩২ খ্রি. বিবাহের যৌতুক হিসেবে পর্তুগিজরা বোম্বাই দ্বীপটি ইংরেজদের প্রদান করে। উল্লেখ্য সে সময়ে ইংল্যান্ডের রাজা ২য় চার্লস পর্তুগিজ রানীকে বিবাহ করেছিলেন। 

খ) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যক্রমের বর্ণনা 

বাণিজ্য বৃদ্ধির পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৬৮৬ খ্রি. থেকে রাজ্য স্থাপন ও রাজ্য শাসনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করল। ফলে ঐ বৎসর বাংলায় ইঙ্গ-মুঘল সংঘর্ষ হয় এবং ইংরেজরা বাংলা থেকে বিতাড়িত হয়। কিন্তু জব চার্নক নামক একজন দূরদর্শী ইংরেজ কর্মকর্তা আপোষের প্রচেষ্টা চালান। ১৬৯০ খ্রি. তিনি কলিকাতার সুতানটিতে ফিরে আসেন। মূলত তাঁর সময়ই (১৬৯০ খ্রি.) কলিকাতা নগরীর পতন হয়। ১৬৯৮ খ্রি. কলিকাতা, সুতানটি, মান্নানের গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রামের জমিদারী লাভ করে কোম্পানি। ১৭০০ খ্রি. বাংলায় ইংরেজ বাণিজ্য কুঠিগুলো একত্রিত করে একটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঐ বছরই একটি সুরক্ষিত দুর্গ স্থাপন করা হয় এবং ইংল্যান্ডের রাজা ৩য় উইলিয়ামের নামানুসারে নাম রাখা হয় ফোর্ট উইলিয়াম। নবগঠিত কাউন্সিলের সদর দপ্তর স্থাপিত হয় ফোর্ট উইলিয়ামে এবং এর প্রথম প্রেসিডেন্ট বা গভর্নর নিযুক্ত হন চার্লস আয়ার।

ইতোমধ্যে বাংলা এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ইংরেজরা অন্যান্য ইউরোপীয় জাতিকে বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দিতায় হারিয়ে দেয়। শুধুমাত্র ফরাসিরা বিভিন্ন অঞ্চলে ইংরেজদের সাথে প্রতিদ্বন্দিতায় লিপ্ত ছিল। ইংরেজরা বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ের জন্যে বিভিন্ন কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং মুঘল রাজদরবারে দূত প্রেরণ অব্যাহত রাখে। এই নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলও তারা পায়। ১৭১৭ খ্রি. মুঘল সম্রাট ফররুখশিয়ার

এক ফরমানে বাংলা, বোম্বাই এবং মাদ্রাজে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার প্রদান করেন। একই সময় ইংরেজরা নিজেদের মুদ্রা প্রচলনের অধিকার লাভ করে। অনেক ঐতিহাসিক এই ফরমানকে বাংলা তথা ভারতবর্ষে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্যে দায়ী করেছেন। বস্তুত, বাংলা তথা দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে এক যুগসন্ধিক্ষণে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বণিকরা বাংলা, মাদ্রাজ ও বোম্বাই-এ তাদের ভবিষ্যত সাম্রাজ্যের ভিত্তি নিপুণভাবে স্থাপন করে। 

গ) বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য

বক্সারের যুদ্ধ বাংলার পাশাপাশি পুরো ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে দিয়েছিল। তাই এর ফল যুগান্তকারী এবং সুদূরপ্রসারী। অনেক দিক থেকে এ যুদ্ধ পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। নিচে এর গুরুত্বগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা কর হলো:

১. এ যুদ্ধে পরাজিত দিল্লির মুঘল সম্রাট শাহ আলম ইংরেজদের পক্ষে যোগদান করে। মূলত সম্রাট শাহ আলমের সঙ্গে ইংরেজদের একটা চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তির বলে কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দিউয়ানি লাভ করে।

২. অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা রোহিলাখন্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

৩. যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীর কাশিম গা ঢাকা দিয়েছিলেন। অবশেষে ১৭৭৭ সালের দিকে দিল্লির কাছে তার মৃত্যু হয়। অনেকের ধারণা বাংলার এই শেষ স্বাধীনতাকামী নবাবকে হত্যা করা হয়েছিল। সম্রাট শাহ আলমের সঙ্গে ইংরেজদের একটি চুক্তি হয়েছিল যে চুক্তির বলে কোম্পানি বাংলা বিহার, উড়িষ্যার দিউয়ানি লাভ করে।

৪. এ যুদ্ধের ফলে মীরকাশিমের ইংরেজ বিতাড়ণ ও স্বাধীনতা রক্ষার শেষ স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়। বলতে গেলে উপমহাদেশে ইংরেজ প্রভাব-প্রতিপত্তি বহুগুণে বেড়ে যায়। 

৫. এ যুদ্ধের ফলে উপমহাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও বিনা বাধায় ইংরেজ আধিপত্য বিস্তারের পথ উন্মুক্ত হয়েছিল। তারা এর পর থেকেই ভারতবর্ষের নানা স্থানে কুঠি নির্মাণ শুরু করে।

৬. কোম্পানির যোদ্ধারা অযোধ্যার নবাবের নিকট থেকে কারা ও এলাহাবাদ অঞ্চল দু’টি কেড়ে নিয়েছিল।

৭. বক্সারের যুদ্ধে কেবলমাত্র মীর কাশিম পরাজিত হননি। এযুদ্ধে স্বয়ং সম্রাট শাহ আলম ও সুজাউদ্দৌলাও পরাজিত হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে দিল্লি থেকে শুরু করে বাংলা পর্যন্ত সমগ্র উত্তর ভারত ইংরেজদের অধীনে চলে গিয়েছিল।

