বেকিং পাউডর/ বর্তমান বাজারে বেকিং পাউডারের মূল্য কত?

বেকিং পাউডার হলো একটি রাসায়নিক খামির এজেন্ট যা খাবারকে ফোলাতে এবং নরম করতে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে যেসকল উপাদানগুলো রয়েছে তা হলো- ক্ষার, সোডিয়াম- বাইকার্বোনেট, এবং টারটার ক্রিম। এই উপাদানগুলোকে সঠিক অনুপাতে একত্রিত করে এবং তারপর তাদের প্যাকেজিং করে তৈরি করা হয়। এই পাউডার দেখতে অনেকটা চালের ময়দার মতো। আর বাজারে দুই ধরনের বেকিং পাউডার পাওয়া যায়। (১) সিংগেল অ্যাক্টিং বেকিং পাউডার (২) ডবল অ্যাক্টিং বেকিং পাউডার। আসুন বেকিং পাউডার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।  

সিংগেল অ্যাক্টিং বেকিং পাউডার 

এই পাউডারটি আর্দ্র। এদের সাথে তরল জাতীয় কিছু মিশ্রিত করা হলে এটি গ্যাস উৎপাদন করে অর্থাৎ ফুলে উঠে। এই কারণে উক্ত পাউডারে টারটার এবং টারটারিক অ্যাসিড (C4H606) ক্রিম থাকার কারনে এই পাউডারে তরল মিশ্রিত হলে দ্রুত গ্যাস তৈরি করে। 

ডবল অ্যাক্টিং বেকিং পাউডার  

এই পাউডারটি অম্লীয়। এতে দুটি অম্লীয় উপাদান থাকে, সেটি হচ্ছে অ্যালাম এবং টারটার ক্রিম। প্রাথমিকভাবে এতে অল্প পরিমাণে গ্যাস বের হয় যখন এটি তরলের সাথে মিশে যায়। এই ধরনের গুঁড়ো ব্যাটারকে দীর্ঘ সময় বেকড অবস্থায় রেখে দিতে সাহায্য করে। এই কারণে যদি আপনি পিঠা বা কেক তৈরি করার চিন্তা করে থাকেন তাহলে এই পাউডারটি ব্যবহার করুন। বাজারে এই পাউডারই বেশি পাওয়া যায়। 

বেকিং পাউডার এর ইতিহাস 

রসায়নবিদ এবেন নর্টন হর্সফোর্ড ১৮৫৬ সালে, প্রথম আধুনিক বেকিং পাউডার আবিস্কার করেন। হর্সফোর্ড মূলত পশুর হাড় সিদ্ধ করে মনোক্যালসিয়াম ফসফেট তৈরি করেন। তাই মনোক্যালসিয়াম ফসফেট একটি অ্যাসিড হিসাবে কাজ করে যা বেকিং সোডার সাথে মিলিত হয়ে C02 উৎপাদন করে। ১৮৮০ -এর দশকে, হর্সফোর্ডের কোম্পানি মনোক্যালসিয়াম ফসফেট অনেক কম খরচে উৎপাদন করতে সক্ষম হন। তারপর থেকেই এই পাউডার বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু হয়।

 

বেকিং পাউডার এবং বেকিং সোডার মধ্যে পার্থক্য কী? 

বেকিং পাউডার এবং বেকিং সোডা এই দুটো উপাদানই খাবার ফুলাতে সাহায্য করে। এই দুটো উপাদানই কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন করে। তাই এর মাধ্যমে খাবার ফুলে উঠে। এদের মধ্যে পার্থক্যটা সহজ করে বুঝিয়ে বলছি:- 

বেকিং পাউডারে বেকিং সোডা থাকে সাথে আরও অনেক ধরনের উপাদান থাকে। যেটি আপনাদের আমি প্রথমেই বলেছি। কিন্তু বেকিং সোডাতে শুধু একটি উপাদান থাকে সেটি হচ্ছে পিওর সোডিয়াম বাইকার্বোনেট। তাই আপনি যা -ই করুন না কেন, বেকিং পাউডারের বদলে বেকিং সোডা বদলানোর চেষ্টা করবেন না। কারণ এটা কাজ করবে না। এতে খাবারের মান এবং গুনাগুন কোনটাই আপনি সঠিক ভাবে পাবেন না। এই দুটোর তৈরিকৃত খাবারের মধ্যেও কিন্তু অনেক পার্থক্য রয়েছে।

