মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধরপট্টির খালপাড় এলাকায় ইমারত আইন না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। খালপাড় এলাকার থানার পশ্চিম পাশে আশিক রহমান শাহিন নামে এক ব্যক্তি সাত তলা ভবনের অনুমতি পেলেও আট তলার নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এতে ওই ভবনের আশপাশে বসবাসকারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।
মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধরপট্টির খালপাড় এলাকায় ইমারত আইন না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। খালপাড় এলাকার থানার পশ্চিম পাশে আশিক রহমান শাহিন নামে এক ব্যক্তি সাত তলা ভবনের অনুমতি পেলেও আট তলার নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। এতে ওই ভবনের আশপাশে বসবাসকারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।
নির্মাণাধীন ওই ভবনের পাশের বাসিন্দা সেলিনা আক্তার আট তলার নির্মাণ কাজ বন্ধে পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পর পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করলেও কাজ বন্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে গঙ্গাধরপট্টি এলাকার আশিক রহমান শাহিন সাত তলা আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমতি চেয়ে পৌরসভায় আবেদন করেন। পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বনগ্রাম মৌজায় ৭১ নম্বর জেএল, খতিয়ান নম্বর আরএস ৫৪/১, দাগ নম্বর এসএ ৪৪/৩০২, আরএস-৬১ তে ৪ শতাংশ জমির ওপর ভবন নির্মাণের নকশা জমা দেন তিনি। ওই সময় সাবেক মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম মার্চ মাসে ১৬টি শর্ত দিয়ে সাততলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দেন। তবে সম্প্রতি সাততলা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করে আট তলা ভবন নির্মাণে কাজ শুরু করেন ভবন মালিক। বিল্ডিং কোড অমান্য করে আট তলা ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধের দাবিতে গত ২১ আগস্ট পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই এলাকার বাসিন্দা সেলিনা আক্তার।
সেলিনা আক্তার বলেন, প্রথমদিকে শুনেছিলাম ভবনটি পাঁচ তলার ওপরে অনুমোদন পাবে না। পরে জানতে পারি ভবনটি সাত তলার অনুমোদন পেয়েছে। সাত তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু সাত তলার অনুমোদন পাওয়ার পরও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে আট তলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ ভবনটি আট তলার নির্মাণ কাজ হলে আশপাশের ভবনগুলো ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এছাড়া অগ্নি দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস সীমাবদ্ধতায় পড়বে। আশপাশের ফ্ল্যাটে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তারা বিল্ডিং কোড পুরোপুরি অমান্য করে এ ভবনটি নির্মাণ করছে। লিখিত অভিযোগের পর পৌরসভা থেকে একটি টিম পরিদর্শন করে গেছে। তারাও দেখে নিশ্চিত হয়েছেন সাত তলার জায়গায় আট তলার নির্মাণ কাজ চলছে। তারপরও ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়নি। কী কারণে পৌরসভার পরিদর্শন টিম দেখে যাওয়ার পরও নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি সেটি তারাই ভালো বলতে পারবেন।
নির্মাণাধীন ওই ভবনের পাশের একাধিক বাসিন্দা জানান, ভবন মালিক একজন প্রবাসী। তার ভাগ্নে রাসেল মূলতো ভবন নির্মাণের সব কিছু তদারকি করছেন। রাসেলকে ভবনের বিষয়ে কেউ কিছু বললে পাত্তা দেন না। লিখিত অভিযোগের পরও প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তার ক্ষমতার বহি:প্রকাশ ঘটেছে।
এ বিষয়ে নির্মাণাধীন ওই ভবন দেখভালে দায়িত্বে থাকা হাসান মোহাম্মদ মুক্তাসির আলম খান রাসেলের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে নির্মাণাধীন ভবন এলাকায় গিয়েও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিনের কাছে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী তার বক্তব্য নিতে তার কার্যালয়ে যান। ওইদিন নির্বাহী প্রকৌশলী সকল নথিপত্র দেখে বিকেলে বক্তব্য দেবেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান। পরে বিকেলে কয়েক দফা মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রোববার (১ সেপ্টম্বর) বক্তব্য দেবেন বলে নিশ্চিত করেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা রোববার দুপুরের দিকে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে পরে বক্তব্য দেবেন বলে জানান তিনি।
তবে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধে তিনি বলেন, ওই ভবনের অনিয়ম দেখতে পৌরসভা থেকে পরিদর্শন করা হয়েছে। নথিপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোহেল হোসেন/আরএআর