৮. বক্সার যুদ্ধের ফলে ক্লাইভ দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্রাটের কাছ থেকে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার দিওয়ানি (রাজস্ব আদায়ের কর্তৃত্ব) লাভ করে। 

ঘ) দিওয়ানি ও দ্বৈত শাসনের প্রভাব 

ক্লাইভ দেশ থেকে ফিরে প্রথমেই পরাজিত অযোধ্যার নবাব এবং দিল্লীর সম্রাটের দিকে নজর দেন। তিনি অযোধ্যার পরাজিত নবাবের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করেন। তার বিনিময়ে আদায় করে নেন কারা ও এলাহাবাদ জেলা দুটি। যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করেন পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। অপরদিকে দেওয়ানি শর্ত সম্পর্কিত দুটি চুক্তি করেন। একটি দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের সঙ্গে, এতে কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি দান করা হয়। এর বিনিময়ে ছাব্বিশ লক্ষ টাকা নবাব প্রতিবছর সম্রাট কে পাঠাবেন। এই টাকা নিয়মিত পাঠাবার জামিনদার হবে কোম্পানি। ইতিহাসে এটি এলাহাবাদ চুক্তি নামে পরিচিত। অপর চুক্তিটি হয় মীর জাফরের নাবালক পুত্র নবাব নাজিম-উদ-দ্দৌলার সঙ্গে। বাৎসরিক তেপ্পান্ন লক্ষ টাকার বিনিময়ে নবাব কোম্পানির দেওয়ানি লাভের সকল শর্ত মেনে নেন। এই দুটি চুক্তির ফলে যে দেওয়ানি লাভ করা হয় তাতে এ অঞ্চলে কোম্পানির ক্ষমতা একচেটিয়া বৃদ্ধি পায়। ফলে সমস্ত ক্ষমতা চলে যায় কোম্পানির হাতে। অপরদিকে দেওয়ানি লাভের ফলে কোম্পানির যে আয় হবে তা দিয়ে কোম্পানির সমস্ত খরচ কুলিয়ে ব্যবসায়ের সমস্ত পুঁজি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। সুতরাং দেওয়ানির গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় যে,

  • দেওয়ানি লাভ কোম্পানির শুধু রাজনৈতিক নয় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বিশাল বিজয়। সম্রাট ও নবাব উভয়েই ক্ষমতাহীন শাসকে পরিণত হন। প্রকৃতপক্ষে তারা হয়ে যান কোম্পানির পেনশনভোগী কর্মচারী।
  • দেওয়ানি লাভের ফলে এবং নবাব কর্তৃক প্রদত্ত শর্ত অনুযায়ী শুল্কহীন বাণিজ্যের কারণে কোম্পানির কর্মচারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের অর্থ লোভ দিনদিন বেড়ে যেতে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে দেশীয় বণিক শ্রেণি, সাধারণ মানুষ। তাদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
  • দেওয়ানি লাভের ফলে বাংলা থেকে প্রচুর অর্থ সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার হতে থাকে। এর পরিমাণ এতটাই ছিল যে এই অর্থের বলে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল।

ঙ) চূড়ান্ত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ফলাফল বিশ্লেষণ

রবার্ট ক্লাইভ দেওয়ানি সনদের নামে বাংলার সম্পদ লুণ্ঠনের একচেটিয়া ক্ষমতা লাভ করে। দিল্লি কর্তৃক বিদেশি বণিক কোম্পানিকে এই অভাবিত ক্ষমতা প্রদানে সৃষ্টি হয় দ্বৈত শাসনের। অর্থাৎ যাতে করে কোম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা, নবাব পরিণত হন ক্ষমতাহীন শাসকে। অথচ নবাবের দায়িত্ব থেকে যায় ষোলআনা। ফলে বাংলায় এক অভ‚তপূর্ব প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়। যার চরম মাসুল দিতে হয় এদেশের সাধারণ জনগোষ্ঠিকে। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে (১১৭৬ বঙ্গাব্দ) গ্রীষ্মকালে দেখা দেয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। 

ক্লাইভের দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা এদেশের জনগণের জন্য ছিল এক বিরাট অভিশাপ । এ ব্যবস্থায় শাসন দায়িত্ব নবাবের হাতে রইল অথচ অর্থনৈতিক কোন ক্ষমতা ও অধিকার তাঁর রইল না। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় কোন দায়-দায়িত্ব কোম্পানির রইল না, কিন্তু প্রশাসনের মূল ক্ষমতা অর্থাৎ অর্থনৈতিক ক্ষমতা থেকে গেল কোম্পানির হাতে। তদুপরি নায়েব নাযিম নিয়ােগের ক্ষমতা কোম্পানির হাতে থাকায় শাসন পরিচালনাও তাদের ইচ্ছাধীন হয়ে যায়। এভাবে নবাব ক্ষমতাহীন হয়ে যান এবং প্রকৃত ক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়।

এই ব্যবস্থায় দিউয়ানী পরিচালনার ভার ছিল রেজাখানের হাতে। তবে রাজস্ব হার বাড়ানাে-কমানাের দায়িত্ব থেকে গেল কোম্পানির হাতে। কোম্পানির ইচ্ছামত উচ্চহারে রাজস্ব নির্ধারণ, কোম্পানি কর্মচারীদের দুর্নীতি ও লুঠপাট, কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ব্যবসা, ইংল্যান্ডে সম্পদ পাচার, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোম্পানির একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদির ফলে সাধারণ জনগনের উপর বিপর্যয় নেমে আসলো কোম্পানির চূড়ান্ত আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

Get HSC History Assignment Answer

[Join]