বেকিং পাউডারের স্বাধ 

Baking

এই পাউডার এর রং সাদা এবং দেখতে অনেকটা চালের গুড়ির মত। তাই আগেই বলে রাখি এই পাউডার খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় না। বরং খাবারকে ফুলাতে এবং নরম রাখতে সাহায্য করে। এই কারণে এটি অ-বিষাক্ত এবং কিছুটা তেতো স্বাদযুক্ত। তাই এটি খাওয়া উচিত নয়। এই কারণে এটি অন্যান্য উপাদানের মধ্যে মিশ্রিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। 

বেকিং পাউডার সংরক্ষণ 

এই পাউডার একটি সিল করা পাত্রে রাখতে হবে। যাতে এর মধ্যে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। কারণ বাতাস প্রবেস করলে এর গুনাগুন খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি চাইলে নরমাল ভাবে ফ্রিজিং করেও রাখতে পারেন। তবে এটি মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের দিকে খেয়াল রাখুন এবং সবসময় পাত্রের নীচে তারিখ দেখে কিনুন। 

তবে আপনি চাইলে খুব সহজে নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন যে এই পাউডার ভাল আছে কিনা। একটি কাপে ১/২ চা চামচ পাউডার এবং ১/২ কাপ গরম পানি যোগ করুন। যদি মিশ্রণটি তীব্রভাবে বুদবুদ হয়ে থাকে, তবে এই পাউডার এখনও ভাল। যদি কোন তীব্র বুদবুদ না থাকে, তাহলে বুঝবেন এই পাউডারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। 

বেকিং পাউডারের ক্ষতিকর দিক 

  • এই পাউডার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসলেও এর বেশ কিছু সতর্কতামুলক দিক রয়েছে নিম্ন লিখিত লিখা গুলো পড়লে আপনাকে এর ব্যবহার সম্পর্কে আরো সতর্ক করে গড়ে তুলবে।
  • এটি দীর্ঘমেয়াদী আপনার দাঁতে প্রয়োগ করলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে। তাই দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার না করাই ভাল।
  • আপনি যদি এই পাউডার কোন কারনে বেশি পরিমানে খেয়ে ফেলেন তাহলে বমি এবং ডায়রিয়ার মতো আরও গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই পাউডার বাচ্চাদের নাগালের বাইরে রাখুন।
  • বিভিন্ন ধরনের খাবারে এই পাউডার এর বেশি ব্যবহার এ আপনার পেটে এসিড উৎপন্ন হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
  • উচ্চরক্ত চাপের রোগীরা এই পাউডার এর অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

বর্তমান 20 April 2024 বােজারে বেকিং পাউডারের মূল্য কত?

B2

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরণের খাদ্য তৈরি করার জন্য বাজার থেকে বেকিং পাউডার কিনে থাকি। এই বেকিং পাউডারের মূল্য হলো- 

Friends Baking Powder 150 gm ৬৫ টাকা 
Foster Clark’s Baking Powder 110g Tin ৯০ টাকা 
Forest Moon Baking Powder (Can) -100g Baking Powder ৬০ টাকা 
Baking Powder 200g ৬০ টাকা 

উপসংহার 

বেকিং পাউডার সাধারণত কোন খাদ্য ফুলানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। কারণ এটি খাবারে কোন ধরণের স্বাধ বাড়াতে পারে না। তাই বিভিন্ন ধরণের পিঠা তৈরিতে এবং যে কোন ধরেণের ভাজা খাদ্যে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়। তবে এর অনেক ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। এই কারণে আমাদের এটি সম্পর্কে ভালো ভাবে বিস্তারিত যেনে নেওয়া উচিৎ। 

 

 

 

 

 

 

Leave a Comment